রায়গঞ্জ, 3 মে : উচ্চ শিক্ষা পরীক্ষা দিতে গিয়ে লকডাউনের ফলে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদার মোট 15জন উত্তর প্রদেশে আটকে আছেন । তাঁদের ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারিভাবে কোনও উদ্যোগ এখনও নেওয়া হয়নি । তাঁদের ফিরিয়ে আনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানান তাঁদের পরিবার । এই 15জনের মধ্যে 13জন পড়ুয়া, একজন অভিভাবিকা ও একজন আংশিক শিক্ষক রয়েছেন ।
উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ ব্লকের কুনোরের বাসিন্দা জীবনকুমার মালাকার উত্তর প্রদেশে গঙ্গা সিং মহাবিদ্যালয়ের আংশিক সময়ের শিক্ষক । তাঁর অধীনে এ রাজ্যের 13জন ছাত্রছাত্রী ওই কলেজে স্নাতকোত্তর কোর্সে ভরতি হয় । 2 মার্চ স্নাতকোত্তর ওই কোর্সের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয় । একজন অভিভাবিকা এবং 13জনকে পড়ুয়াকে নিয়ে জীবনবাবু উত্তরপ্রদেশে যান । ওই 15জনের মধ্যে উত্তর দিনাজপুরের সাতজন, দক্ষিণ দিনাজপুরের পাঁচজন এবং মালদার তিনজন ছিলেন । পরীক্ষা চলাকালীন কোরোনা সংক্রমণ শুরু হয় । তা রুখতে দেশজুড়ে শুরু হয় লকডাউন । ফলে বার্ষিক দু'টি পরীক্ষা পিছিয়ে দেয় মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । এদিকে লকডাউনের ফলে সমস্ত পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়ায় পরীক্ষা দিতে গিয়ে আর ফিরতে পারেননি এই 15জন । তারপর থেকে তাঁরা ওই মহাবিদ্যালয়েই রয়েছেন । তবে, মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে, আর তাঁদের সেখানে রাখা যাবে না ।
জীবনকুমার মালাকার জানান, তাঁদের মহাবিদ্যালয়ের পাশেই উত্তরপ্রদেশ সরকার কোয়ারানটিন সেন্টার করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের আতঙ্ক আরও বেড়ে গিয়েছে । সঙ্গে যা টাকা ছিল তাও প্রায় শেষ । এই অবস্থায় তাঁদের পশ্চিমবঙ্গে ফিরিয়ে না আনলে তাঁদের অনাহারে মৃত্যু হবে । তাঁদের ফিরিয়ে আনার জন্য উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেও কাজের কাজ কিছু হয়নি । দীর্ঘ দুই মাস ধরে পড়ুয়ারা বাইরে আটকে থাকায় চিন্তিত তাঁদের পরিবারের লোকজনও । অবিলম্বে তাঁদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনার জন্য মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অভিভাবকরা আবেদন করেছেন ।
সেখানে আটকে থাকা এক পড়ুয়া মিতু রায়ের অভিভাবক পলাশ মণ্ডল বলেন, "আমার ভাইয়ের বউ উত্তরপ্রদেশে পরীক্ষা দিতে গিয়ে লকডাউনের জন্য আটকে পড়েছে । ওখানে তারা চরম সমস্যার মধ্যে রয়েছে । স্থানীয় প্রশাসন তাদের কোনও সাহায্য করছে না । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি, তাদের দ্রুত বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা যেন করে দেন ।"