মির্জাপুর, 5 জানুয়ারি: মর্গেই বদল হল দুই মৃতদেহ ! এক মৃতের পরিবার ভুল দেহ শনাক্ত করল। আরেক মৃতের পরিবার তাদের ছেলের দেহই পেল না ৷ ভুল দেহ দাহ হল শ্মশানে ৷ ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরে ৷ দু'জনেরই মৃত্যু হয়েছে দুটি আলাদা দুর্ঘটনায় ৷ একজনের ট্রেন দুর্ঘটনা এবং অন্যজনের বাইক দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় ৷ দু'জন হুবহু একই রঙের জ্যাকেট পরে ছিলেন ৷ তার ফলেই মরদেহ বদল হয়ে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে ৷ ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েেছেন স্থানীয় স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ মুকেশ কুমার।
3 জানুয়ারি উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরের চুনার তেহসিলের রেললাইনে পাওয়া যায় অমিশ গুপ্তার দেহ ৷ তিনি মধ্যপ্রদেশের শিঙ্গরৌলির বাসিন্দা ছিলেন ৷ তাঁর পরিবারকে খবর দেওয়া হয়, তারা যেন মির্জাপুর মর্গে এসে অমিশ গুপ্তার দেহ নিয়ে যান ৷ তাঁরা শনিবার মর্গে এসে দেখেন, সেখানে তাঁদের ছেলের দেহ নেই ৷
পরে জানতে পারেন, অমিশ গুপ্তার দেহ ভুল করে আরেক মৃতের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ৷ তাঁর নাম গুলেশ কুমার বিন্দ ৷ 2 জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার রাতে পাদরি থানা এলাকায় বাইক চালানোর সময় আরসি নগরের কাছে গুলেশের দুর্ঘটনা হয় ৷ তিনি একটি গাছে গিয়ে ধাক্কা মারেন। সেথানেই তাঁর মৃত্যু হয়। অমিশ গুপ্তার পরিবারের অভিযোগ, মর্গের কর্মীদের গাফিলতিতেই দেহ বদল হয়ে গিয়েছে ৷
অমিশের ভাই জানান, 1 ও 2 জানুয়ারি রাতে অমিত লুধিয়ানা থেকে উত্তরপ্রদেশের রেনুকুটের দিকে রওনা দেন ৷ তিনি বলেন, "3 জানুয়ারি তাঁর (অমিশ গুপ্তা) রেনুকুটে পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল ৷ কিন্তু আমরা সোশাল মিডিয়া থেকে জানতে পারি যে, রেলট্র্যাকে তাঁর দেহ পাওয়া গিয়েছে ৷ শনিবার (4 জানুয়ারি) সকালে চুনার থানায় পৌঁছে কাগজে সই সারার পর বলা হয় যে মির্জাপুর মর্গে দেহ আছে ৷ দুপুর 2টো নাগাদ দেহ পাওয়া যাবে। কিন্তু সেখানে গিয়ে আমরা দেহ খুঁজে পাইনি ৷ আমাদের বলা হয়েছে, অন্য কেউ দেহ নিয়ে চলে গিয়েছে ৷"
তাঁর অভিযাগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, চিকিৎসক এবং মর্গের কর্মীরা এই গাফিলতির জন্য দায়ী ৷ তিনি বলেন, "এটা ওদের অবহেলার জন্য হয়েছে ৷" ততক্ষণে অমিশের দেহ সৎকারও হয়ে গিয়েছে ৷
অতিরিক্ত সিএমও ডাঃ মুকেশ কুমার নিশ্চিত করেন যে, দেহ দু'টি বদলাবদলি হয়ে গিয়েছে ৷ তিনি বলেন, "পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল দু'জনেরই ৷ তাঁদের দু'জনের বয়সও এক ৷ পাদরি থানা এলাকায় মৃতের পরিবার (গুলেশ কুমার) ভুল করে আরেকজনের দেহ নিয়ে চলে গিয়েছে ৷ তাঁদের পরে আবার জানানো হয়েছে ৷"
একটি সূত্র ইটিভি ভারতকে জানিয়েছে, দু'জনেরই মুখে প্রচুর রক্ত লেগেছিল ৷ চিনতেও সমস্যা হচ্ছিল। দু'জনের একই বয়সের। একই রকম জ্যাকেট পরেছিলেন ৷ এমনকী ওই জ্যাকেট দু'টির রং-ও একই ছিল ৷ ওই সূত্র আরও জানায়, "প্রথম যে পরিবার মর্গে পৌঁছেছিল, তারা ভুল দেহ শনাক্ত করে ৷ তারা তাড়াহুড়ো করে ভুল দেহ নিয়ে চলে যায় ৷ পরে আরেক মৃতের পরিবার মধ্যপ্রদেশ থেকে আসে ৷ তারা যখন দেখে যে মৃতের দেহ মর্গে নেই, তখন খুব চেঁচামেঁচি শুরু করে ৷" ঘটনা সম্পর্কে খোঁজ-খবর শুরু করেছেন সার্কেল অফিসার জওয়ালা এবং স্থানীয় কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক নীরজ পাঠক ৷