বারাণসী, 29 মার্চ: "আজ বাবা বিশ্বনাথের কৃপায় বিচার পেয়েছি", মুখতার আনসারির মৃত্যুতে বললেন অলকা রাই ৷ তিনি প্রয়াত বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণানন্দ রাইয়ের স্ত্রী ৷ কৃষ্ণানন্দ রাইকে হত্যা করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের কুখ্যাত গ্যাংস্টার আনসারি ৷ তাই এই গ্যাংস্টার তথা রাজনৈতিক নেতার মৃত্যুতে স্বস্তির হাওয়া বইছে রাই পরিবারে ৷ বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে ৷ বান্দা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে মুখতার আনসারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৷ তবে প্রয়াত মাফিয়ার ছেলে উমর আনসারির অভিযোগ, তাঁর বাবাকে জেলের মধ্যে ধীরে ধীরে বিষ প্রয়োগে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে ৷
শুক্রবার সকালে অলকা রাই বলেন, "আমি আর কী বলব ? আমরা সিবিআই আদালতেও হেরে গিয়েছিলাম ৷ আজ যোগী ও মোদিজির দিন ৷ এটা ভগবানের আশীর্বাদ ৷ অনেক দিন ধরে আমরা বিচারের অপেক্ষা করছিলাম ৷ আজ বিচার পেলাম ৷ এবার আমার হোলি শুরু হল ৷ আমি ভগবানের কাছে রোজ প্রার্থনা করতাম, কবে বিচার পাব ৷ আজ তা পেয়েছি ৷" প্রয়াত কৃষ্ণানন্দ রাইয়ের স্ত্রী আরও জানান, তাঁর স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি কখনও হোলি খেলেননি ৷
এই প্রসঙ্গে অলকা বলেন, "ওই ঘটনার (খুন) পর আর কখনও হোলি খেলিনি ৷ আজ মনে হচ্ছে, আমাদের হোলি ৷ আজ আমাদের জন্য আনন্দের দিন ৷" বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণানন্দ রাই খুনের ঘটনায় 2023 সালের এপ্রিলে মুখতার আনসারিকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত ৷ তাকে 10 বছরের কারাদণ্ডের সাজা দেয় ৷ 2024 সালে মার্চে আনসারিকে বেআইনিভাবে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের ভুয়ো নথি রাখার জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় ৷
অবধেশ রাই খুনের মামলাতেই প্রথম দোষী সাব্যস্ত হন মুখতার আনসারি ৷ অবধেশ রাই উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস সভাপতি অজয় রাইয়ের ভাই ছিলেন ৷ 1991 সালের 3 অগস্ট অবধেশ তাঁর দাদার সঙ্গে বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন ৷ হঠাৎ কয়েকজন দুষ্কৃতী গাড়িতে এসে অবধেশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় ৷ ঘটনাস্থলে অজয় রাইয়ের সামনেই মৃত্যু ভাই হয় অবেধেশের ৷ এরপরেই মুখতার আনসারির নাম সামনে আসে এবং সে অপরাধ জগতে খ্যাতি অর্জন করে ৷ অবধেশের দাদা অজয় রায় 32 সাল ধরে এই মামলাটি লড়েছিলেন ৷ শেষে 2023 সালের জুন মাসে বারাণসীর একটি আদালত মুখতারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় ৷
1996 সালে বহুজন সমাজ পার্টি বা বিএসপির টিকিটে মউ সদর কেন্দ্র থেকে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে লড়েন আনসারি ৷ প্রথমবার বিধায়ক নির্বাচিত হন মুখতার আনসারি ৷ সেই শুরু ৷ এরপর 2002 এবং 2007 সালের বিধানসভা নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়ে জয়ী হন ৷ 2012 সালে নিজের কোয়ামি একতা দল বা কিউইডি গড়েন মুখতার ৷ ফের মউ কেন্দ্রে জয়ী হন মাফিয়া মুখতার ৷ এরপর 2017 সালেও অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তিনি ৷ 2022 সালে তিনি মউ সদর কেন্দ্রটি ছেড়ে দেন ছেলে আব্বাস আনসারির জন্য ৷ তিনিও সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টির হয়ে ওই কেন্দ্রে জয়ী হন ৷
আরও পড়ুন: