উত্তর 24 পরগনা, 2 মার্চ : ভোটের মুখে বিজেপির দখলে থাকা বাগদার সিন্দ্রানী পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনল তৃণমূল কংগ্রেস । সোমবার দুপুরে বাগদা বিডিও অফিসে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সদস্যরা । 14 জন পঞ্চায়েত সদস্যের স্বাক্ষর সম্বলিত চিঠি এদিন জমা দেওয়া হয় বিডিও অফিসে । তবে, রাজ্যে নির্বাচনী আচরণবিধি লাগু হওয়ার পর আদৌও কারও বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা যায় কিনা, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে গেরুয়া শিবির । যদিও এই বিষয়ে মুখ খুলতে চায়নি বাগদার বিডিও সৌমেন্দু গঙ্গোপাধ্যায় ।
সিন্দ্রানী গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন 26। 2018 সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি 13টি আসনে জেতে । 2 টি আসন যায় নির্দলদের দখলে । বাকি 11টি আসন পায় রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল । দুই নির্দল পঞ্চায়েত সদস্যের সমর্থন নিয়ে প্রধান নির্বাচিত হন বিজেপির লতিকা মণ্ডল । সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল । হঠাৎই ছন্দপতন ঘটে বিজেপির তিন পঞ্চায়েত সদস্যের তৃণমূলে যোগদানের পর । ফলে, ওই পঞ্চায়েতে সংখ্যা গরিষ্ঠতা হারায় গেরুয়া শিবির । অপরদিকে, আসনসংখ্যা বেড়ে 14 হওয়ায় সিন্দ্রানী পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয় তৃণমূল । যেহেতু নিয়ম বলছে, বোর্ড গঠনের আড়াই বছরের মধ্যে কোনও পঞ্চায়েতে অনাস্থা আনা যায় না, সেহেতু এতদিন প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে পারেনি তৃণমূল । তবে, সেই সময়সীমা শেষ হতেই এদিন সিন্দ্রানী পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রধান লতিকা মণ্ডলের অপসারণ চেয়ে বিডিও অফিসে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছেন তৃণমূলের 14 জন পঞ্চায়েত সদস্য ।
এই বিষয়ে সিন্দ্রানী পঞ্চায়েতের তৃণমূলের দলনেতা মিহির বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রায় পাঁচ মাস ধরে উন্নয়ন থমকে রয়েছে সিন্দ্রানী পঞ্চায়েত এলাকায় । প্রধান নিজেই আসেন না পঞ্চায়েতে।আমাদের কিছু ভুল ত্রুটির জন্য বিজেপি এই পঞ্চায়েত দখল করেছিল । আমরা পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে এদিন অনাস্থা প্রস্তাব এনেছি । মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছে । তাই বিধানসভা নির্বাচনে এই পঞ্চায়েত এলাকা থেকে আমরা ভালো ফল করব।’’
আরও পড়ুন : খোলা ব্যালটে ভোট, পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচনে জয়ী তৃণমূল
যদিও, অনাস্থা প্রস্তাব আনা নিয়ে শাসকদলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি । এই বিষয়ে বনগাঁর বিজেপি নেতা দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘বিধানসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়েছে রাজ্যে।এখন সবকিছুই নির্বাচন কমিশনের আওতায় । ফলে এই সময়ে অনাস্থা প্রস্তাব আনা যায় কিনা? তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে আমাদের । যদিও সেসবের কিছুই ধার ধারে না শাসকদল । ওঁদের কাজই হল অকাজ করা । যেহেতু ওই পঞ্চায়েতে সাধারণ মানুষ ঠিকঠাক ভাবে পরিষেবা পাচ্ছিল সেটা সহ্য হচ্ছিল না তৃণমূলের ৷ কারণ তাদের তো কাটমানি খেতে হবে ওই পঞ্চায়েত থেকে ৷’’