কলকাতা, 31 জুলাই: প্রবাদপ্রতীম সঙ্গীত শিল্পী মহম্মদ রফি সাহেবের 44তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। মহানায়ক উত্তম কুমারের মৃত্যুর ঠিক এক সপ্তাহ পর মারা যান তিনি। দুই ইন্ডাস্ট্রি অর্থাৎ বলিউড-টলিউডে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ঘটে গিয়েছিল দু'টি বেদনাদায়ক ঘটনা। মহম্মদ রফি সাহেবের মৃত্যুবার্ষিকীতে ইটিভি ভারতের প্রতিনিধির কাছে স্মৃতির ঝাঁপি খুলে দিলেন অভিনেতা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়।
অভিনেতা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের ফিল্মি কেরিয়ারে তাঁর লিপে ও মহম্মদ রফি সাহেবের কণ্ঠে একাধিক গান রয়েছে ৷ মনে পড়ে 1965 সালে মুক্তি পাওয়া মেরে সনম ছবির গান 'পুকারতা চলা হু ম্যায়...' ৷ বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে পর্দায় দেখা যায় আশা পারেখকে ৷ এমন অনেক গান-ছবি চিরস্মরণীয় দর্শকদের মণিকোঠায় ৷ স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে অভিনেতা বিশ্বজিৎ জানান, তাঁর সঙ্গে রফি সাহেবের প্রথম আলাপ হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ছবি 'দো দিল'-এর গান রেকর্ডিং-এর সময়ে। অভিনেতার সঙ্গে গায়কের পরিচয় করিয়ে দেন বাঙালি সঙ্গীত পরিচালক হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। সেই ছবিতে বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের লিপে 'তেরা হুসন র্যাহে মেরা ইশক র্যাহে' গানটি মহম্মদ রফি সাহেবের কণ্ঠে গাওয়া। ছবির নায়িকা রাজশ্রী শঙ্করাম।
অভিনেতা বলেন, "রফি সাহেব যা যা গেয়েছেন সব হিট। সেই আমলের বলিউডের সব নায়কের সাফল্যের পিছনে ওঁর অবদান আছে। এমনকী আমার যতটুকু সাফল্য অভিনেতা হিসেবে, তার পিছনেও মহম্মদ রফি সাহেবের অসামান্য অবদান রয়েছে।" অল্প বাজেটের প্রযোজকদেরও পাশে দাঁড়াতেন প্রবাদপ্রতীম সঙ্গীত শিল্পী মহম্মদ রফি। গানের কথা ও সুর ভালো হতে হবে। তা হলেই তিনি গান গাইতে রাজি। পারিশ্রমিক নেওয়ার সময়ে খাম খুলে দেখতেনও না। মাথায় ঠেকিয়ে নাকি রেখে দিতেন- জানিয়েছেন বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় স্বয়ং।
তিনি এই বক্তব্যের কারণ দেখিয়ে বলেন, "রফি সাহেব এমন স্টাইলে এবং কণ্ঠের জাদুতে গান গাইতেন সিনেমা দেখার পর মনে হত নায়ক নিজেই গানটা গাইছেন। নায়কের আদবকায়দা, চরিত্র বুঝে গান গাইতেন রফি সাহেব। তাই ওঁকে আমি এক নম্বর প্লে ব্যাক সিঙ্গার বলি। অনেকেই অনেক ভালো সিঙ্গার। কিন্তু উনি এক নম্বর। উনি ভার্সেটাইল। বাংলা, হিন্দি-সহ এমন কোনও ভাষা নেই, যে ভাষাতে উনি গান করেননি।"
অভিনেতা আরও বলেন, "আমার পরিচালিত এবং প্রযোজিত ছবি 'ক্যাহতে হ্যায় মুঝকো রাজা'তেও গান গেয়েছেন রফি সাহেব। লিপ দিয়েছিলেন ধর্মেন্দ্র। আজও যখন কোনও প্রোগ্রামে যাই মানুষ আমার লিপে ওঁর যে সব গান শুনেছেন সেই সময়ের ছবিতে, সেগুলি শুনতে চান। আসলে ওঁকেই শুনতে চান। আমাকে নয়। এমনই এক শিল্পী ছিলেন মহম্মদ রফি। যিনি চিরকাল বেঁচে থাকবেন মানুষের হৃদয়ে। কোনওদিন গম্ভীর হতে দেখিনি ওঁকে। ঠোঁটের কোণে হাসিটা লেগেই থাকত সবসময়। অভিনেতা সবশেষে বলেন, এ বছর 24 ডিসেম্বর রফি সাহেবের জন্মশতবর্ষ। আমরা মুম্বইতে একটা বিশেষ অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা করছি।"