বারাসত, 29 সেপ্টেম্বর : প্রাপ্য সম্মান দিন নইলে স্বেচ্ছামৃত্যুর পথ ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না । স্থায়ীকরণ, বেতন কাঠামোর পুনর্বিন্যাসসহ একাধিক দাবিতে কলেজের অস্থায়ী কর্মচারীদের অবস্থান বিক্ষোভ থেকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে উঠল এমনই আওয়াজ । আজ দুপুরে ওই সমস্ত দাবিতে জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ দেখান পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ক্যাজ়ুয়াল এমপ্লয়িজ় সমিতির সদস্যরা ।
জানা গেছে, রাজ্যের বিভিন্ন কলেজে সবমিলিয়ে প্রায় সাত হাজার অস্থায়ী কর্মচারী রয়েছে । দীর্ঘদিন ধরে এরা কলেজের বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত থাকলেও স্থায়ীকরণ করা হয়নি । বাড়েনি বেতনও । এই নিয়ে আগেও তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষামন্ত্রী সকলের নজরে এনেছিলেন বিষয়টি । এমনকী বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণও করেছিলেন কলেজের অস্থায়ী কর্মচারীরা । কিন্তু তারপরও কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ । সেই কারণে নিজেদের দাবিদাওয়া পূরণ করতে আজ রাস্তায় নামেন তাঁরা । বিক্ষোভ দেখান জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে ।
গতকাল TET উত্তীর্ণদের বিক্ষোভের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আজ অবশ্য আগে থেকেই পুলিশি নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় জেলাশাসকের দপ্তর । এমনকী দপ্তরের সামনের রাস্তার দুদিক আটকে দেওয়া হয়েছিল ব্যারিকেড দিয়ে । যাতে আন্দোলনকারীরা দপ্তরের ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে । বিক্ষোভের পাশাপাশি চলে স্থায়ীকরণের দাবিতে স্লোগানও । পরে পুলিশের উপস্থিতিতে সংগঠনের এক প্রতিনধিদল স্মারকলিপি পেশ করে জেলাশাসকের দপ্তরে।
পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ক্যাজ়ুয়াল এমপ্লয়িজ় সমিতির জেলা সম্পাদক প্রদীপ নাগ বলেন, "সারা রাজ্যে বিভিন্ন কলেজে সাড়ে ছ'হাজার থেকে সাত হাজার অস্থায়ী কর্মচারী রয়েছে । তাঁরা বিভিন্ন গঠনমূলক কাজে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সেবা করে চলেছেন বছরের পর বছর ধরে । কিন্তু কলেজের অস্থায়ী কর্মচারীরা ন্যূনতম সম্মান পায়নি । না তাঁদের স্থায়ী করা হয়েছে । না তাঁদের বেতন কাঠামোর পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে । আমরা এখনও প্রদীপের নিচের অন্ধকারে পড়ে রয়েছি । তাই আমরা চায় কলেজের অস্থায়ী কর্মচারীদের স্থায়ীকরণ করা হোক । বিবেচনা করা হোক তাঁদের বেতন কাঠামোও ।"
তাঁর কথায়, "মুখ্যমন্ত্রী থেকে শিক্ষামন্ত্রী প্রত্যেকেরই অজানা নয় বিষয়টি । তাঁদের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে দাবিদাওয়া পেশ করা হয়েছে । কিন্তু তারপরও কোনও সুরাহা হয়নি । সরকার বিভিন্ন দপ্তরে অস্থায়ী কর্মচারীদের স্থায়ীকরণের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখলেও আমাদের বিষয়টির কোনও গুরুত্ব দিচ্ছে না । হয় আমাদের প্রাপ্য সম্মান দেওয়া হোক । না হলে স্বেচ্ছামৃত্যু করা ছাড়া আমাদের কোনও উপায় থাকবে না ।"
বিষয়টি নিয়ে উত্তর 24 পরগনার জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি ।