ETV Bharat / state

অজয় নদে বাংলা-ঝাড়খণ্ড সংযোগকারী অস্থায়ী পথ ভাঙল প্রশাসন, সমস্যায় কয়েক হাজার মানুষ - TEMPORARY ROAD ON AJAY RIVER

অজয় নদের উপর বাংলা ও ঝাড়খণ্ডের সংযোগকারী অস্থায়ী পথ ভেঙে দিল জেলা প্রশাসন ৷ এর ফলে সমস্যায় 20টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ৷

ETV BHARAT
অজয় নদে বাংলা-ঝাড়খণ্ড সংযোগকারী অস্থায়ী পথ ভাঙল প্রশাসন (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 7, 2025, 12:54 PM IST

আসানসোল, 7 জানুয়ারি: ঝাড়খণ্ডের প্রান্তিক অঞ্চলের বহু গ্রামের ভরসা এপারের পশ্চিম বর্ধমান জেলা । রুজি রোজগার থেকে শুরু করে চিকিৎসা, সবকিছুর জন্যই ভরসা করতে হয় আসানসোলের উপর । কিন্তু ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিম বর্ধমানের সংযোগকারী স্থায়ী সেতু সেই গ্রামগুলি থেকে প্রায় 30 কিলোমিটার দূরে । আর তাই যাতায়াতের সুবিধার জন্য অজয় নদের বুকে তৈরি করা হয়েছিল একটি অস্থায়ী পথ । বহু বছর ধরে চলা এই পথ এবার ভেঙে দিল জেলা প্রশাসন । এর ফলে সমস্যায় পড়বেন হাজার হাজার মানুষ ৷

আসানসোলের বারাবনি ব্লকের আমুলিয়া এলাকায় অজয় নদের উপরে ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে সংযোগকারী একটি অস্থায়ী পথ নির্মাণ করা হয়েছিল ৷ নদীর বুকে পাইপ দিয়ে জল পারাপারের রাস্তা তৈরি করে দিয়ে সেই পাইপের উপরে বোল্ডার এবং মাটি দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল পথ । স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়খণ্ডের ওপারের গ্রামগুলির পক্ষ থেকেই এই পথটিকে নির্মাণ করা হয়েছিল তাদের নিজেদের সুবিধার জন্য । ওই পারে প্রায় 15 থেকে 20টি গ্রামে কোনও বাংলা মাধ্যম স্কুল নেই, নেই কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্র । চিকিৎসা করাতে গেলে পৌঁছতে হয় বীরভূমের সিউড়িতে । যার দূরত্ব অনেকটাই । অন্যদিকে স্থায়ী সেতু দিয়ে আসানসোলে ঘুরপথে আসতেও প্রায় 30 কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয় ।

ETV BHARAT
অজয় নদে অস্থায়ী পথ ভাঙল প্রশাসন (নিজস্ব চিত্র)

আর তাই চিকিৎসা ও শিক্ষার জন্য নদীর উপরেই একটি অস্থায়ী পথ তৈরি করে ফেলেছিলেন গ্রামবাসীরা । যার ফলে মাত্র চার কিলোমিটারের মধ্যেই তাঁরা পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ঢুকে স্বাস্থ্যকেন্দ্র কিংবা স্কুল বা সমস্ত কিছু হাতের কাছে পেয়ে যেতেন এতদিন । কিন্তু বিষয়টি বেআইনি । নদীর গতিপথ এভাবে অবরুদ্ধ করা যায় না । তাই বারাবনি ব্লক প্রশাসন, বারাবনি থানার পুলিশ এবং ভূমি ও ভূমি রাজস্ব বিভাগ যৌথভাবে এই অস্থায়ী পথটিকে বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দিল । সোমবার থেকে এই কাজ শুরু হয়েছে ।

জেলা প্রশাসনের স্পষ্ট দাবি, নদীর গতিপথ আটকে এভাবে কোনও নির্মাণই করা যাবে না । কাজটি বেআইনি ছিল । তাই ভেঙে ফেলা হয়েছে ।বারাবনির ব্লক আধিকারিক শিলাদিত্য ভট্টাচার্য জানান, "নদীর গতিপথ এভাবে আটকানো যায় না । তাই খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বুলডোজার দিয়ে ওই পাথর এবং মাটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে নদীর বুক থেকে ।"

ETV BHARAT
বাংলা ও ঝাড়খণ্ডের সংযোগকারী অস্থায়ী পথ (নিজস্ব চিত্র)

তবে বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসিত সিংহ বলেন, "বহু বছর ধরে এই পথটি রয়েছে চলাচলের জন্য । ঝাড়খণ্ডের বহু মানুষের অসুবিধা হয়, সেই কারণে এটি তাঁরা বানিয়েছিলেন । তবে শুধু বারাবনি ব্লকে নয়, জেলার অন্যান্য ব্লকেও অজয় নদের উপরে এমন ঘাট রয়েছে, যা ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে । এর ফলে অনেকের অসুবিধার কারণ হয়ে উঠবে । অনেক গরিব মানুষ চিকিৎসা করাতে আসতেন । এরপর অনেকটা ঘুরপথে আসতে হবে তাঁদের ।"

ETV BHARAT
বুলডোজার দিয়ে ভাঙা হল নদীর উপরের অস্থায়ী পথ (নিজস্ব চিত্র)

ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে আসা দুই বাসিন্দা অজয় মণ্ডল এবং রামদাস মাঝি জানিয়েছেন, "আমাদের ওই গ্রামগুলিতে শিক্ষার কোনও ব্যবস্থা নেই । এই পারে এই মাটির পথ ধরে এসেই আমাদের বাড়ির ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করত । এছাড়াও সবচেয়ে বড় অসুবিধার কারণ হবে রোগীকে নিয়ে আসা । নদীর উপর এই পথ দিয়েই মাত্র চার কিলোমিটারের মধ্যে সহজেই অ্যাম্বুলেন্সে রোগীকে এপারে হাসপাতালে নিয়ে আসা যেত চিকিৎসার জন্য । এখন সেটা অনেক ঘুরপথে আসতে হবে । ফলে দূরত্ব বাড়বে । রোগী দ্রুত চিকিৎসা পাবে না ।"

আসানসোল, 7 জানুয়ারি: ঝাড়খণ্ডের প্রান্তিক অঞ্চলের বহু গ্রামের ভরসা এপারের পশ্চিম বর্ধমান জেলা । রুজি রোজগার থেকে শুরু করে চিকিৎসা, সবকিছুর জন্যই ভরসা করতে হয় আসানসোলের উপর । কিন্তু ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিম বর্ধমানের সংযোগকারী স্থায়ী সেতু সেই গ্রামগুলি থেকে প্রায় 30 কিলোমিটার দূরে । আর তাই যাতায়াতের সুবিধার জন্য অজয় নদের বুকে তৈরি করা হয়েছিল একটি অস্থায়ী পথ । বহু বছর ধরে চলা এই পথ এবার ভেঙে দিল জেলা প্রশাসন । এর ফলে সমস্যায় পড়বেন হাজার হাজার মানুষ ৷

আসানসোলের বারাবনি ব্লকের আমুলিয়া এলাকায় অজয় নদের উপরে ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে সংযোগকারী একটি অস্থায়ী পথ নির্মাণ করা হয়েছিল ৷ নদীর বুকে পাইপ দিয়ে জল পারাপারের রাস্তা তৈরি করে দিয়ে সেই পাইপের উপরে বোল্ডার এবং মাটি দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল পথ । স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়খণ্ডের ওপারের গ্রামগুলির পক্ষ থেকেই এই পথটিকে নির্মাণ করা হয়েছিল তাদের নিজেদের সুবিধার জন্য । ওই পারে প্রায় 15 থেকে 20টি গ্রামে কোনও বাংলা মাধ্যম স্কুল নেই, নেই কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্র । চিকিৎসা করাতে গেলে পৌঁছতে হয় বীরভূমের সিউড়িতে । যার দূরত্ব অনেকটাই । অন্যদিকে স্থায়ী সেতু দিয়ে আসানসোলে ঘুরপথে আসতেও প্রায় 30 কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয় ।

ETV BHARAT
অজয় নদে অস্থায়ী পথ ভাঙল প্রশাসন (নিজস্ব চিত্র)

আর তাই চিকিৎসা ও শিক্ষার জন্য নদীর উপরেই একটি অস্থায়ী পথ তৈরি করে ফেলেছিলেন গ্রামবাসীরা । যার ফলে মাত্র চার কিলোমিটারের মধ্যেই তাঁরা পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ঢুকে স্বাস্থ্যকেন্দ্র কিংবা স্কুল বা সমস্ত কিছু হাতের কাছে পেয়ে যেতেন এতদিন । কিন্তু বিষয়টি বেআইনি । নদীর গতিপথ এভাবে অবরুদ্ধ করা যায় না । তাই বারাবনি ব্লক প্রশাসন, বারাবনি থানার পুলিশ এবং ভূমি ও ভূমি রাজস্ব বিভাগ যৌথভাবে এই অস্থায়ী পথটিকে বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দিল । সোমবার থেকে এই কাজ শুরু হয়েছে ।

জেলা প্রশাসনের স্পষ্ট দাবি, নদীর গতিপথ আটকে এভাবে কোনও নির্মাণই করা যাবে না । কাজটি বেআইনি ছিল । তাই ভেঙে ফেলা হয়েছে ।বারাবনির ব্লক আধিকারিক শিলাদিত্য ভট্টাচার্য জানান, "নদীর গতিপথ এভাবে আটকানো যায় না । তাই খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বুলডোজার দিয়ে ওই পাথর এবং মাটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে নদীর বুক থেকে ।"

ETV BHARAT
বাংলা ও ঝাড়খণ্ডের সংযোগকারী অস্থায়ী পথ (নিজস্ব চিত্র)

তবে বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসিত সিংহ বলেন, "বহু বছর ধরে এই পথটি রয়েছে চলাচলের জন্য । ঝাড়খণ্ডের বহু মানুষের অসুবিধা হয়, সেই কারণে এটি তাঁরা বানিয়েছিলেন । তবে শুধু বারাবনি ব্লকে নয়, জেলার অন্যান্য ব্লকেও অজয় নদের উপরে এমন ঘাট রয়েছে, যা ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে । এর ফলে অনেকের অসুবিধার কারণ হয়ে উঠবে । অনেক গরিব মানুষ চিকিৎসা করাতে আসতেন । এরপর অনেকটা ঘুরপথে আসতে হবে তাঁদের ।"

ETV BHARAT
বুলডোজার দিয়ে ভাঙা হল নদীর উপরের অস্থায়ী পথ (নিজস্ব চিত্র)

ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে আসা দুই বাসিন্দা অজয় মণ্ডল এবং রামদাস মাঝি জানিয়েছেন, "আমাদের ওই গ্রামগুলিতে শিক্ষার কোনও ব্যবস্থা নেই । এই পারে এই মাটির পথ ধরে এসেই আমাদের বাড়ির ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করত । এছাড়াও সবচেয়ে বড় অসুবিধার কারণ হবে রোগীকে নিয়ে আসা । নদীর উপর এই পথ দিয়েই মাত্র চার কিলোমিটারের মধ্যে সহজেই অ্যাম্বুলেন্সে রোগীকে এপারে হাসপাতালে নিয়ে আসা যেত চিকিৎসার জন্য । এখন সেটা অনেক ঘুরপথে আসতে হবে । ফলে দূরত্ব বাড়বে । রোগী দ্রুত চিকিৎসা পাবে না ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.