গাইঘাটা, ২৫ ফেব্রুয়ারি : দিল্লিতে পরিচারিকার কাজে পাঠিয়ে মহিলাদের দিয়ে গৃহস্থের বাড়িতে লুঠপাটের অভিযোগে ধৃত গাইঘাটার যুবক। ধৃতের নাম মিঠু সাহা। ধৃতের বাড়ি গাইঘাটা থানার চাঁদপাড়া সোনাটিকারি এলাকায়। ধৃতের বিরুদ্ধে আন্তঃরাজ্য নারীপাচার চক্রেরও অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর ধরে মিঠু বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মোটা মাইনের কাজের কথা বলে মহিলাদের ভারতে নিয়ে আসত। তারপর তাদের দেশের বিভিন্ন রাজ্যে কাজে পাঠানোর ব্যবস্থা করত। অল্পবয়সি মেয়েদের দিল্লিতে পাচার করত মিঠু।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, সীমান্তের দালালদের মাধ্যমে চোরাপথে বাংলাদেশি মেয়েদের এপারে নিয়ে আসত সে। ওই দালালরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রামের কিশোরীদের সঙ্গে যোগাযোগ করত। চোরাপথে তাদের ভারতে এনে মিঠু তাদের নিজের আস্তানায় রাখত। প্রয়োজন মতো জাল পরিচয়পত্রও তৈরি করে দিত। তারপর তাদের ভিনরাজ্যে কাজে পাঠিয়ে দিত। মিঠুর মাধ্যমে স্থানীয় কয়েকজন মহিলাও ভিনরাজ্যে কাজে গিয়েছেন। সম্প্রতি কয়েকজন বাংলাদেশি মহিলাকে মিঠু দিল্লির অশোকবিহার এলাকায় কাজে পাঠায়। সেখানে বিভিন্ন বাড়িতে তাদের পরিচারিকার কাজের ব্যবস্থা করে দেয়। ওই বাংলাদেশি মহিলারা কয়েকটি বাড়ি থেকে কয়েক লাখ টাকার সোনার গয়না ও নগদ টাকা লুট করে পালিয়ে যায়। ৩১ জানুয়ারি অশোকবিহার থানায় সে ব্যাপারে একটি অভিযোগ করা হলে ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে রিঙ্কু দাস নামে এক মহিলাকে গ্রেপ্তার করে। রিঙ্কুকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, পাচারচক্র ও চুরি-ছিনতাইয়ের মূল পান্ডা মিঠু। তারপর দিল্লি পুলিশ গাইঘাটা থানার সহযোগিতায় মিঠুকে গ্রেপ্তার করে এবং গত রাতে রিমান্ডে নিয়ে দিল্লি পাড়ি দেয়।
বনগাঁ আদালতের আইনজীবী সমীর ঘোষ বলেন, "বাংলাদেশের মহিলাদের দারিদ্রের সুযোগ নিয়ে নানা রকম প্রলোভন দেখিয়ে চোরাপথে ভারতে দিল্লির নিষিদ্ধপল্লিতে কাজে পাঠাত মিঠু। দিল্লিতে কাজে গিয়ে বাংলাদেশি মহিলারা গৃহস্থকে মারধর করে সোনা-দানা, টাকা লুট করে পালিয়ে যায়। তদন্তে নেমে পুলিশ গতকাল রাতে মিঠুকে গ্রেপ্তার করেছে।"