রায়গঞ্জ, 6 জুলাই: বছরখানেক আগে বাবার ফেসবুকে একজন মহিলার ছবি দেখেছিল রায়গঞ্জের বছর সাতেকের ঋষিকা চক্রবর্তী । একজন ক্যান্সার আক্রান্তের কেমোথেরাপি চলছে। কেমোর আগের ও পরের ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন তিনি । সেখানেই ঋষিকা দেখে আগের ছবিতে মহিলার মাথা ভরতি চুল ছিল, কিন্তু কেমোর পরে চুল নেই । বাবার কাছে এনিয়ে প্রশ্ন করে ঋষিকা ।
মেয়ের প্রশ্ন এড়িয়ে যাননি বাবা কৌশিক চক্রবর্তী । তিনি মেয়েকে বোঝান মারণরোগ ক্যান্সারের ভয়াবহতা । সেই সময় মেয়েকে তিনি বলেছিলেন চুল দেওয়ার কথা । একরত্তি ঋষিকাও বাবার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায় । তার পর গত 1 বছর ধরে প্রস্তুতি চলে । এর মাঝে মুম্বইয়ে "মদত" নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার খোঁজ পান কৌশিকবাবু । তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে চুলদানের প্রক্রিয়া জেনে নেন তিনি । অবশেষে বৃহস্পতিবার ঋষিকার চুল কেটে মুম্বইতে ওই সংস্থার কছে পাঠানো হয় ।
এক বছর ধরে তিল তিল করে চুল বড় করেছিল ঋষিকা । লম্বায় প্রায় 16 ইঞ্চি । অতটা চুল কাটতে মন খারাপ হলেও ক্যান্সাররোগীদের কথা ভেবে দ্বিধা করেনি ঋষিকা । কৌশিক চক্রবর্তী ও তাঁর স্ত্রী ঋতুপর্ণা মেয়ের এই কাজে গর্বিত । চুল কাটার কারণ জানিয়ে ঋষিকার ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন ঋতুপর্ণা । ইতিমধ্যে ঋষিকার প্রশংসায় পঞ্চমুখ নেটিজ়েনরা । অনেকেই তার কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে চুলদানের ইচ্ছা প্রকাশ করে কমেন্ট করেছেন ।
কৌশিকবাবু জানিয়েছেন, মুম্বইয়ের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা 'মদত' ক্যান্সাররোগীদের জন্য পরচুলা বানিয়ে দেয়। তাতে মানুষের চুল ব্যবহার করা হয় । সেই সংস্থায় পাঠানো হয়েছে ঋষিকার চুল । ঋষিকা জানিয়েছে, ক্যানসাররোগীদের জন্য চুল দিতে পেরে সে খুশি ।