রায়গঞ্জ, 31 মে : গ্রামের এক কোণে পুকুর পাড়ে তাঁঁবু খাটিয়ে থাকছেন কয়েকজন । বাড়িঘর সবই আছে । কিন্তু সেখানে থাকতে পারছেন না তাঁঁরা । কয়েকদিন হল তাঁঁবুটাই তাঁঁদের ঘর হয়ে উঠেছে । খাওয়া, থাকা ঘুমোনো , সব ওই তাঁঁবুতেই । গ্রামের ভিতরে নিজেদের বাড়িতে থাকতে পারবেন না । গ্রামবাসীর এমন নিদানে পুকুরপাড়ে আশ্রয় নিয়েছেন চারজন পরিযায়ী শ্রমিক । খাবার ও পানীয় জল তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে ।
রায়গঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রাম রায়পুর । গত দুই তিন দিন ধরে গ্রামের একটি পুকুরের পাশে তাঁবু খাটিয়ে কয়েকজন রয়েছেন । রায়পুর গ্রামে তাঁঁদের নিজেদের বাড়ি রয়েছে । কিন্তু সেখানে থাকার উপায় নেই । গ্রামবাসীরা জানিয়েছে, ওই তাঁঁবুতে থাকতে হবে । তাঁঁরা অবশ্য কোনও অপরাধ করেননি । আসলে তাঁঁবুতে থাকা চারজন সদ্য মুম্বই থেকে ফিরেছেন । তাই গ্রামের ভিতরে তাঁঁদের ঢোকা বারণ । বাধ্য হয়ে পুকুরপাড়ে আশ্রয় নিয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকের চারজনের ওই দল ।
রায়গঞ্জ ব্লকের রায়পুরের বাসিন্দা ওই পরিযায়ী শ্রমিকরা মুম্বইতে ছিলেন । সেখানে পরিচারিকার ও নির্মাণ শিল্পে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন । লকডাউনে সেখানে আটকে পড়েন । শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালু হওয়ার পর থেকে তাঁঁরা বাড়ি ফেরার জন্য চেষ্টা করতে থাকেন । ২৭ মে মুম্বই থেকে রায়গঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দেন । ২৯ মে মালদা স্টেশনে নেমে সেখান থেকে গাড়িতে রায়গঞ্জে পৌঁছন । রাত হয়ে যাওয়ায় বাড়ির থেকে দূরে এলাকায় একটি পুকুরপাড়ে আশ্রয় নেন তাঁঁরা । ভোর বেলায় গ্রামবাসীরা শ্রমিকদের দেখার পর তাঁঁবু খাটিয়ে থাকার বন্দোবস্ত করে দেন । পাশাপাশি খাওয়ার দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তাঁঁরা । শ্রমিকদের স্ক্রিনিং করে সোয়াবের নমুনা পরীক্ষা করার জন্য গ্রামবাসীরা দাবি তুলেছেন ।
স্থানীয় গ্রামবাসী অভিজিৎ দাস বলেন, “ওই শ্রমিকরা মুম্বই থেকে ট্রেনে মালদায় পৌঁছেছেন। সেখান থেকে কোনওভাবে গ্রামে এসেছেন । গ্রামবাসী এবং তাদের সুরক্ষার জন্যই আপাতত তাঁবু খাটিয়ে তাঁঁদের থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে । আমরা উদ্যোগ নিয়ে খাবার জোগাড় করে দিচ্ছি । স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে অনুরোধ, তাঁঁরা যেন শ্রমিকদের চিকিৎসা প্রক্রিয়া শুরু করে।”