ETV Bharat / state

কচুয়া যাওয়ার মূল উদ্যোগ ছিল তাঁরই, অপর্ণার মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ দত্তপাড়া

হাসি মুখ আর হুল্লোড় করতে করতে গেছিলেন সবাই । ফিরলেন শরীরে ক্ষতচিহ্ন নিয়ে । আর জন্মাষ্টমী তিথিতে কচুয়াধামে যাওয়ার যার সব চেয়ে বেশি তৎপরতা ছিল যার তিনি অপর্ণা সরকার? তিনি ফিরলেন লাশ হয়ে । বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কচুয়াধামে দুর্ঘটনায় অপর্ণাকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ স্বরূপনগরের দত্তপাড়ার বাসিন্দারা ।

অপর্ণা সরকার
author img

By

Published : Aug 24, 2019, 9:07 PM IST

Updated : Aug 24, 2019, 10:54 PM IST

স্বরূপনগর, 24 অগাস্ট : সব থেকে বেশি উৎসাহী ছিলেন তিনিই ৷ তাঁর উদ্যোগেই মূলত জন্মাষ্টমীতে কচুয়া যাওয়ার পরিকল্পনা হয়েছিল ৷ কিন্তু, বাকিরা ফিরলেও বাড়ি ফেরা হল না অপর্ণা সরকারের ৷ গতকাল হাজার মানুষের পায়ের চাপে থমকে গেছে তাঁর হৃদস্পন্দন ৷ 24 ঘণ্টা কেটে গেলেও উত্তর 24 পরগনার স্বরূপনগরের দত্তপাড়ার মানুষজন এখনও বাকরুদ্ধ গোটা এলাকা ৷ এখনও মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে সত্যিটা ৷

স্ত্রী অপর্ণা ও 12 বছরের ছেলে দীপকে নিয়ে কচুয়ার লোকনাথ ধামে গেছিলেন স্বরূপনগর দত্তপাড়ার বাসিন্দা পেশায় রাজমিস্ত্রি তারক সরকার । দত্তপাড়া থেকে মোট চারটি গাড়িতে করে আনুমানিক 100 জন গেছিলেন । সবার মধ্যে অপর্ণার উৎসাহ ছিল সব থেকে বেশি । তাঁর প্রস্তাবেই তীর্থযাত্রার আয়োজন হয় । বৃহস্পতিবার দুপুরে গাড়ি ছেড়ে ছিল দত্তপাড়া থেকে । দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের ঘাট থেকে গঙ্গাজল নিয়ে গাড়ি চেপে সবাই বেড়াচাঁপা পর্যন্ত গেছিলেন । সেখান থেকে হেঁটে কচুয়ার লোকনাথ মন্দিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয় । সাত কিলোমিটার হেঁটে পৌঁছে মন্দিরে ঢোকার ঠিক আগের মুহূর্তে ঘটে দুর্ঘটনা । ভিড়ের চাপে লাইনের পাশের অস্থায়ী দোকানের মাচা ভেঙে সবাই পড়েন পুকুরে । অপর্ণা অবশ্য পুকুরে পড়েননি । পদপিষ্ট হন তিনি । অচেতন অবস্থায় তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল । কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি । বুকে ও মাথায় আঘাত লেগে গুরুতর জখম হন অপর্ণার স্বামী তারক ও ছেলে দীপ । তবে শরীরের আঘাতের চেয়ে মায়ের মৃত্যু তাঁকে বাকরুদ্ধ করে দিয়েছে । দুর্ঘটনার পর থেকে মায়ের ছবি হাতে নিয়ে সে কেবল চোখের জল ফেলে চলেছে ।

kachua
দীপের চোখে ও জিভে ক্ষত


কথা বলতে গিয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারক । তিনি বলেন, "মন্দিরে ঢোকার মুখে পুলিশ আমাদের আটকে দেয় । কিছুক্ষণ পরে পিছন থেকে অসংখ্য মানুষের ভিড়ের চাপ আসতেই পালিয়ে যায় পুলিশ । তখনই পাঁচিল ভেঙে পড়ে । সবাই তখন বাঁচার চেষ্টায় দৌড়াচ্ছে । অপর্ণাকে আর দেখতে পেলাম না । ছেলেকেও না । সব যখন শান্ত হল, তখন অপর্ণা নীথর হয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে ছিল । গায়ে অসংখ্য ক্ষত ।" মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী পাঁচ লাখ টাকার চেক অপর্ণার পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে স্বরূপনগর ব্লক প্রশাসন ।
বসিরহাট মহকুমার আরও দুই তীর্থযাত্রী হাসনাবাদের আমলানি মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা তরুণ মণ্ডল ও নোয়াপাড়ার বাসিন্দা সনোকা দাসের পরিবারের হাতেও চেক তুলে দেওয়া হয়েছে ।

kachua
পরিবারকে আর্থিক সাহায্য প্রশাসনের

স্বরূপনগর, 24 অগাস্ট : সব থেকে বেশি উৎসাহী ছিলেন তিনিই ৷ তাঁর উদ্যোগেই মূলত জন্মাষ্টমীতে কচুয়া যাওয়ার পরিকল্পনা হয়েছিল ৷ কিন্তু, বাকিরা ফিরলেও বাড়ি ফেরা হল না অপর্ণা সরকারের ৷ গতকাল হাজার মানুষের পায়ের চাপে থমকে গেছে তাঁর হৃদস্পন্দন ৷ 24 ঘণ্টা কেটে গেলেও উত্তর 24 পরগনার স্বরূপনগরের দত্তপাড়ার মানুষজন এখনও বাকরুদ্ধ গোটা এলাকা ৷ এখনও মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে সত্যিটা ৷

স্ত্রী অপর্ণা ও 12 বছরের ছেলে দীপকে নিয়ে কচুয়ার লোকনাথ ধামে গেছিলেন স্বরূপনগর দত্তপাড়ার বাসিন্দা পেশায় রাজমিস্ত্রি তারক সরকার । দত্তপাড়া থেকে মোট চারটি গাড়িতে করে আনুমানিক 100 জন গেছিলেন । সবার মধ্যে অপর্ণার উৎসাহ ছিল সব থেকে বেশি । তাঁর প্রস্তাবেই তীর্থযাত্রার আয়োজন হয় । বৃহস্পতিবার দুপুরে গাড়ি ছেড়ে ছিল দত্তপাড়া থেকে । দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের ঘাট থেকে গঙ্গাজল নিয়ে গাড়ি চেপে সবাই বেড়াচাঁপা পর্যন্ত গেছিলেন । সেখান থেকে হেঁটে কচুয়ার লোকনাথ মন্দিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয় । সাত কিলোমিটার হেঁটে পৌঁছে মন্দিরে ঢোকার ঠিক আগের মুহূর্তে ঘটে দুর্ঘটনা । ভিড়ের চাপে লাইনের পাশের অস্থায়ী দোকানের মাচা ভেঙে সবাই পড়েন পুকুরে । অপর্ণা অবশ্য পুকুরে পড়েননি । পদপিষ্ট হন তিনি । অচেতন অবস্থায় তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল । কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি । বুকে ও মাথায় আঘাত লেগে গুরুতর জখম হন অপর্ণার স্বামী তারক ও ছেলে দীপ । তবে শরীরের আঘাতের চেয়ে মায়ের মৃত্যু তাঁকে বাকরুদ্ধ করে দিয়েছে । দুর্ঘটনার পর থেকে মায়ের ছবি হাতে নিয়ে সে কেবল চোখের জল ফেলে চলেছে ।

kachua
দীপের চোখে ও জিভে ক্ষত


কথা বলতে গিয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারক । তিনি বলেন, "মন্দিরে ঢোকার মুখে পুলিশ আমাদের আটকে দেয় । কিছুক্ষণ পরে পিছন থেকে অসংখ্য মানুষের ভিড়ের চাপ আসতেই পালিয়ে যায় পুলিশ । তখনই পাঁচিল ভেঙে পড়ে । সবাই তখন বাঁচার চেষ্টায় দৌড়াচ্ছে । অপর্ণাকে আর দেখতে পেলাম না । ছেলেকেও না । সব যখন শান্ত হল, তখন অপর্ণা নীথর হয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে ছিল । গায়ে অসংখ্য ক্ষত ।" মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী পাঁচ লাখ টাকার চেক অপর্ণার পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে স্বরূপনগর ব্লক প্রশাসন ।
বসিরহাট মহকুমার আরও দুই তীর্থযাত্রী হাসনাবাদের আমলানি মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা তরুণ মণ্ডল ও নোয়াপাড়ার বাসিন্দা সনোকা দাসের পরিবারের হাতেও চেক তুলে দেওয়া হয়েছে ।

kachua
পরিবারকে আর্থিক সাহায্য প্রশাসনের
Intro:বাকরুদ্ধ দত্তপাড়া খুঁজছে শুধু অপর্ণাকেই

স্বরূপনগরঃ হাসি মুখ আর হুল্লোড় করতে করতে গিয়েছিলেন সবাই। ফিরলেন শরীরে রক্তাক্ত ক্ষতচিহ্ন নিয়ে। আর জন্মাষ্টমী তিথিতে কচুয়ার লোকনাথ ধামে যাওয়ার তোড়জোড় যার সব চেয়ে বেশি ছিল সেই অপর্ণা সরকার? তিনি ফিরলেন নীরব লাশ হয়ে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কচুয়ার লোকনাথ ধামে দুর্ঘটনায় অপর্ণাকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরের দত্তপাড়ার বাসিন্দারা।

জীবনে প্রথমবার স্ত্রী অপর্ণা ও ১২ বছরের একমাত্র ছেলে দীপকে নিয়ে কচুয়ার লোকনাথ ধামে তীর্থযাত্রা করতে গিয়েছিলেন স্বরূপনগর দত্তপাড়ার বাসিন্দা পেশায় রাজমিস্ত্রি তারক সরকার। দত্তপাড়া থেকে মোট চারটি গাড়িতে করে আনুমানিক ১০০ জন গিয়েছিলেন। সবার মধ্যে অপর্ণার উৎসাহই ছিল সব থেকে বেশি। তার প্রস্তাবেই ওই তীর্থযাত্রার আয়োজন হয়েছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে গাড়ি ছেড়ে ছিল দত্তপাড়া থেকে। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের ঘাট থেকে গঙ্গাজল নিয়ে গাড়ি চেপে সবাই বেড়াচাঁপা পর্যন্ত ফিরেছিলেন। তারপর পুণ্য অর্জনের জন্য পায়ে হেঁটেই কচুয়ার লোকনাথ মন্দিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। দীর্ঘ সাত কিলোমিটার লাইন দিয়ে মন্দিরের ঠিক আগের মুহূর্তে পৌঁছতেই দুর্ঘটনা। ভিড়ের চাপে লাইনের পাশের অস্থায়ী দোকানের মাচা ভেঙে সবাই পড়লেন পুকুর। অপর্ণা অবশ্য পুকুরে পড়েননি। প্রাণ বাঁচাতে সবার মরণপণ দৌড়ে পদপিষ্ট হলেন তিনি। অচেতন অবস্থায় তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। পদপিষ্ট হয়ে বুকে ও মাথায় আঘাত লেগে গুরুতর জখম হন অপর্নার স্বামী তারক ও ছেলে দীপ। রক্তাক্ত হয়েছে দীপের দু'টি চোখ। ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছে তার জিভ। শরীরের আঘাতের চেয়ে মায়ের মৃত্যু তাঁকে বাকরুদ্ধ করে দিয়েছে। দুর্ঘটনার পর থেকে মায়ের ছবি হাতে নিয়ে সে কেবল চোখের জল ফেলে চলেছে।

কথা বলতে গিয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারক। তিনি বলেন, 'মন্দিরে ঢোকার মুখে পুলিশ আমাদের আটকে দেয়। কিছুক্ষণ পরে পিছন থেকে অসংখ্য মানুষের ভিড়ের চাপ আসতেই পালিয়ে যায় পুলিশ। তখনই পাঁচিল ভেঙে পড়ে। সবাই তখন বাঁচার চেষ্টায় দৌড়াচ্ছে। অপর্ণাকে আর দেখতে পেলাম না। ছেলেকও না। সব যখন শান্ত হল, তখন অপর্ণা নীথর হয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে ছিল। গায়ে অসংখ্য ক্ষত।' মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী মৃতদের পরিবারের ক্ষতিপূরণের পাঁচ লক্ষ টাকার চেক অপর্ণার পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে স্বরূপনগর ব্লক প্রশাসন।
বসিরহাট মহকুমার আরও দুই তীর্থযাত্রী হাসনাবাদের আমলানি মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা তরুণ মণ্ডল ও নোয়াপাড়ার বাসিন্দা সনোকা দাসের পরিবারের হাতেও ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেওয়া হয়েছে।
Body:বাকরুদ্ধ দত্তপাড়া খুঁজছে শুধু অপর্ণাকেই

স্বরূপনগরঃ হাসি মুখ আর হুল্লোড় করতে করতে গিয়েছিলেন সবাই। ফিরলেন শরীরে রক্তাক্ত ক্ষতচিহ্ন নিয়ে। আর জন্মাষ্টমী তিথিতে কচুয়ার লোকনাথ ধামে যাওয়ার তোড়জোড় যার সব চেয়ে বেশি ছিল সেই অপর্ণা সরকার? তিনি ফিরলেন নীরব লাশ হয়ে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কচুয়ার লোকনাথ ধামে দুর্ঘটনায় অপর্ণাকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরের দত্তপাড়ার বাসিন্দারা।

জীবনে প্রথমবার স্ত্রী অপর্ণা ও ১২ বছরের একমাত্র ছেলে দীপকে নিয়ে কচুয়ার লোকনাথ ধামে তীর্থযাত্রা করতে গিয়েছিলেন স্বরূপনগর দত্তপাড়ার বাসিন্দা পেশায় রাজমিস্ত্রি তারক সরকার। দত্তপাড়া থেকে মোট চারটি গাড়িতে করে আনুমানিক ১০০ জন গিয়েছিলেন। সবার মধ্যে অপর্ণার উৎসাহই ছিল সব থেকে বেশি। তার প্রস্তাবেই ওই তীর্থযাত্রার আয়োজন হয়েছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে গাড়ি ছেড়ে ছিল দত্তপাড়া থেকে। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের ঘাট থেকে গঙ্গাজল নিয়ে গাড়ি চেপে সবাই বেড়াচাঁপা পর্যন্ত ফিরেছিলেন। তারপর পুণ্য অর্জনের জন্য পায়ে হেঁটেই কচুয়ার লোকনাথ মন্দিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। দীর্ঘ সাত কিলোমিটার লাইন দিয়ে মন্দিরের ঠিক আগের মুহূর্তে পৌঁছতেই দুর্ঘটনা। ভিড়ের চাপে লাইনের পাশের অস্থায়ী দোকানের মাচা ভেঙে সবাই পড়লেন পুকুর। অপর্ণা অবশ্য পুকুরে পড়েননি। প্রাণ বাঁচাতে সবার মরণপণ দৌড়ে পদপিষ্ট হলেন তিনি। অচেতন অবস্থায় তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। পদপিষ্ট হয়ে বুকে ও মাথায় আঘাত লেগে গুরুতর জখম হন অপর্নার স্বামী তারক ও ছেলে দীপ। রক্তাক্ত হয়েছে দীপের দু'টি চোখ। ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছে তার জিভ। শরীরের আঘাতের চেয়ে মায়ের মৃত্যু তাঁকে বাকরুদ্ধ করে দিয়েছে। দুর্ঘটনার পর থেকে মায়ের ছবি হাতে নিয়ে সে কেবল চোখের জল ফেলে চলেছে।

কথা বলতে গিয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারক। তিনি বলেন, 'মন্দিরে ঢোকার মুখে পুলিশ আমাদের আটকে দেয়। কিছুক্ষণ পরে পিছন থেকে অসংখ্য মানুষের ভিড়ের চাপ আসতেই পালিয়ে যায় পুলিশ। তখনই পাঁচিল ভেঙে পড়ে। সবাই তখন বাঁচার চেষ্টায় দৌড়াচ্ছে। অপর্ণাকে আর দেখতে পেলাম না। ছেলেকও না। সব যখন শান্ত হল, তখন অপর্ণা নীথর হয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে ছিল। গায়ে অসংখ্য ক্ষত।' মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী মৃতদের পরিবারের ক্ষতিপূরণের পাঁচ লক্ষ টাকার চেক অপর্ণার পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে স্বরূপনগর ব্লক প্রশাসন।
বসিরহাট মহকুমার আরও দুই তীর্থযাত্রী হাসনাবাদের আমলানি মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা তরুণ মণ্ডল ও নোয়াপাড়ার বাসিন্দা সনোকা দাসের পরিবারের হাতেও ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেওয়া হয়েছে।
Conclusion:বাকরুদ্ধ দত্তপাড়া খুঁজছে শুধু অপর্ণাকেই

স্বরূপনগরঃ হাসি মুখ আর হুল্লোড় করতে করতে গিয়েছিলেন সবাই। ফিরলেন শরীরে রক্তাক্ত ক্ষতচিহ্ন নিয়ে। আর জন্মাষ্টমী তিথিতে কচুয়ার লোকনাথ ধামে যাওয়ার তোড়জোড় যার সব চেয়ে বেশি ছিল সেই অপর্ণা সরকার? তিনি ফিরলেন নীরব লাশ হয়ে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কচুয়ার লোকনাথ ধামে দুর্ঘটনায় অপর্ণাকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরের দত্তপাড়ার বাসিন্দারা।

জীবনে প্রথমবার স্ত্রী অপর্ণা ও ১২ বছরের একমাত্র ছেলে দীপকে নিয়ে কচুয়ার লোকনাথ ধামে তীর্থযাত্রা করতে গিয়েছিলেন স্বরূপনগর দত্তপাড়ার বাসিন্দা পেশায় রাজমিস্ত্রি তারক সরকার। দত্তপাড়া থেকে মোট চারটি গাড়িতে করে আনুমানিক ১০০ জন গিয়েছিলেন। সবার মধ্যে অপর্ণার উৎসাহই ছিল সব থেকে বেশি। তার প্রস্তাবেই ওই তীর্থযাত্রার আয়োজন হয়েছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে গাড়ি ছেড়ে ছিল দত্তপাড়া থেকে। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের ঘাট থেকে গঙ্গাজল নিয়ে গাড়ি চেপে সবাই বেড়াচাঁপা পর্যন্ত ফিরেছিলেন। তারপর পুণ্য অর্জনের জন্য পায়ে হেঁটেই কচুয়ার লোকনাথ মন্দিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। দীর্ঘ সাত কিলোমিটার লাইন দিয়ে মন্দিরের ঠিক আগের মুহূর্তে পৌঁছতেই দুর্ঘটনা। ভিড়ের চাপে লাইনের পাশের অস্থায়ী দোকানের মাচা ভেঙে সবাই পড়লেন পুকুর। অপর্ণা অবশ্য পুকুরে পড়েননি। প্রাণ বাঁচাতে সবার মরণপণ দৌড়ে পদপিষ্ট হলেন তিনি। অচেতন অবস্থায় তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। পদপিষ্ট হয়ে বুকে ও মাথায় আঘাত লেগে গুরুতর জখম হন অপর্নার স্বামী তারক ও ছেলে দীপ। রক্তাক্ত হয়েছে দীপের দু'টি চোখ। ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছে তার জিভ। শরীরের আঘাতের চেয়ে মায়ের মৃত্যু তাঁকে বাকরুদ্ধ করে দিয়েছে। দুর্ঘটনার পর থেকে মায়ের ছবি হাতে নিয়ে সে কেবল চোখের জল ফেলে চলেছে।

কথা বলতে গিয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারক। তিনি বলেন, 'মন্দিরে ঢোকার মুখে পুলিশ আমাদের আটকে দেয়। কিছুক্ষণ পরে পিছন থেকে অসংখ্য মানুষের ভিড়ের চাপ আসতেই পালিয়ে যায় পুলিশ। তখনই পাঁচিল ভেঙে পড়ে। সবাই তখন বাঁচার চেষ্টায় দৌড়াচ্ছে। অপর্ণাকে আর দেখতে পেলাম না। ছেলেকও না। সব যখন শান্ত হল, তখন অপর্ণা নীথর হয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে ছিল। গায়ে অসংখ্য ক্ষত।' মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী মৃতদের পরিবারের ক্ষতিপূরণের পাঁচ লক্ষ টাকার চেক অপর্ণার পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে স্বরূপনগর ব্লক প্রশাসন।
বসিরহাট মহকুমার আরও দুই তীর্থযাত্রী হাসনাবাদের আমলানি মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা তরুণ মণ্ডল ও নোয়াপাড়ার বাসিন্দা সনোকা দাসের পরিবারের হাতেও ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেওয়া হয়েছে।
Last Updated : Aug 24, 2019, 10:54 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.