দত্তপুকুর, 14 জানুয়ারি: 'দিদির সুরক্ষা কবচ' (Didir Suraksha Kawach) কর্মসূচি চলাকালীন 'দিদির দূত'দের (Didir Doot) কাছে সমস্যার কথা জানাতে গিয়ে সপাটে চড় খেলেন যুবক ! রাজ্যের মন্ত্রীর সামনেই নির্দ্বিধায় দাদাগিরি চালিয়ে গেলেন এক তৃণমূলকর্মী (TMC Worker Slaps Man) ! শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটে উত্তর 24 পরগনার ইছাপুর নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের সাইবনা এলাকায় ৷ ঘটনার মুহূর্তের ছবি সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই নিন্দার ঝড় উঠেছে ৷ ক্ষমা চাইতে হয়েছে ঘটনাস্থলে উপস্থিত রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষকে (Rathin Ghosh) ৷
আক্রান্ত যুবকের নাম সাগর বিশ্বাস ৷ ঘটনার পর তিনি যাতে সংবাদমাধ্যমের মুখ খুলতে না পারেন, আপ্রাণ সেই চেষ্টা করেন তৃণমূলকর্মীরা ৷ তবে, তাতে তাঁরা সফল হননি ৷ কারণ, চড় মারার মুহূর্তের ছবি বন্দি হয়ে যায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের ক্যামেরায় ৷ এমনকী, এক তৃণমূলকর্মী যখন সাগরের মুখ চেপে ধরে ঘটনাস্থল থেকে তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন, সেই ঘটনাও ক্যামেরাবন্দি করা হয় ৷ পরবর্তীতে সংবাদমাধ্যমের সামনে ক্ষোভ উগরে দেন আক্রান্ত যুবক ৷ বেগতিক বুঝে শেষমেশ সাগরের পিঠ চাপড়ে বিষয়টি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন মন্ত্রী রথীন ঘোষ ৷
আরও পড়ুন: শতাব্দী রায়ের ভোজন বিতর্কে সরব বিজেপি নেতৃত্ব
এদিন সকালে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল রথীন ঘোষের ৷ সেই অনুসারেই 'দিদির দূত' হিসাবে নীলগঞ্জ সুভাষনগরের দলীয় কার্যালয়ে এসে পৌঁছন তিনি ৷ সেখানে তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করার পর সোজা চলে যান নিজের বিধানসভা এলাকার অন্তর্গত সাইবনায় ৷ সেখানে প্রাচীন একটি মন্দিরে পুজোও দেন তিনি ৷ এরপর মন্দিরের চাতালে বসেই দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নানা ইস্যু নিয়ে কথা বলেন ৷ সেই সময়েই মন্ত্রীকে হাতের কাছে পেয়ে এলাকার অনুন্নয়ন নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা ৷
মন্দিরের উন্নয়ন এবং সংলগ্ন রাস্তা সংস্কারের দাবি জানাতে মন্ত্রীর কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেন সাগরও ৷ সেই সময় হঠাৎই শিবম রায় নামে এক তৃণমূলকর্মী সাগরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং মন্ত্রীর সামনেই সপাটে তাঁর গালে চড় কষিয়ে দেন ! যদিও মন্ত্রীর দাবি, তিনি ঘটনাটি নিজে দেখেননি !
পরবর্তীতে আক্রান্ত সাগর বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, "আমি স্থানীয় মন্দির কমিটির সঙ্গে যুক্ত রয়েছি ৷ মন্ত্রীর কাছে যাচ্ছিলাম রাস্তাঘাট, মন্দিরের উন্নয়নের বিষয়ে কথা বলতে ৷ তার আগেই আমাকে চড় মারা হল ৷ কেন এভাবে আমাকে মারা হল, সেটাও বুঝতে পারছি না ! সাধারণ মানুষ যদি নিজের অভাব, অভিযোগ জানাতেই না পারে, তাহলে এই কর্মসূচির অর্থ কী ? আমি এর সুবিচার চাই ৷"
এদিকে, এই ঘটনার জেরে রীতিমতো বিব্রত হতে হয় খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষকে ৷ সংবাদমাধ্যমের সামনে প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি ৷ বলেন, "আমার সামনে এমন ঘটনা ঘটেনি ৷ যা ঘটেছে, তা ব্যক্তিগত পর্যায়ে ঘটেছে ৷ তারপরও বলব,যদি এরকম ঘটনা ঘটে থাকে, তা একদমই হওয়া উচিত নয় ৷" পরে অবশ্য সাগরের পিঠ চাপড়ে তাঁর কাছে ক্ষমা চান মন্ত্রীমশাই ৷