কলকাতা, 19 ডিসেম্বর: টানা সপ্তমবার আইএমএ-এর রাজ্য সম্পাদক পদে নির্বাচিত হলেন চিকিৎসক শান্তনু সেন ৷ টানা 12 বছর আইএমএ-এর রাজ্য সম্পাদক তিনি। বুধবার টানা 7 বার এই পদে নির্বাচিত হয়ে অশান্ত বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় চিকিৎসকদের ফেরানোর বার্তা দিলেন শান্তনু সেন
অশান্ত বাংলাদেশ ! ঢাকায় সনাতনী নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর থেকে ওপার বাংলার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠেছে ৷ ক্রমাগত সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর আক্রমণের ঘটনায় প্রাণে বাঁচতে ওপার বাংলা থেকে পালিয়ে এপার আশ্রয় নিচ্ছে বহু পরিবার। কিন্তু ওপার বাংলাতেও আটকে রয়েছেন বহু ভারতীয়। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বেশ কিছু চিকিৎসকও। তাঁদেরকে অবিলম্বে ফিরিয়ে আনার আবেদন নিয়ে এবার কেন্দ্রকে চিঠি দিতে চলেছেন নর্বনির্বাচিত আইএমএ-এর রাজ্যা সম্পাদক। টানা সপ্তমবার এ পদে জয়ী হয়ে এমনই ইচ্ছেপ্রকাশ করলেন রাজ্যসভার প্রাক্তন সংসদ তথা চিকিৎসক শান্তনু সেন। তিনি জানান, "আমার শীঘ্রই তাঁদের সুস্থভাবে দেশে ফিরিয়ে আনার আবেদন জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দেব।"
প্রায় সাড়ে 16 হাজার চিকিৎসকের এই সংগঠনের ভোটার সংখ্যা 793 ৷ এই নির্বাচনে মোট ভোট পড়েছে 633 ৷ সর্বাধিক ভোট পেয়েছেন শান্তনু সেন। তাঁর প্রাপ্য ভোট 430। সেই ভোট পেয়ে আবারও রাজ্যসম্পাদক পদে বসলেন তিনি। পাশাপাশি যুগ্মভাবে সভাপতি পদে এলেন চিকিৎসক সুভাষ চক্রবর্তী এবং চিকিৎসক চন্দন ঘোষাল।
এছাড়াও বেঙ্গল আইএমএ-এর ভোটে তৃণমূলপন্থী চিকিৎসকদের বিপুল জয় হয়েছে ৷ কিন্তু এই বছর নির্বাচনের গণনায় দেখা গিয়েছে বাউন্সারদের। এই প্রসঙ্গে শান্তনু সেন জানান, "এটা অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয়। কিন্তু এর আগে আমাদের একটা তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে হাওড়ায় । কিছু বহিরাগত মানুষ এসে তাণ্ডব চালিয়েছিল। তাই ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না-হয়, সেই জন্য বাউন্সার রাখা হয়েছিল। তবে আমরা কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়েছি, যাতে প্রত্যেকটা হাসপাতালে দেশের যে গুন্ডামি চলে তা আটকানোর জন্য আইন আনা হোক।"
চলতি বছর রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঘিরে উঠে এসেছে একাধিক অভিযোগ। তারমধ্যে সব থেকে চর্চিত হল উত্তরবঙ্গ লবি। তার সঙ্গে প্রথম থেকেই দেখা গিয়েছে শান্তনু সেনের বিরোধিতা। একাধিক অভিযোগ তোলা হয়েছিল এই শান্তনু সেনের বিরুদ্ধে। কিন্তু তার কোনও প্রভাব দেখা গেল না চিকিৎসকদের নির্বাচনে।
এই প্রসঙ্গে শান্তনু সেন বলেন, "আইএমএ চিকিৎসকদের সব থেকে বড় একটা সংগঠন । তার বেঙ্গল শাখায় নির্বাচন ছিল। চিকিৎসকরা তাঁদের গোপন ব্যালটে যে মতবাদ প্রকাশ করেছেন, তারই প্রতিফলন হয়েছে। চিকিৎসক সমাজেই বড় অংশের মতবাদ প্রতিফলন হতে দেখা গিয়েছে। চিকিৎসক সমাজ বোকা মানুষ নয়। তাই আমার এই জয় চিকিৎসক সমাজকেই উৎসর্গ করেছি।"
তবে বর্তমানে রাজ্যে স্বাস্থ্য দুর্নীতির পাশাপাশি আরও একটা প্রসঙ্গ সবথেকে উল্লেখ্যযোগ্য। সেটা হল আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ন্যায়বিচার ৷ এই প্রসঙ্গে ও আইএমএ একাধিক কর্মসূচি পূর্বে নিয়েছে। এবারেও তার ব্যতিক্রম হবে না, বলেই জানান শান্তনু সেন। তিনি বলেন, "আমরা সিবিআইয়ের কাছে যাব 23 তারিখ। কেন 90 দিন পরও চার্জশিট জমা দিতে পারল না, সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে । পাশাপাশি আমরা কেন্দ্র সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছি, দেশের প্রত্যেকটা হাসপাতালে প্রতি বছর একটা করে ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটে। তাই, ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা আটকানোর জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আনার।"