ওয়াশিংটন, 16 মার্চ: ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন । নতুন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, যাঁরা তাঁদের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন, তাঁরাই প্রধানত ভ্যাকসিনের বিষয়ে আগ্রহী হন ।
হেলথ কমিউনিকেশন জার্নালে যে গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে, তার তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল সোয়াইন ফ্লু-র দাপটের সময়, 2009 সালে যাকে মহামারী আখ্যা দিয়েছিল হু ৷ আমেরিকার ওয়াশিংটন স্টেট ইউনির্ভাসিটি এবং উইসকনসিন-ম্যাডিসন ইউনিভার্সিটির গবেষকরা সোয়াইন ফ্লু-র ভ্যাকসিন নিয়ে রোগীদের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়েছিলেন । তাঁরা দেখেছেন যে চিকিৎসক ও রোগীর মধ্যে যোগাযোগ চিকিৎসকদের ওপর ভরসা বাড়ায়, যার জেরে এইচওয়ানএনওয়ান ভ্যাকসিনের প্রতি সদর্থক মনোভাব বেড়েছিল । আর এটা শুধুই কথাবার্তা ছিল না, সত্যিই তার জেরে মানুষ ভ্যাকসিন নিয়েছেন ।
এই সমীক্ষা সেই গবেষণার ওপর নির্ভরশীল ছিল, যেখানে দেখা গিয়েছিল যে চিকিৎসকরা ভ্যাকসিনের প্রতি সার্বিকভাবে মানুষের উদ্বেগের মনোভাব কাটিয়ে তুলতে পারেন, কিন্তু এক্ষেত্রে নির্দিষ্টভাবে একটি মহামারীর ওপরেই জোর দেওয়া হয়েছে । ডব্লিউএসইউ-এর মারো কলেজ অফ কমিউনিকেশনের অধ্যাপক এবং গবেষণাপত্রের মূল লেখক পোরিসমিটা বোরা বলেন, “মহামারীর ভ্যাকসিন অন্য সময়ের থেকে আলাদা। যেমন ফ্লু ভ্যাকসিনের কথা মানুষ আগেই জানেন ।”
তাঁর কথায়, “মহামারীর সময় ভ্যাকসিন সবার কাছেই নতুন । মানুষ দ্বিধা করতে পারেন এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে পারেন । যাঁদের মধ্যে প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে, তাঁদের জবাব পাওয়ার সেরা ঠিকানা হল ডাক্তারের চেম্বার ।”
আরও পড়ুন: চিনা হ্যাকারদের নিশানায় ভারতের কোভিড টিকা গবেষণা !
দেশজুড়ে 19 হাজারেরও বেশি মানুষের দেওয়া তথ্য খতিয়ে দেখেছেন গবেষকরা । তাঁরা দেখেছেন যে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথাবার্তা বলার সঙ্গে বিশ্বাস তৈরি হওয়া এবং টিকা নেওয়ার সম্পর্ক রয়েছে ।
গবেষণাপত্রে এও বলা হয়েছে যে চিকিৎসকরা প্রায়শই ভ্যাকসিন নিতে বলাকে নৈতিকভাবে ঠিক বলে মনে করেন না । তার বদলে তাঁরা তথ্যকেন্দ্র হয়ে উঠেছেন, যেখান থেকে উত্তর পেয়ে রোগীর পক্ষে ভালভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়েছে । তবে সবসময়ই তাঁদের রোগীদের আসার অপেক্ষায় বসে থাকার দরকার নেই ।
বোরা বলেন, “ডাক্তাররা নিজের থেকেই রোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, এমনকী ইমেলের মাধ্যমেও । তাঁদের বোঝাতে পারেন যে কোভিড-19 ভ্যাকসিন আসলে কী ।”
তাঁর কথায়, “কীভাবে ভ্যাকসিন তৈরি হয়, রোগীদের কীসের জন্য তৈরি থাকা উচিত, দুটো ডোজ় কেন নিতে হয়, ইত্যাদি প্রশ্নের উত্তর তাঁরা দিতে পারেন । আমার মনে হয় মানুষের মনে অনেক প্রশ্ন রয়েছে, যা সহজেই উত্তর দিতে পারেন সেই চিকিৎসকা, যাঁদের ওপর মানুষের ভরসা রয়েছে ।”