রায়গঞ্জ, 24 এপ্রিল: কিশোরীকে যৌন নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগে উত্তাল হয়ে উঠেছিল কালিয়াগঞ্জ ৷ ঘটনায় পুলিশের দেহ টেনে নিয়ে যাওয়ার একটি ভিডিয়ো ঘুরে বেড়ায় সোশাল মাধ্যমে ৷ ঘটনায় তীব্র ধিক্কৃত হয় রাজ্য পুলিশের ভূমিকা ৷ সোমবার সেই অভিযোগেই চার পুলিশ আধিকারিককে বরখাস্ত করেছেন রায়গঞ্জ পুলিশ সুপার সানা আখতার ৷ সোমবার সকাল থেকে এই নির্দেশ কার্যকর করা হয়েছে ৷
শুক্রবার সকালে কালিগঞ্জের পুকুরপাড়ের কলাবাগানে এক কিশোরীর দেহ দেখতে পান স্থানীয় এক ব্যক্তি ৷ দেহ উদ্ধার করতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে আন্দোলনকারীদের ইটবৃষ্টি ৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জও করে পুলিশ ৷ ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের সেল ৷ নামানো হয় ব়্যাফ ৷ এরপরেই কিশোরীর দেহ কার্যত টেনেহিঁচড়ে ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে পাঠায় পুলিশ ৷ সেই ঘটনার পরেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে ৷ পুলিশের অমানবিক রূপ নিয়েও শুরু হয় বিতর্ক ৷ তারপরেই সোমবার চার পুলিশ আধিকারিককে সাসপেন্ড করা হয় ৷
আরও পড়ুন: কালিয়াগঞ্জে নাবালিকার রহস্যমৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের দাবি শুভেন্দুর
রায়গঞ্জ পুলিশ সুপার সানা আখতার আগেই জানান, কোন পরিস্থিতিতে দেহটিকে এভাবে তাঁদের নিয়ে যেতে হয়েছে তা জানতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটির রিপোর্ট হাতে আসার পরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে ৷ সেই তদন্ত কমিটি রিপোর্টেই এদিন চার পুলিশ আধিকারিকের কর্তব্যে গাফলতির প্রমাণ মিলেছে। এই চার পুলিশ কর্মীর মধ্যে তিনজন কালিয়াগঞ্জ থানার, একজন কর্ণজোড়ার পুলিশ ফাঁড়িতে কর্তব্যরত ছিলেন ৷ পদমর্যাদায় এঁরা প্রত্যেকেই এএসআই পদে আছেন।
পুলিশ সুপার সানা আখতার বলেন, "এখন রায়গঞ্জে সব শান্তিপূর্ণ আছে ৷ দু'দিন ধরে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়নি ৷ এই ঘটনায় চারজনকে সোমবার সকালে সাসপেন্ড করা হয়েছে ৷ পাশাপাশি কিশোরীর পরিবার আবেদন করলে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে ৷ মেডিক্যাল বোর্ডের কাছে ক্লারিফিকেশনের জন্য আরও একবার নিহত মেয়েটির রিপোর্ট চেয়েছিলাম ৷ যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছে মেয়েটি ৷ এই ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক ৷ একটা পরিবার মেয়ে হারিয়েছে ৷ তার মধ্যে ভুল তথ্য দেওয়া, গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছেন অনেকে ৷ শান্তিপূর্ণ এই জায়গাকে অশান্ত করার চেষ্টা করছেন ৷ আমার আবেদন সাধারণ মানুষের কাছে গুজবে কান দেবেন না ৷ পুলিশের ওপর ভরসা রাখুন ৷"