আলমোড়া/দেরাদুন, 6 মে: উত্তরাখণ্ডের বনে দাবানল ক্রমাগত বাড়ছে । সরকার ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর এই আগুন নেভানোর চেষ্টা চালাচ্ছে ৷ কিন্তু এই মুহূর্তে তার প্রভাব খুব একটা চোখে পড়ছে না । তার উপর পাহাড়ি এলাকায় পানীয় জলের সংকট চরমে পৌঁছেছে ৷ এই সময় দেব-নগরীতে পর্যটনের মরশুম ৷ চারধাম যাত্রা শুরু হতে বাকি আর মাত্র 8 দিন । তার আগে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ড ! চিন্তায় রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে ব্যবসায়ীরা ৷
প্রতিদিনই উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন জেলার জঙ্গলে দাবানলের ঘটনা ঘটছে ৷ রবিবার দুনাগিরি জঙ্গলে আগুন লাগে । আগুন বিশাল আকার ধারণ করে দুনাগিরি মন্দির চত্বর পর্যন্ত পৌঁছে যায় । এ সময় মন্দির এলাকায় থাকা দর্শনার্থীদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় । দর্শনার্থীরা প্রাণ বাঁচাতে এদিক ওদিক ছুটতে থাকেন । গত কয়েকদিন ধরে দুনাগিরি মন্দিরের পিছনের বনে আগুন লাগছে । বন দফতরের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন । গতকালও বন দফতরের দল মন্দির চত্বরের পিছনের রাস্তা পরিষ্কার করে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছিল । হঠাৎ দমকা হাওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে । আগুন দেখে মন্দিরে বেড়াতে আসা লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ।
সম্প্রতি, আলমোড়া জেলার সোমেশ্বরের জঙ্গলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে 4 লিসা শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন । এই শ্রমিকরাও বনের আগুন নেভানোর চেষ্টা করছিলেন । কিন্তু আগুন এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করে যে, নেপালের বাসিন্দা চার লিসা শ্রমিক বনের আগুনে দগ্ধ হন । অবিলম্বে এক সপ্তাহের জন্য সমস্ত ধরণের পশুখাদ্য (খড়) পোড়ানোর উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি ৷
একদিকে তাপপ্রবাহের জেরে মানুষ দুর্ভোগে পড়ছেন ৷ অন্যদিকে রাজ্যের বনাঞ্চলে আগুন কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না । এসবের মধ্যে পাহাড়ি এলাকায় পানীয় জলের সংকট জনসাধারণকে চরম বিপাকে ফেলেছে । গাড়ওয়াল থেকে কুমায়ুন পর্যন্ত পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে । উত্তরাখণ্ডে লোকেরা কীভাবে পানীয় জলের সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে তার কারণ জানতে আধিকারিকদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি ৷ উত্তরাখণ্ডের জনগণের পাশাপাশি চারধাম যাত্রায় আগত ভক্তরা যাতে কোনও ধরণের পানীয় জলের সংকটে না পড়েন, তার জন্য আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি ।
তবে পর্যটনের মরশুমে এমতাবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ ব্যবসায়ীমহলের ৷ যদি পাহাড়ে আগুন এভাবে চলতে থাকে এবং আগত লোকজনের কাছে একই খবর পৌঁছতে থাকে তাহলে চারধাম যাত্রায় এর প্রভাব পড়বে ৷ বুকিং বাতিল করা শুরু হতে পারে । শুধু তাই নয়, অগ্নিকাণ্ডের খবরের মধ্যে অনেক তীর্থযাত্রী চারধাম যাত্রার আপডেট নিতে বারবার ফোন করছেন বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা । আগুনের খবরে কুমায়ুনের পর্যটন ব্যবসাও অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে । বিশেষ করে নৈনিতাল ও আশেপাশের এলাকায় আগুন লাগার কারণে অনেকেই বুকিং করার আগে হোটেল ও ট্যাক্সি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে খবরাখবর নিচ্ছেন । উত্তরাখণ্ড থেকে দিনে দিনে যে ধরনের আগুনের ছবি বেরিয়ে আসছে, তা দেখে সবাই উদ্বিগ্ন !
আরও পড়ুন: