বারাসত, ৩ মার্চ : "বাড়ি থেকে লোক ডেকে এনে আমরা ভোটটা করাব। ভোটারদের কানে কানে বলব মমতা ব্যানার্জির উন্নয়নের কথা।" গতকাল উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সামনে এমনই মন্তব্য করেন দলের জেলা সভাপতি ও খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। কোর কমিটির বৈঠকের পর দলের রণকৌশল নিয়ে মধ্যমগ্রামে জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।
বৈঠকে জেলার প্রার্থী তালিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, "প্রার্থী তালিকা ঠিক করবেন দলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। আমরা প্রার্থী নিয়ে ভাবছি না। প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা আছে। যেই প্রার্থী হোক, সে প্লাটফর্মে চলে আসবে। সে তার বক্তব্য রাখবে। মতামত দেবে। মানুষ শুনবে। বাড়ি থেকে লোকগুলোকে ডেকে এনে আমরা ভোটটা করাব। কানে কানে বলব মমতা ব্যানার্জির উন্নয়নের কথা।"
এই জেলায় ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মতুয়া অধ্যুষিত এলাকায় সভা করে গেছেন। আসন্ন লোকসভায় তার কোনও প্রভাব পড়বে কি না, সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "প্রভাব তো পড়ল না। আমরাও তো পালটা সভা করলাম। উনি (প্রধানমন্ত্রী) তো বড়মাকে নিয়ে মায়া কান্না কেঁদেছেন। বড়মা হাসপাতালে এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। উনি কিংবা দল (BJP) একদিনও তো বড়মাকে দেখতে গেলেন না। তার মানে বড়মাকে নিয়ে কমার্শিয়াল ব্যবসা করা হয়েছে। বড়মা তো আর দরজা বন্ধ করে রাখেননি। যে উনি দেখতে যেতে পারবেন না। আমরা তো হাসপাতালে গিয়ে বড়মাকে দেখে এসেছি। আসলে ওঁদের রাজনীতি মানুষ বুঝে গেছে। ফলে প্রধানমন্ত্রীর আগমনে কোনও প্রভাব পড়বে না লোকসভা ভোটে।"
BJP-কে কটাক্ষ করে জ্যোতিপ্রিয়বাবু আরও বলেন, "পাঁচবছর ধরে আমরা মাঠে রয়েছি। এমনটা নয়, যে চারবছর পর মাঠে নামছি। মাঠে নেমে প্র্যাকটিস করা আছে আমাদের। যে পায়ে বল চাইব, সেই পায়েই বল নিয়ে নাচাতে পারব। ওরা নিজেরাই সেমসাইড গোল দিয়ে ফেলবে।" নতুন প্রজন্মের ভোটও তাঁদের দিকে ঝুঁকে রয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। ফলে জেলার পাঁচটি লোকসভার আসনই এবারও তৃণমূলের পক্ষে যাবে বলে মত তাঁর। গতকাল জেলার সাংসদ, বিধায়ক, ব্লক ও পঞ্চায়েত স্তরের নেতাদের নিয়ে লোকসভার ভোটের রণকৌশল ঠিক করতে বৈঠক করেন জ্যোতিপ্রিয়বাবু। এবিষয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, "বুথ ভিত্তিক ভোটারদের মনের অবস্থা জানতে প্রতি বুথে লোকসভার নিবার্চন কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সাতদিন অন্তর মিটিং করে এবিষয়ে যাবতীয় রিপোর্ট জেলাকে দেবে। এছাড়া লোকসভা ভিত্তিকও কমিটি গঠিত হয়েছে। বিগত আটবছরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি কী কী উন্নয়নের কাজ করেছেন, তার শুভেচ্ছাবার্তাসহ ওই সংক্রান্ত তথ্য চিঠির আকারে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে।" জ্যোতিপ্রিয়বাবুর কথায়, ১৮ থেকে ২১ বছর বয়সি ভোটাররা মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়ন দেখছে। ফলে তারা মমতা ব্যানার্জির উন্নয়নের পক্ষেই ভোট দেবে।