দত্তপুকুর, 16 সেপ্টেম্বর : 12 ঘণ্টার মধ্যে বারাসতের দত্তপুকুর থানার বেরো নারায়ণপুর এলাকায় ব্যক্তির রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের কিনারা করল পুলিশ ৷ মৃত ওই ব্যক্তির নাম দেবানন্দ মণ্ডল (42) ৷ গতকাল সকালে বারাসত শহর সংলগ্ন নারায়ণপুর এলাকা থেকে দেবানন্দের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় ৷ সেই সময় মৃতদেহের গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পায় পুলিশ ৷ তরপরই অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয় ৷ 12 ঘণ্টার মধ্যে সেই ঘটনার কিনারা করল দত্তপুকুর থানার পুলিশ ৷ পুলিশের দাবি দেবানন্দ মণ্ডলকে খুন করা হয়েছে ৷ খুনে করেছে বন্ধু গৌতম দে, এবং গৌতমকে সাহায্য করেছে দেবানন্দের স্ত্রী বৃহস্পতি মণ্ডল ও ছেলে সৌমেন ৷ আজ দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই জানিয়েছেন বারাসত পুলিশ জেলার সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছে অভিযুক্তরা বলেও আজ জানান তিনি ৷
দত্তপুকুর থানার বেরো নারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা দেবানন্দ মণ্ডল(42) ৷ ওই এলাকায় সপরিবারে থাকতেন তিনি ৷ পরিবার বলতে বছর 19-র ছেলে সৌমেন মণ্ডল ও স্ত্রী বৃহস্পতি ৷ পেশায় নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন দেবানন্দ ৷ কয়েক বছর আগে বারাসতের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করত দেবানন্দ ৷ আর সেখানেই দেবানন্দের সঙ্গে পরিচয় হয় গৌতমের ৷ গৌতমের বাড়ি গাইঘাটার কুলপুকুর এলাকায় ৷ গৌতমও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করত সেই সময় ৷ সেই থেকেই তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে ৷ এরপর থেকে দেবানন্দের বাড়িতে মাঝে মাঝে আসা যাওয়া করত গৌতম ৷ পুলিশের অনুমান তখনই দেবানন্দের স্ত্রী বৃহস্পতির সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে গৌতমের ৷ আর এই ঘটনা জানত দেবানন্দের ছেলে সৌমেন ৷ গৌতমকে পছন্দও করত সৌমেন ৷
দেবানন্দ প্রায়ই মত্ত হয়ে বৃহস্পতিকে মারধর করত ৷ আর এটা কখনই মানতে পারত না সৌমেন ৷ সম্প্রতি এমনই ঘটনা ঘটার পর দেবানন্দকে খুনের ছক কষে গৌতম ৷ পুলিশের দাবি খুনের মতলবের ব্যাপারে জানত বৃহস্পতি ও সৌমেন ৷ তারপরই সোমবার দেবানন্দের বাড়িতে যায় গৌতম ৷ সেখান থেকে আটটা নাগাদ দেবানন্দ ও গৌতম বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় ৷ তারপর আর বাড়ি ফেরেনি দেবানন্দ ৷ গতকাল সকালে বারাসত সংলগ্ন দত্তপুকুর থানার বেরো নারায়ণপুর এলাকা থেকে উদ্ধার হয় দেবানন্দের রক্তাক্ত দেহ ৷ তারপরই ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ ৷ গতকাল দুপুরে বারাসত হাসপাতাল মোড় থেকে প্রথমে গৌতমকে আটক করে পুলিশ ৷ তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় ৷ জিজ্ঞাসাবাদে অসংলগ্ন উত্তর দেওযায় ওই রাতেই দেবানন্দের স্ত্রী ও ছেলেকে থানায় নিয়ে আসা হয় ৷ তিনজনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতেই অভিযুক্তরা খুনের কথা স্বীকার করে ৷ তারপরই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ৷ আজ সাংবাদিক বৈঠকে একথা জানিয়েছেন বারাসত পুলিশ জেলার সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, খুন নিশ্চিত করতে সোমবার রাতে গৌতমকে ফোনও করেছিল বৃহস্পতি । সেই কল লিস্ট রয়েছে পুলিশের কাছে ৷