কামারহাটি, 8 এপ্রিল: কামারহাটি পৌরসভার কর্মচারীদের কো-অপারেটিভ নির্বাচনকে ঘিরেও ছড়াল উত্তেজনা। শনিবার সকাল থেকেই এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে টানটান উত্তেজনা ছিল পৌরসভার ভিতরে ও বাইরে। এই নির্বাচনে অশান্তির আশঙ্কা করে আগেভাগেই সতর্ক ছিল প্রশাসন ৷ সেই মোতাবেক বেলঘরিয়া থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ও র্যাফ ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়।
এদিন ভোট শুরুর আগেই পৌরসভার ভিতরে গণ্ডগোল বেঁধে যায়। সেই খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয় সংবাদমাধ্যমও। অভিযোগ, সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয় ৷ এমনকি গেলমালের ভিডিয়ো ডিলিটও করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি, সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের মারধর করে পৌরসভার বাইরে বের করে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
সামনেই রাজ্য়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন ৷ তার আগে সামান্য পৌরসভার কো-অপারেটিভ নির্বাচনকে ঘিরেই যদি এই ছবি হয় তাহলে সেটা চিন্তার বিষয় বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিগত দিনগুলিতে দেখা গিয়েছে রাজ্যের যে সমবায় সমিতি বা কো-অপারেটিভ ব্যাংকগুলো নির্বাচন হয়েছে সেখানে শাসক দল সেভাবে দাঁত ফোটাতে পারেনি ৷ সে কারণেই আজকের এই নির্বাচনে কোনওরকম ফাঁক রাখেনি শাসক দল। কামারহাটির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক মানস মুখোপাধ্য়ায় ঘটনাস্থলে এলে তাঁকে পৌরসভার একজন কর্মী বেলঘড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক রতন চক্রবর্তী ও পুলিশ বাহিনীর সামনেই ধাক্কাধাক্কি ও হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রসঙ্গত, মোট 12টি আসনের এই নির্বাচন। সব আসনেই বামেরা প্রার্থী দিয়েছে। মানস মুখোপাধ্য়ায় অভিযোগ করেন, সারা রাজ্যের মতো এখানেও লুঠ চলছে ৷ এবার শাসক দল কামারহাটি পৌরসভার সমবায় সমিতির পাঁচ কোটি টাকা লুঠের জন্য নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে। তাঁদের কোনও প্রার্থীকে ভেতরে থাকতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ তাঁর। পাশাপাশি তৃণমূলের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ আনেন তিনি ৷ এমনকি বেশ কয়েকজনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলেও বামেদের দাবি।
আরও পড়ুন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 'চোরদের রানি' বলে কটাক্ষ শুভেন্দুর
এদিন কামারহাটি পৌরসভার কর্মচারীদের কো-অপারেটিভ নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা এবং অশান্তির জন্য এখানকার সাংসদ, বিধায়ক ও চেয়ারম্যানকে কাঠগড়ায় তুলেছেন প্রাক্তন বাম বিধায়ক ৷ তিনি জানান, ইতিমধ্যেই বহিরাগতদের হাতে সিপিএমের 17 থেকে 18 জন আক্রান্ত হয়েছেন। অথচ পুলিশ নির্বিকার। বারবার পুলিশ কমিশনার ও বেলঘড়িয়া থানার আইসিকে বলা সত্ত্বেও কোনওরকম হেলদোল দেখা যায়নি। তিনি বলেন, "নরেন্দ্র মোদি যেমন বিরোধী শূন্যের ডাক দিয়েছেন তেমনই মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়েয়ও বহিরাগতদের দিয়ে বিরোধী শূন্য করছেন।" যদিও এ বিষয়ে শাসকদলের কারও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।