বারাসত, 2 জুন : ফের কাঠগড়ায় বারাসতের বেসরকারি হাসপাতাল । এবার রোগী ফেরানো নয়, বরং ভর্তি নিয়ে স্বাস্থ্য সাথীর কার্ডে চিকিৎসার সুবিধা থেকে রোগীর পরিবারকে বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠল ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে । এমনকি করোনা টেস্ট বাবদ অতিরিক্ত টাকা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে । স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড থাকার পরও একশ্রেণির বেসরকারি হাসপাতাল যে চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছে না তা কার্যত মেনে নিয়েছেন বারাসত পৌরসভার মুখ্য প্রশাসক । হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি । যদিও এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি বেসরকারি ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ।
করোনার উপসর্গ নিয়ে গত 28 মে বারাসত নবপল্লির ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তির জন্য আসেন বছর সত্তরের গণেশ ঘোষাল । অভিযোগ, চিকিৎসা শুরু হওয়ার আগেই হাসপাতালে 10 হাজার টাকা জমা করতে বলা হয় ওই পরিবারকে । স্বাস্থ্য সাথীর কার্ডে চিকিৎসা করার কথা বলা হলেও সেই বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দেয়নি বলে অভিযোগ । এখানেই শেষ নয়, করোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন টেস্টের জন্য রাজ্য সরকার যেখানে মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে, সেখানে ওই বৃদ্ধের কোভিড টেস্টের জন্য অতিরিক্ত টাকা নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । এমনই অভিযোগে সরব হয়েছেন রোগী পরিবার ।
আরও পড়ুন: জলপাইগুড়ির কোভিড হাসপাতাল থেকে পালানোর চেষ্টা করোনা রোগীর
এই বিষয়ে বৃদ্ধের জামাই রজত সরকার বলেন, "আমার শ্বশুরমশাই বেসরকারি সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী । সেকথা জানানো হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে । বারবার অনুরোধ করা হয়, স্বাস্থ্য সাথীর কার্ডে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে । কিন্তু সেই সুবিধা দেওয়া হয়নি । চিকিৎসা বাবদ হাসপাতালকে নগদ 34 হাজার টাকা দিয়ে তবে রোগীকে 1 জুন বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ "
এই বিষয়ে বারাসত পৌরসভার মুখ্য প্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, "শহরের সমস্ত বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিয়ে মঙ্গলবারই একটি বৈঠক করা হয়েছে । সেখানে বারাসত নবপল্লির কেয়ার এন্ড কিওর এবং সেবায়ন নামে দুটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য সাথীর কার্ডে চিকিৎসা পরিষেবা না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে । ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এবার থেকে শহরের সমস্ত বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নোটিশ বোর্ড ঝুলিয়ে জানাতে হবে, কতজন রোগীকে সেদিন স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে ৷ পুরো বিষয়টিতে নজরদারি চালাবে পৌরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ । তারা কোনও ত্রুটি দেখতে পেলেই ব্যবস্থা নেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ৷"
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, সেই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি এই বিষয়ে ।