বহুকাল থেকে ভারতে পালিত হয়ে আসছে রাখি বন্ধন । এই উৎসব মৈত্রীর, উৎসব সৌভ্রাতৃত্বের । তবে, এবছর কোরোনার জেরে ভাটা পড়েছে রাখিতেও । দেশজুড়ে আতঙ্কের সঙ্গে পালিত হচ্ছে এই উৎসব । নেই আলো ঝলমলে দোকানপাট, নেই ভাইদের জন্য গিফট কেনার হিড়িক । উৎসবের সেই উদ্দীপনাই ফিকে হয়ে গেছে ।
এই প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে মানুষ আতঙ্কিত । ঘরবন্দী । কিন্তু তবুও পালিত হচ্ছে রাখি বন্ধন উৎসব । নতুন উপায়ে, ডিজিটাল দুনিয়াকে কাজে লাগিয়ে উৎসবে মেতে উঠেছে মানুষ ।
এবিষয়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বীণা কৃষ্ণণ বলেন, "বর্তমান পরিস্থিতিতে লোকজনের মধ্যে একটা ভয় কাজ করছে । কেউ উৎসবে সামিল হবে কী হবে না এই নিয়ে মানুষ দ্বিধায় পড়ছে । যার ফলে তাদের মধ্যে হতাশা তৈরি হচ্ছে । তবে, যেহেতু উৎসব নিয়ে সকলে আশাবাদী তাই উদযাপন করা যেতে পারে । তবে, ছোটো আকারে, বাড়িতেই । কোরোনার নিয়মাবলী মেনে ।"
আজকের দিনে এই প্যানডেমিক পরিস্থিতির জন্য অনেক ভাই-বোনই একে অপরের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি অন্যান্য বছরের মতো । তবে, ইন্টারনেটের দৌলতে কিন্তু বিশ্ব অনেকটাই ছোটো হয়ে গেছে । সশরীরে উপস্থিত থাকা সম্ভব না হলেও ডিজিটালি, ইন্টারনেটের মাধ্যমে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে জুড়ে আছেন । চিকিৎসক বীণা কৃষ্ণণ বলেন, "এটাই মানসিকভাবে তাঁদের শক্ত করে ।"
এই বছরের ট্রেন্ড কী ?
- উৎসব পালনের সময় সুরক্ষাবিধি মানতে হবে
- পরিবারের কারও সঙ্গে দেখা করুন বা বাইরে কারও সঙ্গে, মাস্ক, গ্লাভস বা অন্যান্য জিনিস পরতে হবে
- স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করতে হবে
- দোকান থেকে মিষ্টি কেনার বদলে বাড়িতেই তা বানান
- কাউকে চকোলেট বা দামি উপহার দেওয়ার বদলে ফল বা পুষ্টিকর খাবার উপহার দিন । উপহার দিতে পারেন স্যানিটাইজ়ার বা মাস্কও
উৎসব একই রয়েছে । তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়েছে এর অর্থ । আজ আমরা সমাজে নারী ক্ষমতায়ন এবং সমতা সম্পর্কে কথা বলি । মহিলারা আজ স্বাধীন হতে সক্ষম । চিকিৎসক বীণা বলেন, "পুরোনো দিনের মতো নয় । রাখি এখন সামাজিক অনুষ্ঠান হিসেবে পালিত হয় । বিভিন্ন স্কুলে রাখি তৈরির অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় । এবং পড়ুয়াদের তৈরি রাখি সীমান্তে সেনা জওয়ানদের কাছে পৌঁছায় । অনেকেই আবার পুলিশকর্মীদেও সুরক্ষার কামনা করে তাঁদের রাখি পরিয়ে থাকেন । এই নতুন ট্রেন্ডটি কেবল আত্মীয়তা বোধ তৈরি করে তা না, এটি একটি ইতিবাচক মনোভাবও নিয়ে আসে ।"
আজকাল আর শুধুমাত্র বোনেরাই ভাইদের হাতে রাখি বাঁধেন তা নয় । এখন বোনদের হাতে বোনরাও রাখি পরান । সকলের সুরক্ষা কামনা করা হয় । সবমিলিয়ে এবছর রাখি পালনের ধরনটা একটু পালটেছে । তবে, ভালোবাসা, অনুভূতি একই থেকে গেছে ।