মধ্যমগ্রাম, 13 এপ্রিল : মধ্যমগ্রাম পৌরসভার 10 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের পর এবার কোরোনায় আক্রান্ত হলেন তাঁর গাড়িচালক । জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর , এই গাড়ি চালকের সোয়াব পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে । এরপর গতকাল দুপুরে তড়িঘড়ি তাঁকে বারাসতের কোয়ারান্টাইন সেন্টার থেকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে চিকিৎসার জন্য । এই নিয়ে মধ্যমগ্রাম পৌরসভা এলাকায় কোরোনায় আক্রান্ত হলেন তিনজন । কাউন্সিলরের গাড়িচালক কোরোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরই তাঁর পরিবারের সদস্যদের পাঠানো হয়েছে বারাসতের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ারান্টাইন সেন্টারে । সেখানেই তাঁদের 14 দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে । তবে,এই উদ্বেগের মাঝেও স্বস্তির খবর,কোরোনায় আক্রান্ত কাউন্সিলরের সংস্পর্শে আসা 13 জনের নমুনার পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে ।
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে,কিছুদিন আগে ওই কাউন্সিলর অসুস্থ হয়ে পড়েন ৷ হাসপাতলে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে পাঁজাকোলা করে গাড়িতে তুলেছিলেন ওই যুবক । সম্ভবত, কাউন্সিলরের সংস্পর্শে সরাসরি আসার জন্যই সে কোরোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে । যদিও বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি উত্তর 24 পরগনা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক । জানা গেছে, কোরোনায় আক্রান্ত মধ্যমগ্রাম পৌরসভার 10 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের সংস্পর্শে আসার পরই বারাসতের এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ারান্টাইন সেন্টারে রাখা হয়েছিল গাড়িচালক ওই যুবককে । এছাড়াও ওই কোয়ারান্টাইন সেন্টারে ছিল কাউন্সিলরের পরিবারের 6 জন সদস্য সহ 7 জন দলীয় কর্মী ৷ তবে, এঁদের সবার সোয়াব পরীক্ষার রিপোর্টই নেগেটিভ এসেছে । কাউন্সিলরের গাড়িচালকের কোরোনায় আক্রান্ত হওয়ার সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন মধ্যমগ্রাম পৌরসভার পৌর প্রধান ও বিধায়ক রথীন ঘোষ । তিনি বলেন,"ওই যুবকের কোরোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসায় তাঁকে বারাসতের একটি হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে । তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও কোয়ারান্টাইন সেন্টারে রাখা হয়েছে । আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি । পৌরবাসীদের কাছে আবেদন করছি, আতঙ্কিত হবেন না"।
অন্যদিকে,আশার বিষয় যে কোরোনায় আক্রান্ত মধ্যমগ্রাম পৌরসভার কাউন্সিলর ক্রমেই সুস্থ হয়ে উঠছেন । বেলেঘাটা ID হাসপাতাল থেকে পাঠানো তাঁর দ্বিতীয় কোরোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে বলে খবর হাসপাতাল সূত্রে খবর । 24 ঘণ্টা পর আরও একবার তাঁর লালারসের নমুনার পরীক্ষা করা হবে । সেই পরীক্ষা রিপোর্ট যদি নেগেটিভ আসে তাহলে ওই কাউন্সিলরকে খুব শীঘ্রই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে । ইতিমধ্যেই 10 নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু করে দিয়েছে পৌরসভা । বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের পৌর পারিষদ নিমাই ঘোষ বলেন,"আগামী কয়েকদিন ধরে এই স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলবে । স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় যদি কারও জ্বর,সর্দি,কাশি ধরা পড়ে,তখন বিষয়টি জানানো হবে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরকে । পৌরসভা থেকে একটি রিপোর্টও তুলে দেওয়া হবে তাঁদের হাতে । এরপর,জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর নমুনা পরীক্ষার প্রয়োজন মনে করলে পরীক্ষা করে দেখবে"।
তবে আরও একটা চিন্তার বিষয় থেকে যাচ্ছে ৷ আক্রান্ত গাড়িচালকের বাড়ি মধ্যমগ্রাম পৌরসভার 5 নম্বর ওয়ার্ডে । তাহলে কি কাউন্সিলরের 10 নম্বর ওয়ার্ডের মতো এই ওয়ার্ডকেও স্পর্শকাতর বলে সিল করা উচিত ?