আসানসোল, 3 অক্টোবর: পুজোর মৌলিক বাংলা গানে এবার কলকাতাকে সমান তালে টেক্কা দিচ্ছে আসানসোল ৷ শুধুমাত্র আসানসোলের বিভিন্ন স্টুডিও থেকে এ বছর পুজোয় 50টির বেশি মৌলিক বাংলা গান রিলিজ করছে । গুণমানের বিচারে যার কোনোটাই কলকাতার চেয়ে কোনও অংশে কম নয় । আসানসোলের মিউজিক সিটি স্টুডিওতে গিয়ে দেখা গেল পুরোদমে কাজ চলছে পুজোর বাংলা গান তৈরির ।
পুজো মানেই একদিকে যেমন বাঙালিদের কাছে নতুন জামা, তেমনই শারদ পত্রিকা এবং নতুন মৌলিক বাংলা গান । আজ থেকে কয়েক বছর আগেও পুজোর সময় নতুন বাংলা গানের অ্যালবাম কেনার জন্য বাঙালিরা ক্যাসেট এবং সিডির দোকানে লাইন দিত । সারা বছর ধরে প্রিয় শিল্পীকে শোনার জন্য অপেক্ষা করত । এ বছর পুজোয় কি তার কোনও নতুন গান আসছে । কিন্তু বর্তমান সময়ে ক্যাসেট বা সিডির যুগ শেষ হয়ে গিয়েছে । এসেছে এখন অনলাইন প্লাটফর্মের যুগ । কিন্তু তা বলে কী নতুন বাংলা গান হচ্ছে না ! পরিসংখ্যান বলছে, আগের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে বাংলা গান বর্তমানে হচ্ছে ।
শুধু তাই নয়, আগে প্রায় সব বাংলা গানই হতো কলকাতায় । এখন কলকাতাকে টেক্কা দিচ্ছে জেলাগুলিও । পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলে একদিকে চলছে পুজোর গান রেকর্ডিং, অন্যদিকে চলছে সাউন্ড মিক্সিংয়ের কাজ । এরই মাঝে স্টুডিওতে পাওয়া গেল আসানসোলের বিশিষ্ট কম্পোজার উৎপল সিনহাকে । তিনি জানালেন, এ বছর পুজোয় তিনটি নতুন মৌলিক গান তৈরি করেছেন শিল্পীদের জন্য ।
উৎপল সিনহার কথায়, "আগে যারা গান লিখতেন কিংবা সুর করতেন, তাঁদেরকে কলকাতা দৌড়ঝাঁপ করতে হতো । এখন আসানসোলে বসেই আমরা সেই কাজটা করতে পারছি । এটা খুব আনন্দের কথা এবং সদর্থক দিক । এই আসানসোল থেকে গান রিলিজ হয়েছে সেটা দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়ছে । শিল্পীদের কাছেও অনেক সুযোগ এসেছে ।"
স্টুডিওতে রেকর্ডিং করতে আসা দুই শিল্পী চুমকি চট্টরাজ এবং তৃষা মুখোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের দুজনেরই এ বছর নতুন মৌলিক বাংলা গান রিলিজ করছে । সবচেয়ে আনন্দ লাগছে শিল্পাঞ্চলে বসে আমরা এই কাজ করতে পারছি । অসাধারণ দু’টি গান হয়েছে এবং গান দু’টি মানুষের মনে যথেষ্ট সাড়া ফেলবে বলে আশা করছি ।"
আসানসোলের বিশিষ্ট ইভেন্ট অর্গানাইজার এবং একটি স্টুডিওর মালিক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, "এ বছর আমরা মোট 30টির বেশি মৌলিক বাংলা গান তৈরি করছি পুজোর জন্য । তবে শুধুমাত্র আসানসোলের শিল্পীরাই নয়, কলকাতার শিল্পীরা এখানে গান গাইতে আসছেন ৷ একসময় আসানসোলের শিল্পীরা কলকাতায় গান গাইতে যেতেন, এখন আমাদের স্টুডিওতে রুপঙ্কর, ক্যাকটাসের পটা, তিমির বিশ্বাসের মতো শিল্পীরা এসে গান গাইছেন । এটাই স্বপ্ন ছিল । আসানসোলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্নপূরণ হচ্ছে । শুধু তাই নয়, আমরা একটি বিশেষ প্রজেক্টে কিংবদন্তি শিল্পী সুরেশ ওয়াদেরকে দিয়েও নতুন গান গাইয়েছি ।"