ETV Bharat / opinion

হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনে জাস্টিন ট্রুডো কেন একা হয়ে পড়লেন ? - INDIA CANADA DIPLOMATIC BATTLE

জাস্টিন ট্রুডোর অযৌক্তিক মন্তব্য এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কে আগে থেকেই অবিশ্বাস তৈরি হয়ে থাকার কারণে কানাডা ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন নিয়ে উদ্বিগ্ন ৷

INDIA CANADA DIPLOMATIC BATTLE
2019-এর 25 অগস্ট মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বার্ষিক জি7 শীর্ষ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে দক্ষিণ-পশ্চিম ফ্রান্সের বিয়ারিটজের বেলভিউ কেন্দ্রে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সময় করমর্দনের পথে। (এএফপি)
author img

By Major General Harsha Kakar

Published : Nov 18, 2024, 8:09 PM IST

ভারত-কানাডা কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে । কানাডার অভিযোগ যে ভারত সেদেশের মাটিতে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ৷ বাইডেন প্রশাসনের কাছ থেকে তারা এই নিয়ে সমর্থন পেয়েছে ৷ যা মার্কিন-কানাডিয়ান যোগসাজশের ইঙ্গিত দেয় । কানাডা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেশী দেশ ৷ ন্যাটো ও শীতল যুদ্ধের অবশেষে তৈরি হওয়া একই জোটের অংশীদার এই দুই দেশ ৷ তার পরও 2025 সালের জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের আগমন, উভয় দেশের জন্য পরিস্থিতির পরিবর্তন করতে পারে ৷

ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ে কানাডার বর্তমান নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই অস্বস্তিতে রয়েছে । ওই দেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড উল্লেখ করেছেন, ‘‘আমি জানি অনেক কানাডিয়ান আছেন, যাঁরা আজ অস্থির বোধ করছেন এবং আমি সকল কানাডিয়ানদের বলতে চাই যে আমি পুরোপুরি আত্মবিশ্বাসী যে কানাডা সমৃদ্ধ হবে, কানাডিয়ানরা নিরাপদ থাকবেন এবং এই নতুন নির্বাচিত মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করার পাশাপাশি আমাদের সার্বভৌমত্ব বা সার্বভৌম পরিচয় সুরক্ষিত থাকবে ।’’

INDIA CANADA DIPLOMATIC BATTLE
2023 সালের 10 সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে জি20 শীর্ষ সম্মেলনে রাজঘাটে পুষ্পস্তবক অর্পণ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সময় কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো (বাঁদিকে) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন৷ (এপি)

জাস্টিন ট্রুডোকে ক্ষমতায় থাকার জন্য রাজনৈতিক সমর্থন দেওয়া ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (এনডিএফ) নেতা জগমিত সিং সমানভাবে সতর্ক ছিলেন । তিনি উল্লেখ করেন, দেশের স্বার্থ রক্ষায় কানাডিয়ানদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে । অনেক কানাডিয়ান চিন্তিত বলে তিনি ফ্রিল্যান্ডের কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন । তিনি যোগ করেছেন যে কানাডাকে 'সম্ভাব্য সন্ত্রাসীদের প্রভাবের' জন্য প্রস্তুত হতে হবে ৷ কানাডা ইতিমধ্যেই খালিস্তানি সন্ত্রাসীদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে, সেই বিষয়টি তিনি এড়িয়ে গিয়েছেন । তিনি ট্রুডোকে ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির জন্য সরব হতে বলেছেন ।

অন্যদিকে, কানাডার বিদেশমন্ত্রী মেলানি জোলি দাবি করেছেন যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচন কানাডার বিশ্বব্যাপী প্রভাব বাড়িয়েছে ৷ কারণ, ট্রাম্পকে কীভাবে মোকাবিলা করা যায় সেই বিষয়ে অনেক দেশ পরামর্শ চাইছে কানাডার কাছে । বাস্তবে যে দেশগুলি কানাডার থেকে শিখছে কীভাবে প্রয়োজনীয় সম্পর্কগুলিকে ব্যাহত না-করা উচিত ।

ট্রুডো দায়সারাভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ৷ বলেছেন, ‘‘কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্ব বিশ্বের ঈর্ষার কারণ । আমি জানি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং আমি আমাদের উভয় জাতির জন্য আরও সুযোগ, সমৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা তৈরি করতে একসঙ্গে কাজ করব ।’’ তিনি যা উল্লেখ করতে ভুলে গিয়েছেন, তা হল ট্রাম্পের আগের মেয়াদে তাঁদের মধ্যে তৈরি হওয়া উত্তেজনা আজও অব্যাহত রয়েছে ।

ট্রাম্প ট্রুডোকে একজন ‘দূর-বাম পাগল’ এবং ‘দুমোখো’ বলে অভিহিত করেছিলেন । 2019 সালে ন্যাটো সম্মেলনে ট্রাম্পকে উপহাস করতে ক্যামেরায় ট্রুডো ধরা পড়েন । তিনি ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ট্রুডো নীরব থেকেছেন ।

INDIA CANADA DIPLOMATIC BATTLE
এই ছবিটি একটি ভিডিয়ো থেকে স্ক্রিনগ্র্যাব করা, এখানে দেখা যাচ্ছে ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে (বাঁদিকে), ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ (সামনে), ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন (ডানদিকে) এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো৷ ব্রিটেন, কানাডা, ফ্রান্স ও নেদারল্যান্ডসের নেতা হিসেবে বাকিংহাম প্যালেসে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন এবং ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দীর্ঘ বক্তৃতা নিয়ে উপহাস করছেন৷ 2019 সালের 3 ডিসেম্বর লন্ডনে৷ (এএফপি)

ট্রুডোর মায়ের ফিদেল কাস্ত্রোর সঙ্গে যুক্ত থাকার গল্প প্রচারিত হওয়ার পর ট্রাম্প তাঁর বই ‘সেভ আমেরিকা’তে উল্লেখ করেছেন যে ‘ট্রুডোর মা কোনও না কোনোভাবে কাস্ত্রোর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ।’ তিনি আরও বলেন, ‘‘অনেক লোক বলে যে জাস্টিন তাঁর (কাস্ত্রো) ছেলে । তিনি (ট্রুডো) বলেন যে তিনি নন, তবে তিনি কীভাবে জানলেন ! কাস্ত্রোর চুল ভালো ছিল, 'বাবা'র ছিল না, জাস্টিনের চুল ভালো এবং কাস্ত্রোর মতোই একজন কমিউনিস্ট হয়ে উঠেছেন ।’’ ট্রাম্পও কোভিড-এর সময় ট্রুডোর কোভিড ম্যান্ডেটকে 'পাগলামি' বলে অভিহিত করে স্বাধীনতা কনভয় (কানাডিয়ান ট্রাকার্স স্ট্রাইক)-এর সমর্থন করেছিলেন ।

বাণিজ্যের ক্ষেত্রে, যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর প্রতিশ্রুতি মতো 10 শতাংশ সমস্ত আমদানির উপর শুল্ক আরোপ করেন, সেক্ষেত্রে কানাডার অর্থনীতি মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হবে । কানাডিয়ান মিডিয়ার বক্তব্য, এই আইন 2028 সালের মধ্যে সেদেশের অর্থনীতি থেকে 7 বিলিয়ন মার্কিন ডলার মুছে ফেলতে পারে ৷ এর ফলে মূল্যস্ফীতি এবং সেই সঙ্গে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাবে । তাছাড়া, কানাডা তার উৎপাদনের 75 শতাংশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করে ।

ট্রাম্প অভিবাসন ঠেকাতে এবং অবৈধদের নির্বাসনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকায় অনেক অবৈধ অভিবাসী কানাডায় পাড়ি জমাচ্ছে এবং ওই দেশের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে । মার্কিন সীমান্ত সমস্যার দায়িত্বে থাকা ট্রাম্পের কর্মকর্তা টম হোম্যান উল্লেখ করেছেন, ‘‘উত্তর সীমান্তের (কানাডা) সমস্যা জাতীয় নিরাপত্তায় বিশাল সমস্যা ৷’’ এর পর তিনি যোগ করেন, ‘‘কানাডার কাছ থেকে একটি বোঝাপড়া থাকতে হবে যে তারা সন্ত্রাসবাদীদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পথ হতে পারে না ।’’ একই সঙ্গে ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড উল্লেখ করেছেন যে কানাডা তার সীমানা নিয়ন্ত্রণ করতে জানে ৷ অথচ বর্ডার গার্ডস ইউনিয়ন বলেছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ অভিবাসীদের আসা আটকাতে আরও 3 হাজার ব্যক্তির প্রয়োজন ।

আগামী বছর নির্বাচন হওয়ার কারণে ট্রুডোর আরও বিপত্তি হবে । একটি দ্রুত জনপ্রিয়তা কমে যাওয়া তাঁর বিস্মৃতি নিশ্চিত করবে ৷ ইলন মাস্ক-সহ বেশিরভাগ ট্রাম্প সমর্থক উল্লেখ করেছেন যে ট্রুডোকে সরে যেতে হবে । এর ফলে সম্ভবত ট্রুডো দ্রুত নির্বাচন করতে বাধ্য হতে পারেন । ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটানো ট্রুডোর ক্ষমতায় ফিরে আসার সম্ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে । অটোয়াতে যারা ক্ষমতায় আসবে, তাকে ভিন্ন লাইনে যেতে হবে ।

INDIA CANADA DIPLOMATIC BATTLE
2020 সালের 24 ফেব্রুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেদাবাদের উপকণ্ঠে মোতেরার সর্দার প্যাটেল স্টেডিয়ামে 'নমস্তে ট্রাম্প' সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আলিঙ্গন করছেন। (এএফপি)

খালিস্তান আন্দোলনকে কানাডার সমর্থনের আরও প্রভাব পড়তে পারে । মার্কিন শিল্পপতি এবং রিপাবলিকান হিন্দু কোয়ালিশনের প্রতিষ্ঠাতা শলভ কুমার, যিনি ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ, তিনি একটি সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছেন, ‘‘ট্রাম্প খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন করবেন এবং এমনকি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও তাঁর কথা শুনবেন ।’’

এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায়, খালিস্তানপন্থী সংগঠন শিখস ফর জাস্টিসের প্রধান গুরপতবন্ত সিং পান্নুন ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন 2019 সালে বিশেষ আমন্ত্রিত হিসাবে ‘স্যালুট টু আমেরিকা’ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন । তিনি যা উল্লেখ করেননি, তা হল ভারত 2020 সালে পান্নুনকে জঙ্গি হিসেবে ঘোষণা করে । 2021 সালের ফেব্রুয়ারিতে তাঁর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড কর্নার নোটিশ পাওয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল ৷ কারণ, ইন্টারপোল বিশ্বাস করেছিল যে পান্নুনের পদক্ষেপের একটি 'স্পষ্ট রাজনৈতিক মাত্রা' ছিল৷ কিন্তু সেটা অতীত ৷

ভারতের জন্য ট্রাম্পের আগমন ভারত-মার্কিন সম্পর্ক জোরদার করার একটি সুযোগ । প্রধানত বাণিজ্য এবং অভিবাসনের ক্ষেত্রে হোঁচট খাচ্ছে এই সম্পর্ক, যা সঠিক করা দরকার । ট্রাম্প কর্তৃক মনোনীত বেশিরভাগই ভারতপন্থী ও তাঁরা চিনের পালটা হিসেবে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চায় ।

ভারত সামরিক সহায়তার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল নয়, তবে তার ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলকে সমর্থন করার অবস্থানে রয়েছে । তাছাড়া, ট্রাম্প যদি ভারতীয় পণ্যের উপর 20 শতাংশ শুল্কও আরোপ করেন, তাহলে পরবর্তী তিন বছরে তাঁর জিডিপিতে প্রভাব 0.1 শতাংশের নিচে হতে পারে । ভারত কানাডার মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রফতানির উপর বেশি নির্ভরশীল নয় । শলভ কুমার আরও উল্লেখ করেছিলেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি চাইছে ।

INDIA CANADA DIPLOMATIC BATTLE
2023 সালের 9 সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নয়াদিল্লিতে জি20 নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের আগে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে করমর্দন করছেন৷ (এএফপি)

মিত্রদের প্রতিরক্ষা খাতে জিডিপির 2 শতাংশ ব্যয় করার জন্য ট্রাম্পের দাবির দ্বারা ভারত প্রভাবিত হয় না ৷ কারণ, কানাডার মতো জোটের অংশীদার নয় । তাছাড়া, ভারত চিনকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য তার সামরিক সক্ষমতা বাড়াতে মার্কিন প্রযুক্তি এবং অস্ত্র চায়, যা মার্কিন প্রতিরক্ষা শিল্পকে উপকৃত করে । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জোট করার সুবিধা সম্পর্কে মোদি ভালো করেই জানেন ।

এছাড়া, রুশ-ইউক্রেন দ্বন্দ্বের ক্ষেত্রে উভয় নেতাই একই দিকে রয়েছেন ৷ কানাডার মতো নয়৷ কানাডা সংঘাতকে দীর্ঘায়িত করতে ইউক্রেনকে অর্থ সাহায্য করছে । পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্প ও প্রধানমন্ত্রী মোদি উভয়েরই ভালো সম্পর্ক রয়েছে । বিরোধ নিরসনে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা থাকবে । প্রাথমিকভাবে, ভারত সরাসরি আলোচনার আগে এর মধ্যে অংশ নিতে পারে ।

পান্নুন হত্যার ষড়যন্ত্র বন্ধ হতে পারে । একজন জঙ্গিকে মদত দেওয়ার কারণে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর প্রভাব পড়া উচিত নয় ৷ অটোয়া এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্কের ক্রমবর্ধমান হিমশীতলতার পরিপ্রেক্ষিতে কানাডা দাবি করছে যে নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় জড়িত থাকার আর কোনও ফল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে পড়বে না ৷

সামগ্রিকভাবে, কানাডা ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন নিয়ে উদ্বিগ্ন মূলত ট্রুডোর অযৌক্তিক মন্তব্য, দুই নেতার মধ্যে ব্যক্তিগত অবিশ্বাস এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর কানাডিয়ান অর্থনীতির অতিরিক্ত নির্ভরতার কারণে । অন্যদিকে, ভারত মিত্র এবং অংশীদার থাকবে, যা মূলত ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন থেকে লাভ করবে । ট্রুডো ভারতের সঙ্গে তাঁর কূটনৈতিক যুদ্ধে একা হয়ে যাবেন এবং তাই তাঁকে উপেক্ষা করা যেতে পারে ।

ভারত-কানাডা কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে । কানাডার অভিযোগ যে ভারত সেদেশের মাটিতে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ৷ বাইডেন প্রশাসনের কাছ থেকে তারা এই নিয়ে সমর্থন পেয়েছে ৷ যা মার্কিন-কানাডিয়ান যোগসাজশের ইঙ্গিত দেয় । কানাডা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেশী দেশ ৷ ন্যাটো ও শীতল যুদ্ধের অবশেষে তৈরি হওয়া একই জোটের অংশীদার এই দুই দেশ ৷ তার পরও 2025 সালের জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের আগমন, উভয় দেশের জন্য পরিস্থিতির পরিবর্তন করতে পারে ৷

ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ে কানাডার বর্তমান নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই অস্বস্তিতে রয়েছে । ওই দেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড উল্লেখ করেছেন, ‘‘আমি জানি অনেক কানাডিয়ান আছেন, যাঁরা আজ অস্থির বোধ করছেন এবং আমি সকল কানাডিয়ানদের বলতে চাই যে আমি পুরোপুরি আত্মবিশ্বাসী যে কানাডা সমৃদ্ধ হবে, কানাডিয়ানরা নিরাপদ থাকবেন এবং এই নতুন নির্বাচিত মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করার পাশাপাশি আমাদের সার্বভৌমত্ব বা সার্বভৌম পরিচয় সুরক্ষিত থাকবে ।’’

INDIA CANADA DIPLOMATIC BATTLE
2023 সালের 10 সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে জি20 শীর্ষ সম্মেলনে রাজঘাটে পুষ্পস্তবক অর্পণ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সময় কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো (বাঁদিকে) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন৷ (এপি)

জাস্টিন ট্রুডোকে ক্ষমতায় থাকার জন্য রাজনৈতিক সমর্থন দেওয়া ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (এনডিএফ) নেতা জগমিত সিং সমানভাবে সতর্ক ছিলেন । তিনি উল্লেখ করেন, দেশের স্বার্থ রক্ষায় কানাডিয়ানদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে । অনেক কানাডিয়ান চিন্তিত বলে তিনি ফ্রিল্যান্ডের কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন । তিনি যোগ করেছেন যে কানাডাকে 'সম্ভাব্য সন্ত্রাসীদের প্রভাবের' জন্য প্রস্তুত হতে হবে ৷ কানাডা ইতিমধ্যেই খালিস্তানি সন্ত্রাসীদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে, সেই বিষয়টি তিনি এড়িয়ে গিয়েছেন । তিনি ট্রুডোকে ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির জন্য সরব হতে বলেছেন ।

অন্যদিকে, কানাডার বিদেশমন্ত্রী মেলানি জোলি দাবি করেছেন যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচন কানাডার বিশ্বব্যাপী প্রভাব বাড়িয়েছে ৷ কারণ, ট্রাম্পকে কীভাবে মোকাবিলা করা যায় সেই বিষয়ে অনেক দেশ পরামর্শ চাইছে কানাডার কাছে । বাস্তবে যে দেশগুলি কানাডার থেকে শিখছে কীভাবে প্রয়োজনীয় সম্পর্কগুলিকে ব্যাহত না-করা উচিত ।

ট্রুডো দায়সারাভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ৷ বলেছেন, ‘‘কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্ব বিশ্বের ঈর্ষার কারণ । আমি জানি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং আমি আমাদের উভয় জাতির জন্য আরও সুযোগ, সমৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা তৈরি করতে একসঙ্গে কাজ করব ।’’ তিনি যা উল্লেখ করতে ভুলে গিয়েছেন, তা হল ট্রাম্পের আগের মেয়াদে তাঁদের মধ্যে তৈরি হওয়া উত্তেজনা আজও অব্যাহত রয়েছে ।

ট্রাম্প ট্রুডোকে একজন ‘দূর-বাম পাগল’ এবং ‘দুমোখো’ বলে অভিহিত করেছিলেন । 2019 সালে ন্যাটো সম্মেলনে ট্রাম্পকে উপহাস করতে ক্যামেরায় ট্রুডো ধরা পড়েন । তিনি ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ট্রুডো নীরব থেকেছেন ।

INDIA CANADA DIPLOMATIC BATTLE
এই ছবিটি একটি ভিডিয়ো থেকে স্ক্রিনগ্র্যাব করা, এখানে দেখা যাচ্ছে ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে (বাঁদিকে), ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ (সামনে), ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন (ডানদিকে) এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো৷ ব্রিটেন, কানাডা, ফ্রান্স ও নেদারল্যান্ডসের নেতা হিসেবে বাকিংহাম প্যালেসে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন এবং ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দীর্ঘ বক্তৃতা নিয়ে উপহাস করছেন৷ 2019 সালের 3 ডিসেম্বর লন্ডনে৷ (এএফপি)

ট্রুডোর মায়ের ফিদেল কাস্ত্রোর সঙ্গে যুক্ত থাকার গল্প প্রচারিত হওয়ার পর ট্রাম্প তাঁর বই ‘সেভ আমেরিকা’তে উল্লেখ করেছেন যে ‘ট্রুডোর মা কোনও না কোনোভাবে কাস্ত্রোর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ।’ তিনি আরও বলেন, ‘‘অনেক লোক বলে যে জাস্টিন তাঁর (কাস্ত্রো) ছেলে । তিনি (ট্রুডো) বলেন যে তিনি নন, তবে তিনি কীভাবে জানলেন ! কাস্ত্রোর চুল ভালো ছিল, 'বাবা'র ছিল না, জাস্টিনের চুল ভালো এবং কাস্ত্রোর মতোই একজন কমিউনিস্ট হয়ে উঠেছেন ।’’ ট্রাম্পও কোভিড-এর সময় ট্রুডোর কোভিড ম্যান্ডেটকে 'পাগলামি' বলে অভিহিত করে স্বাধীনতা কনভয় (কানাডিয়ান ট্রাকার্স স্ট্রাইক)-এর সমর্থন করেছিলেন ।

বাণিজ্যের ক্ষেত্রে, যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর প্রতিশ্রুতি মতো 10 শতাংশ সমস্ত আমদানির উপর শুল্ক আরোপ করেন, সেক্ষেত্রে কানাডার অর্থনীতি মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হবে । কানাডিয়ান মিডিয়ার বক্তব্য, এই আইন 2028 সালের মধ্যে সেদেশের অর্থনীতি থেকে 7 বিলিয়ন মার্কিন ডলার মুছে ফেলতে পারে ৷ এর ফলে মূল্যস্ফীতি এবং সেই সঙ্গে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাবে । তাছাড়া, কানাডা তার উৎপাদনের 75 শতাংশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করে ।

ট্রাম্প অভিবাসন ঠেকাতে এবং অবৈধদের নির্বাসনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকায় অনেক অবৈধ অভিবাসী কানাডায় পাড়ি জমাচ্ছে এবং ওই দেশের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে । মার্কিন সীমান্ত সমস্যার দায়িত্বে থাকা ট্রাম্পের কর্মকর্তা টম হোম্যান উল্লেখ করেছেন, ‘‘উত্তর সীমান্তের (কানাডা) সমস্যা জাতীয় নিরাপত্তায় বিশাল সমস্যা ৷’’ এর পর তিনি যোগ করেন, ‘‘কানাডার কাছ থেকে একটি বোঝাপড়া থাকতে হবে যে তারা সন্ত্রাসবাদীদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পথ হতে পারে না ।’’ একই সঙ্গে ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড উল্লেখ করেছেন যে কানাডা তার সীমানা নিয়ন্ত্রণ করতে জানে ৷ অথচ বর্ডার গার্ডস ইউনিয়ন বলেছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ অভিবাসীদের আসা আটকাতে আরও 3 হাজার ব্যক্তির প্রয়োজন ।

আগামী বছর নির্বাচন হওয়ার কারণে ট্রুডোর আরও বিপত্তি হবে । একটি দ্রুত জনপ্রিয়তা কমে যাওয়া তাঁর বিস্মৃতি নিশ্চিত করবে ৷ ইলন মাস্ক-সহ বেশিরভাগ ট্রাম্প সমর্থক উল্লেখ করেছেন যে ট্রুডোকে সরে যেতে হবে । এর ফলে সম্ভবত ট্রুডো দ্রুত নির্বাচন করতে বাধ্য হতে পারেন । ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটানো ট্রুডোর ক্ষমতায় ফিরে আসার সম্ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে । অটোয়াতে যারা ক্ষমতায় আসবে, তাকে ভিন্ন লাইনে যেতে হবে ।

INDIA CANADA DIPLOMATIC BATTLE
2020 সালের 24 ফেব্রুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেদাবাদের উপকণ্ঠে মোতেরার সর্দার প্যাটেল স্টেডিয়ামে 'নমস্তে ট্রাম্প' সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আলিঙ্গন করছেন। (এএফপি)

খালিস্তান আন্দোলনকে কানাডার সমর্থনের আরও প্রভাব পড়তে পারে । মার্কিন শিল্পপতি এবং রিপাবলিকান হিন্দু কোয়ালিশনের প্রতিষ্ঠাতা শলভ কুমার, যিনি ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ, তিনি একটি সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছেন, ‘‘ট্রাম্প খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন করবেন এবং এমনকি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও তাঁর কথা শুনবেন ।’’

এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায়, খালিস্তানপন্থী সংগঠন শিখস ফর জাস্টিসের প্রধান গুরপতবন্ত সিং পান্নুন ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন 2019 সালে বিশেষ আমন্ত্রিত হিসাবে ‘স্যালুট টু আমেরিকা’ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন । তিনি যা উল্লেখ করেননি, তা হল ভারত 2020 সালে পান্নুনকে জঙ্গি হিসেবে ঘোষণা করে । 2021 সালের ফেব্রুয়ারিতে তাঁর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড কর্নার নোটিশ পাওয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল ৷ কারণ, ইন্টারপোল বিশ্বাস করেছিল যে পান্নুনের পদক্ষেপের একটি 'স্পষ্ট রাজনৈতিক মাত্রা' ছিল৷ কিন্তু সেটা অতীত ৷

ভারতের জন্য ট্রাম্পের আগমন ভারত-মার্কিন সম্পর্ক জোরদার করার একটি সুযোগ । প্রধানত বাণিজ্য এবং অভিবাসনের ক্ষেত্রে হোঁচট খাচ্ছে এই সম্পর্ক, যা সঠিক করা দরকার । ট্রাম্প কর্তৃক মনোনীত বেশিরভাগই ভারতপন্থী ও তাঁরা চিনের পালটা হিসেবে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চায় ।

ভারত সামরিক সহায়তার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল নয়, তবে তার ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলকে সমর্থন করার অবস্থানে রয়েছে । তাছাড়া, ট্রাম্প যদি ভারতীয় পণ্যের উপর 20 শতাংশ শুল্কও আরোপ করেন, তাহলে পরবর্তী তিন বছরে তাঁর জিডিপিতে প্রভাব 0.1 শতাংশের নিচে হতে পারে । ভারত কানাডার মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রফতানির উপর বেশি নির্ভরশীল নয় । শলভ কুমার আরও উল্লেখ করেছিলেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি চাইছে ।

INDIA CANADA DIPLOMATIC BATTLE
2023 সালের 9 সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নয়াদিল্লিতে জি20 নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের আগে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে করমর্দন করছেন৷ (এএফপি)

মিত্রদের প্রতিরক্ষা খাতে জিডিপির 2 শতাংশ ব্যয় করার জন্য ট্রাম্পের দাবির দ্বারা ভারত প্রভাবিত হয় না ৷ কারণ, কানাডার মতো জোটের অংশীদার নয় । তাছাড়া, ভারত চিনকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য তার সামরিক সক্ষমতা বাড়াতে মার্কিন প্রযুক্তি এবং অস্ত্র চায়, যা মার্কিন প্রতিরক্ষা শিল্পকে উপকৃত করে । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জোট করার সুবিধা সম্পর্কে মোদি ভালো করেই জানেন ।

এছাড়া, রুশ-ইউক্রেন দ্বন্দ্বের ক্ষেত্রে উভয় নেতাই একই দিকে রয়েছেন ৷ কানাডার মতো নয়৷ কানাডা সংঘাতকে দীর্ঘায়িত করতে ইউক্রেনকে অর্থ সাহায্য করছে । পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্প ও প্রধানমন্ত্রী মোদি উভয়েরই ভালো সম্পর্ক রয়েছে । বিরোধ নিরসনে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা থাকবে । প্রাথমিকভাবে, ভারত সরাসরি আলোচনার আগে এর মধ্যে অংশ নিতে পারে ।

পান্নুন হত্যার ষড়যন্ত্র বন্ধ হতে পারে । একজন জঙ্গিকে মদত দেওয়ার কারণে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর প্রভাব পড়া উচিত নয় ৷ অটোয়া এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্কের ক্রমবর্ধমান হিমশীতলতার পরিপ্রেক্ষিতে কানাডা দাবি করছে যে নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় জড়িত থাকার আর কোনও ফল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে পড়বে না ৷

সামগ্রিকভাবে, কানাডা ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন নিয়ে উদ্বিগ্ন মূলত ট্রুডোর অযৌক্তিক মন্তব্য, দুই নেতার মধ্যে ব্যক্তিগত অবিশ্বাস এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর কানাডিয়ান অর্থনীতির অতিরিক্ত নির্ভরতার কারণে । অন্যদিকে, ভারত মিত্র এবং অংশীদার থাকবে, যা মূলত ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন থেকে লাভ করবে । ট্রুডো ভারতের সঙ্গে তাঁর কূটনৈতিক যুদ্ধে একা হয়ে যাবেন এবং তাই তাঁকে উপেক্ষা করা যেতে পারে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.