দার্জিলিং, 15 এপ্রিল: সোমবার দিল্লি থেকে বিমানে বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছন কেন্দ্রীয় যুব, ক্রীড়া এবং তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর ।বিমানবন্দরে পৌঁছে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোঁচা দেওয়ার পাশাপাশি রাহুল গান্ধি ও ইউপিএ সরকারকেও একহাত নেন তিনি। বিদেশি শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশের ক্ষতি করছেন রাহুল ও তাঁর দল কংগ্রেস, এমন গুরুতর অভিযোগ করেন তিনি ৷ অনুরাগের অভিযোগ, দেশকে দুর্বল করে দেওয়াই কংগ্রেসের উদ্দেশ্য ৷
কংগ্রেসের ইস্তাহারে বিদেশি শক্তির হাত:
এদিন ইউপিএ সরকার ও রাহুল গান্ধিকেও একহাত নেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এদিন তিনি বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, "আমার মনে হয় রাহুল গান্ধির জানা উচিৎ, 2013-'14 সালে যখন ইউপিএ সরকার ক্ষমতায় ছিল, তখন মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল 13 শতাংশ । বর্তমানে পশ্চিমা দেশে যুদ্ধ চলছে । সেখানে যখন মূল্যবৃদ্ধি আকাশছোঁয়া ৷ সেই জায়গায় ভারতে মূল্যবৃদ্ধি অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত । মোদি সরকারের সময়েই গরীবের থালা ফসলে ভরে রয়েছে । না ফসলের ঘাটতি রয়েছে, না বিনামূল্যে চিকিৎসার কোনও অসুবিধা রয়েছে । দেশে আবাস থেকে কর্মসংস্থান, সবটাই বেড়েছে । আজ যদি রাহুল গান্ধির সরকার হতো, তাহলে না মঙ্গলযান মিশন সফল হতো, না চন্দ্রযান সফল হতো । কারণ, কংগ্রেস বিদেশের শক্তি বিষয়ে চিন্তা করে করে দেশের কথা বলে । এইজন্য কংগ্রেস চায় যে পরমানু অস্ত্র ভারত থেকে নষ্ট করা হোক । নিজের দেশকে দুর্বল করার এটা কেমন ভাবনা ? রাহুল গান্ধির এজেন্ডা এবং কংগ্রেসের এজেন্ডা ভারতকে দূর্বল করার লক্ষ্যে চালিত হচ্ছে কেন ? তারা কোন বিদেশি শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে ? নিজেদের 10 বছর সময়কালে ভারতকে তো দূর্বল করেছেই আর এখন বিরোধী আসনে থেকেও পরমানু অস্ত্রকে নষ্ট করার কথা বলছে । কোথাও না কোথাও 'ডাল মে কুছ কালা হ্যায়'। কংগ্রেসের ইস্তাহারে বিদেশি শক্তির হাত রয়েছে।"
নিশানায় মমতা:
অন্যদিকে, বেঙ্গালুরুর রামেশ্বরম ক্যাফে বিস্ফোরণে জড়িত দুই জঙ্গিকে কাঁথি থেকে গ্রেফতার করেছে এনআইএ । আর ওই ঘটনার পর রাজ্যের নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কেন্দ্রীয় যুব, ক্রীড়া এবং তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর । তিনি পশ্চিমবঙ্গকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদীদের 'নিরাপদ আশ্রয়' হিসাবে ইঙ্গিত করে বলেন, "একটা নয়, বহু উদাহরণ রয়েছে । কেমন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারে শাসনে যারা সন্ত্রাবাদী, জঙ্গি কার্যকলাপে জড়িত তারা পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় পায় ? রাষ্ট্রবিরোধী শক্তির প্রত্যেকটা মানুষ, যারা মহিলাদের উপর অত্যাচার করে, দূর্নীতি করে এরা সবাই যদি কোথাও সংরক্ষণ পায়, তা হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাকের ডগায়, পশ্চিমবঙ্গে। কেন তারা পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় পায়? দূর্নীতির নতুন রেকর্ড পশ্চিমবঙ্গে তৈরি হয়েছে । তাঁর মন্ত্রীদের বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। মহিলাদের সঙ্গে অপরাধে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের নাম উঠে এসেছে । আর তাদের আশ্রয় দেওয়াতে নাম জড়িয়েছে এই সরকারের । সন্ত্রাবাদী, জঙ্গিরা পশ্চিমবঙ্গে সন্ত্রাস করুক বা বেঙ্গালুরুতে, কিন্তু তারা আশ্রয় পাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে । এমনটা কেন?"
সোমবার দিল্লি থেকে বিমানে বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছন তিনি । সেখান থেকে সুকনার একটি হোটেলে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী । ওই হোটেলে দলীয় বৈঠকে যোগ দেন তিনি । দার্জিলিংয়ে দ্বিতীয় দফায় অর্থাৎ 26 এপ্রিল ভোট রয়েছে । সেই বিষয়ে দলীয় নেতৃত্ব ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক সারতে এখানে এসেছেন তিনি। কিন্তু তার আগে এদিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দেন অনুরাগ । পাশাপাশি এদিন রাহুল গান্ধি ও ইউপিএ সরকারকেও একহাত নেন তিনি।
আরও পড়ুন: