হায়দরাবাদ, 23 জানুয়ারি: আর মাত্র কয়েক দিন পরই সাধারণ বাজেট পেশ করা হবে। আগামী 1 ফেব্রুয়ারি সংসদে 2025-'26 অর্থবর্ষের দেশের সাধারণ বাজেট প্রস্তাব পেশ করতে পারেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কেন্দ্রে মোদি সরকারের তৃতীয় মেয়াদের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করবেন সীতারামন। এই বাজেট থেকে করদাতাদেরও অনেক প্রত্যাশা রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে করমুক্ত আয় বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছেন দেশের করদাতারা। মুদ্রাস্ফীতির কথা মাথায় রেখে করমুক্ত আয়ের সুযোগ বাড়ানো হয়নি। বর্তমানে দেশের করদাতাদের 7 লক্ষ 75 হাজার টাকা পর্যন্ত আয় সম্পূর্ণ করমুক্ত। আসন্ন সাধারণ বাজেটে বার্ষিক করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে 10 লাখ টাকা করার দাবি করছেন দেশের অনেক অর্থনীতিবিদ থেকে অসংখ্য সাধারণ করদাতা।
বছরে 20 লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্জনকারীদের জন্য কর ছাড়ের আশা:
বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেন্দ্র সরকার বছরে 20 লাখ টাকা পর্যন্ত উপার্জনকারীদের কর ছাড় দিতে পারে। এর জন্য দুটি বিকল্প বিবেচনা করা হচ্ছে। প্রথমটি হল 10 লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়কে করমুক্ত করা উচিত। দ্বিতীয় বিকল্পটি হল, 15 থেকে 20 লক্ষ টাকা আয়কারীদের জন্য 25 শতাংশের একটি নতুন ট্যাক্স স্ল্যাব চালু করা। এই ছাড় শুধুমাত্র তাদের জন্য কার্যকর হবে যারা নতুন কর ব্যবস্থা বেছে নেবেন। বর্তমানে, 75,000 টাকার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন-সহ 7.75 লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের উপর কোনও কর দিতে হয় না। এছাড়াও, 15 লক্ষ টাকার উপরে আয়ের ক্ষেত্রে 30 শতাংশ কর ধার্য করা হয়।
1 লাখ কোটি টাকার রাজস্বের ক্ষতি:
যদি কেন্দ্র করদাতাদের আয়করের ক্ষেত্রে উল্লেখিত ছাড়গুলি দেয়, তাহলে সরকার রাজস্বের ক্ষেত্রে 50 হাজার কোটি টাকা থেকে 1 লাখ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হবে। মোদি সরকার 2023 সালের বাজেটে করদাতাদের আয়করেও ছাড় দিয়েছে। সেই সময়ে, নতুন কর ব্যবস্থা বেছে নেওয়ার জন্য অয়কর আইনের 87A ধারার অধীনে কর ছাড় বাড়িয়ে 7 লাখ টাকা করা হয়েছিল।
খরচ বৃদ্ধি পাবে:
অর্থনীতির বিশেষজ্ঞদের মতে, কেন্দ্র সরকার যদি জনসাধারণের ভোগ বৃদ্ধি করে জিডিপি হার বাড়াতে চায়, তাহলে আয়করে ছাড় দিতে হবে। সরকারকে 15 থেকে 20 লক্ষ টাকার মধ্যে আয়কে 25 শতাংশ ট্যাক্স স্ল্যাবে আনতে হবে। এটি মানুষের আরও অর্থ সাশ্রয় করবে, যাতে তাদের ভোগ্য সামগ্রীর ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে।
বাজেট থেকে আবাসন ক্ষেত্রের প্রত্যাশা:
আগামী 1 ফেব্রুয়ারি সংসদে 2025-'26 অর্থবর্ষের দেশের সাধারণ বাজেট পেশ করতে পারেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এই বাজেটে সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসনের জন্য বড় সুযোগ-সুবিধার ঘোষণা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে ৷ আবাসন আর নগর উন্নয়নের জন্য বরাদ্দের পরিমাণ 12 শতাংশের বেশি বাড়তে পারে। পাশাপাশি, নতুন আবাসন প্রকল্পের জন্য বাড়তে পারে ভর্তুকিও। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (গ্রামীণ ও শহুরে) জন্য বাজেট বরাদ্দের পরিমাণ বাড়নো হতে পারে। সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসনের জন্য PMAY-তে 20 শতাংশ পর্যন্ত বেশি বরাদ্দের সম্ভাবনা রয়েছে।
বাজেট প্রত্যাশা নিয়ে গ্রান্ট থর্নটন-এর সমীক্ষা যা বলছে:
গ্রান্ট থর্নটন একটি বিশ্বব্যাপী পেশাদার পরিষেবা সংস্থা যা সমীক্ষা, কর এবং পরামর্শমূলক পরিষেবা প্রদান করে। এই গ্রান্ট থর্নটন-এর সমীক্ষা বলছে, দেশের করদাতাদের মধ্যে 57 শতাংশ ব্যক্তিগত আয়করদাতা চান আসন্ন বাজেটে করের বোঝা কমানো হোক। প্রায় 25 শতাংশ আয়করদাতা বর্তমানের চেয়ে বেশি করছাড়ের দাবি করেছেন। দেশের মোটামুটি 63 শতাংশ করদাতা পুরনো কর কাঠামোয় আরও বেশ কিছু ছাড়ের সুবিধা চালুর প্রত্যাশা রাখেন। অন্তত 72 শতাংশ করদাতা নতুন কাঠামো অনুযায়ী কর দেবেন। এদের মধ্যে কর কমানোর দাবি করেছেন 46 শতাংশ করদাতা। প্রায় 500 জনের সঙ্গে কথা বলে উল্লেখিত তথ্য প্রকাশ করেছে গ্রান্ট থর্নটন ৷ তাই উল্লেখিত রিপোর্টকে দেশের সাধারণ মানুষের বাজেট থেকে প্রত্যাশা সম্পর্কিত প্রাথমিক অনুমান হিসাবে ধরা যেতে পারে ৷