হিঙ্গলগঞ্জ, 7 জুন : হিঙ্গলগঞ্জ বোমা বিস্ফোরণকাণ্ডে পুলিশের জালে ধৃত তৃণমূল নেতা ইকবাল আহমেদ গাজির দুই সহযোগী । ধৃতদের নাম মুসলিম গায়েন এবং মোবারক ঢালি । দু'জনেরই বাড়ি হিঙ্গলগঞ্জের দক্ষিণ বাঁকড়া গ্রামে । সেখানেই অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার ভোরের দিকে গ্রেফতার করা হয় এই দু'জনকে । পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত এই দুই অভিযুক্ত বৃহস্পতিবার ভোর রাতে ঘটনার সময় বিস্ফোরণস্থলের কাছে উপস্থিত ছিল । বোমা বিস্ফোরণের পর তাদের মদতেই মৃত আতাউর শেখের ঝলসানো দেহ লোপাট করার চেষ্টা হয়েছিল । যদিও স্থানীয়রা তা দেখে ফেলায় সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয় ৷ দেহ ফেলেই ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় এই দুই অভিযুক্ত ৷
ঘটনার চারদিন পর বাড়ি থেকেই এই দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ ৷ এই নিয়ে হিঙ্গলগঞ্জ বোমা বিস্ফোরণকাণ্ডে গ্রেফতারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল তিন । এই ঘটনায় পুলিশের হাতে আগেই ধরা পড়েছিল ঘটনায় মূল অভিযুক্ত স্থানীয় তৃণমূল নেতা ইকবাল আহমেদ গাজি ওরফে মুকুল । তিনি স্থানীয় সাণ্ডেলেরবিল পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যা আরুফা বিবির স্বামী । অভিযোগ, তার মদতেই বহিরাগত দুষ্কৃতীরা ওই পঞ্চায়েত সদস্যার বাড়ি সংলগ্ন ফাঁকা মাঠে বোমা বাঁধছিল ঘটনার দিন ৷ সেই বোমা বাঁধতে গিয়েই বিপত্তি ঘটে । বিস্ফোরণে ঘটনাস্থালেই মৃত্যু হয় আতাউর শেখ নামে এক দুষ্কৃতীর । আহত হয় আরও তিন দুষ্কৃতী । সুজন গাজি নামে এক দুষ্কৃতীর হাত উড়ে যায় । ঘটনার পর থেকেই হদিস মিলছে না ওই দুষ্কৃতীর । তার খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ ।
আরও পড়ুন : বিস্ফোরণের পর হিঙ্গলগঞ্জে নমুনা সংগ্রহে ফরেন্সিক দল
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ধৃত ওই তৃণমূল নেতার দাপট এতটাই ছিল যে ভয়ে তার বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পেতেন না এলাকার বাসিন্দারা । একদিকে ঠিকাদারি সংস্থার সঙ্গে যেমন যুক্ত ইকবাল আহমেদ গাজি, অন্যদিকে বিভিন্ন পলি ক্লিনিকেও অংশীদারিত্ব ছিল তার । সম্প্রতি একটি পুকুরঘাট সংস্কারকে কেন্দ্র করে বিপক্ষ গোষ্ঠীর সঙ্গে ওই তৃণমূল নেতার বিবাদ চরমে ওঠে । বিপক্ষ গোষ্ঠীকে শিক্ষা দিতেই দুষ্কৃতীদের নিয়ে এসে ইকবাল আহমেদ গাজি বোমা বাঁধছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ ৷
তবে এর পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে কিনা, সেটাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা ৷ মঙ্গলবার সকালে বিস্ফোরণস্থলে ধৃত ওই তৃণমূল নেতাকে নিয়ে যায় পুলিশ ৷ ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে বসিরহাট জেলা পুলিশ । কী ভাবে বোমা বাঁধার কাজ চলছিল? ঠিক কখন বিস্ফোরণ ঘটল? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তরই জানতে চাওয়া হয় ধৃত তৃণমূল নেতা ইকবাল আহমেদ গাজী ওরফে মুকুলের কাছ থেকে ।