রামেশ্বরম (তামিলনাড়ু), 11 জুলাই: 13 জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে আটক করল শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী ৷ ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার ভোরে ৷ ভারত মহাসাগরের পাল্ক বে সাগর এলাকায় ডেলফ্ট দ্বীপের কাছে মৎস্যজীবীদের আটকের পাশাপাশি তাঁদের তিনটি নৌকা বাজেয়াপ্ত করেছে দ্বীপরাষ্ট্রের নৌসেনা।
রামেশ্বরম ফিশারম্যান অ্যাসোসিয়েশন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মৎস্যজীবীরা তামিলনাড়ুর পুদুক্কোট্টাই জেলার বাসিন্দা। তাঁরা মাছ ধরতে গিয়ে ভারতের আন্তর্জাতিক জলসীমা পেরিয়ে শ্রীলঙ্কায় ঢুকে যান। এই ঘটনা মৎস্যজীবীদের মধ্যে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করেছে । কারণ এর আগেই 1 জুলাই পল্ক বে সাগর এলাকা থেকে শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী 26 জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে আটক করেছিল ৷ সঙ্গে চারটি নৌকাও বাজেয়াপ্ত করা হয় । পল্ক বে সাগরের কাছে রামেশ্বরম দ্বীপ এলাকায় পাম্বান থেকে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন ওই সকল মৎস্যজীবীরা। শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনীর এই পদক্ষেপে নিন্দার ঝড় ওঠে ৷ প্রতিবাদে পামবানের মৎস্যজীবীরা তাঁদের পরিবার-সহ পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়।
রামেশ্বরম ফিশারম্যান অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, জুনের শেষ সপ্তাহে শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী 22 জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে আটক করেছিল ৷ শ্রীলঙ্কার জলসীমার নেদুনথিভু দ্বীপের কাছে মাছ ধরার জন্য তামিলনাড়ুর থাঙ্গাচিমাদাম গ্রামের এই মৎসজীবীদের আটক করা হয় । সঙ্গে মৎস্যজীবীদের তিনটি নৌকাও বাজেয়াপ্ত করে শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী।
এই ঘটনার পর তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে চিঠি লিখেছিলেন ৷ তিনি শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনীর হাতে আটক সমস্ত মৎস্যজীবীদের দেশে ফিরিয়ে আনার অনুরোধ করেছিলেন বিদেশমন্ত্রীর কাছে । মৎস্যজীবীদের গ্রেফতারি এড়াতে এবং বর্তমানে শ্রীলঙ্কার কর্তৃপক্ষের হেফাজতে থাকা সমস্ত মৎস্যজীবী ও মাছ ধরার নৌকার মুক্তি নিশ্চিত করতে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ আহ্বান করার জন্য জয়শঙ্করের অবিলম্বে হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছিলেন স্ট্যালিন । তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, এই ধরনের ঘটনা মৎস্যজীবীদের জীবিকা ব্যাহত করছে এবং তাঁদের সমগ্র সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে ।
স্ট্যালিনের চিঠির প্রতিক্রিয়ায় জয়শঙ্কর জানিয়েছিলেন, কলম্বোতে ভারতীয় হাইকমিশন এবং জাফনায় কনস্যুলেট দ্রুত ও ধারাবাহিকভাবে আটক মৎস্যজীবীদের দ্রুত মুক্তির জন্য এই জাতীয় মামলাগুলি দেখছে । বিদেশমন্ত্রী স্ট্যালিনকে আশ্বস্ত করেন যে, ভারতীয় মৎস্যজীবীদের সম্প্রদায়ের স্বার্থে সমস্যার সমাধানের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে ।