বারাসত, 27 জানুয়ারি: ট্যাবের টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকতেই কোথাও ডিজে বাজিয়ে উদ্দাম নাচ। আবার কোথাও ট্যাবের টাকা না-পাওয়ায় বিক্ষোভ পড়ুয়াদের। এ সবের মধ্যেই আবার ট্যাবের টাকা পকেটস্থ করার প্রলোভন দেখানোর এসএমএস এসেছে বারাসতের এক সরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের মোবাইলে। অচেনা নম্বর থেকে এমন এসএমএস সামনে আসতেই শুরু হয়েছে হইচই। ঘটনার পরই বারাসত থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শুরু হয়েছে তদন্ত।
কোরোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন শুরু হয়েছিল গত বছর মার্চ মাস থেকে। সংক্রমণের আতঙ্কে বন্ধ হয়েছে স্কুল। রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশে অনলাইনে ক্লাসের ব্যবস্থা শুরু করেছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ।কিন্তু,স্মার্টফোন বাড়িতে না-থাকায় অনেক পড়ুয়ারাই বঞ্চিত হচ্ছিলেন স্কুলের অনলাইন ক্লাস থেকে। স্মার্টফোন না-থাকায় বেশি সমস্যায় পড়েন উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। তাঁদের সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসে রাজ্য সরকার। অনলাইন ক্লাসের কথা মাথায় রেখে উচ্চমাধ্যমিক ও মাদ্রাসার সাড়ে ৯ লক্ষ পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার জন্য তাঁদের অ্যাকাউন্টে 10 হাজার করে টাকা দেওয়ার ঘোষাণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে ছাত্রছাত্রীদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতেও শুরু করেছে সরকার।
কিন্তু ট্যাব না-কিনে সরকারের সেই টাকা কিভাবে পকেটস্থ করা যায়, মোবাইলে এমন এসএমএস পাঠিয়ে পড়ুয়াদের প্রলোভন দেখানোর অভিযোগ উঠেছে বারাসতে। সম্প্রতি অপরিচিত এক নম্বর থেকে এই ধরনের প্রলোভনের এসএমএস এসেছে বারাসত কালীকৃষ্ণ গার্লস হাইস্কুলের পড়ুয়াদের একাংশের কাছে। আর এই ঘটনা সামনে আসতেই শোরগোল পড়েছে জেলাসদর বারাসতে। শুধু ছাত্রীদের কাছেই নয়। এই ধরনের এসএমএস এসেছে স্কুলের কয়েকজন শিক্ষিকার কাছেও। এসএমএসে বলা হয়েছে, অনেকের কাছেই এখন স্মার্টফোন, ল্যাপটপ রয়েছে। তাই সরকার থেকে পাওয়া টাকায় ট্যাব না-কিনলেও মিলবে জিএসটি-সহ বিল। এরপরই স্কুলের ছাত্রীরা যোগাযোগ করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে। তারপরই সামনে আসে বিষয়টি। অভিযোগ দায়ের হয় স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে।
আরও পড়ুন: শাহের সভার আগে ডুমুরজলা মাঠ পরিদর্শনে মালব্য
এই বিষয়ে বারাসত কালীকৃষ্ণ গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মৌসুমী সেনগুপ্ত বলেন,"নিয়ম অনুযায়ী ট্যাব কেনার বিল পাঠাতে হয় সরকারের কাছে। সেই জন্য মেয়েদের কাছে বিল চেয়েছিলাম। তখনই মেয়েরা এসে এমন এসএমএসের কথা বলে। মেসেজ পাঠিয়ে পড়ুয়াদের টোপ দেওয়া হচ্ছে"। তিনি আরও বলেন,"রাজ্য সরকার অনেক কষ্ট করে ট্যাব কেনার জন্য টাকা দিচ্ছে। আর মোবাইল বিক্রেতারা সরকারি টাকায় ট্যাব না-কেনার প্রস্তাব দিচ্ছে। আমি বিষয়টি লিখিতভাবে পুলিশকে জানিয়েছি"।
বারাসত থানার পুলিশ জানিয়েছে,"অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে"।