বারাসত, 31 অগাস্ট : NRC ইশুতে ফরওয়ার্ড ব্লকের অবরোধ ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল বারাসত যশোর রোডের চাঁপাডালি মোড় সংলগ্ন এলাকায় । অবরোধ চলাকালীন পথচারীদের সঙ্গে বচসা বাধে ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্বের । এমন কী হুমকি দেওয়ার অভিযোগও ওঠে তাদের বিরুদ্ধে । উপস্থিত ছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়, দলের জেলা সভাপতি হরিপদ বিশ্বাস । পরে অবশ্য পথচারীদের সংঘবদ্ধ চাপের কাছে নতিস্বীকার করে অবরোধ তুলতে বাধ্য হন ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা-কর্মীরা ।
আজ জাতীয় নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পড়েছে অসমের প্রায় 19 লাখ মানুষের নাম । এর প্রতিবাদে আজ বিকেলে বারাসতের চাঁপাডালি মোড়ে অবরোধ করে নাগরিকত্ব সুরক্ষা মঞ্চ । নাগরিকত্ব সুরক্ষা মঞ্চের ব্যানারে এই অবরোধ হলেও, পুরোভাগে ছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা ও কর্মীরা । দলের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়, জেলা সভাপতি হরিপদ বিশ্বাস, জেলা সম্পাদক ও বারাসত পৌরসভার কাউন্সিলর সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়কে এই অবরোধে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় । সদাব্যস্ত যশোর রোডে আচমকা এই অবরোধের জেরে স্তব্ধ হয়ে যায় যান চলাচল । আটকে পড়েন স্কুল পড়ুয়া থেকে অফিস ফেরত যাত্রী প্রত্যেকেই । এমন কী অবরোধের জেরে এক মুমূর্ষু রোগীকেও আটকে থাকতে দেখা যায় টোটোর মধ্যে ।
প্রায় আধ ঘণ্টা যান চলাচল স্তব্ধ থাকার পর ধৈর্য হারান পথচারীরা । তাঁরা জোটবদ্ধ হয়ে এর বিরোধিতা করতে শুরু করেন । অবরোধকারীদের সঙ্গে বচসা বাধে । সেই সময় সুব্রত দেবনাথ নামে এক পথচারীকে আঙুল উঁচিয়ে রীতিমতো হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক ও কাউন্সিলর সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে । তাতে অবস্থার আরও অবনতি ঘটে । কিছুক্ষণ বাকবিতণ্ডা চলার পর পথচারীদের সংঘবদ্ধ চাপের কাছে নতিস্বীকার করে অবরোধ তুলে নিতে বাধ্য হন ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা, কর্মীরা ।
সুব্রত দেবনাথ নামে ওই পথচারী বলেন, "ছেলেকে পড়াতে নিয়ে যাচ্ছিলাম । এখানে এসে দেখি রাস্তাতে অবরোধ চলছে । রাস্তাতে বেশ কিছুক্ষণ আটকেও থাকি । সবচেয়ে খারাপ লাগছিল টোটোর মধ্যে এক মুমূর্ষু রোগী আটকে থাকায় ।" সুব্রতবাবুর অভিযোগ, ওই রোগীকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতেই বচসা শুরু করে অবরোধকারীরা । তিনি বলেন, "আমি কেন এই অনুরোধ করেছি, এই কারণ দেখিয়ে ফরওয়ার্ড ব্লকের একজন আমার দিকে এসে আঙুল উঁচিয়ে কথা বলতে শুরু করে । আমাকে হুমকিও দেয় ।" সুব্রতবাবুর বক্তব্য, "প্রতিবাদ বা আন্দোলন করার অনেক রাস্তা আছে । সাধারণ মানুষের অসুবিধা করে আন্দোলন করার কোনও যুক্তি আছে বলে আমার মনে হয় না । রাজনৈতিক দলগুলির এবিষয়ে ভাবনার সময় এসেছে ।"
যদিও হুমকি বা আঙুল উঁচিয়ে কথা বলার অভিযোগ মানতে নারাজ ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক তথা কাউন্সিলর সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় । তিনি বলেন, "অবরোধ চলাকালীন দলীয় নেতারা বক্তব্য রাখায় মাইকের আওয়াজে আমরা কিছু বুঝতে পারিনি । বোঝা সম্ভব হয়নি যে একজন রোগী আটকে রয়েছেন । বোঝার পর আমরাই রোগীকে যাওয়ার রাস্তা করে দিয়েছি । বচসা বা হুমকির অভিযোগ একেবারে ঠিক নয় ।"