ETV Bharat / state

বারাসতে করোনা সন্দেহে মৃতের দেহ পড়ে রইল 16 ঘণ্টা - corona

করোনা সন্দেহে আক্রান্তের দেহ পড়ে রইল 16 ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ৷ ভয়ে কাছে ঘেঁষলেন না প্রতিবেশীরা ৷ ওয়ার্ড কাউন্সিলরও প্রথমে তেমন গা করেননি ৷ বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী ছাড়া আর কেউ নেই ৷ একা মৃত স্ত্রীর দেহ আগলে বসে থাকেন স্বামী ৷ তবে খবর পেয়ে সংবাদমাধ্যম পৌঁছলে তাঁদের হস্তক্ষেপে দেহ উদ্ধার করে পৌরসভা ৷ ঘটনাটি ঘটেছে বারাসতের 15 নম্বর ওয়ার্ডের বাণীকণ্ঠ নগরে ৷

করোনা সন্দেহে মৃতের দেহ পড়ে রইল 16 ঘণ্টা
করোনা সন্দেহে মৃতের দেহ পড়ে রইল 16 ঘণ্টা
author img

By

Published : May 9, 2021, 5:53 PM IST

Updated : May 9, 2021, 8:52 PM IST

বারাসত, 9 মে : করোনা সন্দেহে মৃত মহিলার দেহ 16 ঘণ্টারও বেশি সময় পড়ে রইল ভাড়াবাড়িতে । দেহ উদ্ধার কিংবা সৎকারে এগিয়ে এলেন না প্রতিবেশীরা ৷ এমনই অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল উত্তর 24 পরগনার জেলাসদর বারাসত । এক্ষেত্রে স্থানীয় পৌরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে উঠেছে অসহযোগিতার অভিযোগ । বারবার সহযোগিতা চেয়েও তা মেলেনি বলে অভিযোগ পরিবারের । শেষে সংবাদমাধ্যমের হস্তক্ষেপে 16 ঘণ্টা পর মহিলার দেহ উদ্ধারে উদ্যোগী হন পৌরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা । তবে অসহযোগিতার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ ।

জানা গেছে, বারাসত পৌরসভার 15 নম্বর ওয়ার্ডের বাণীকণ্ঠ নগরে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন বছর পঁয়তাল্লিশের আভা সাহা । স্বামী নারায়ণ সাহা বইয়ের দোকানের কর্মচারী । তাঁর সামান্য রোজগারে সংসার চলে দম্পতির । পরিবারে আর কেউ নেই । কয়েকদিন ধরে জ্বর ও কাশিতে ভুগছিলেন আভা । বুধবার এলাকারই এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় মহিলাকে । সেই চিকিৎসক তাঁকে কোভিড টেস্টের পরামর্শ দেন । প্রেসক্রিপশনে সেকথা লিখেও দেওয়া হয় । কিন্তু আর্থিক সামর্থ্য ও লোকবল না থাকায় মহিলার কোভিড টেস্ট করাতে পারেননি তাঁর স্বামী ৷ এরপর বিনা চিকিৎসায় শনিবার রাত দশটা নাগাদ মৃত্যু হয় ওই মহিলার । রবিবার সকালে সেকথা জানাজানি হতেই আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায় । করোনা সন্দেহে মহিলার বাড়ির দিকে ঘেষতে ভয় পান প্রতিবেশীদের অনেকেই । স্ত্রীর দেহ আগলে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকেন একাকী স্বামী । এই সময়ের মধ্যে বিষয়টি স্থানীয় তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলরকে জানানো হলেও তিনি কোনও কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ উঠেছে । ফলে 16 ঘণ্টারও বেশি সময় মহিলার দেহ পড়ে থাকে ভাড়া বাড়িতেই ।

বারাসতের বাণীকণ্ঠ নগরে করোনা সন্দেহে মৃত মহিলার দেহ পড়ে থাকল 16 ঘণ্টা ৷

মৃতের স্বামী নারায়ণ সাহা বলেন, "পরিবারে স্ত্রী ছাড়া আমার আর কেউ নেই । ফলে আমার পক্ষে স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি কিংবা কোভিড টেস্ট করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি । রাত থেকে দেহ বাড়িতে পড়ে থাকলেও করোনার আতঙ্কে কেউ আসেনি ৷ কাউন্সিলরকেও বিষয়টি জানানো হয়েছিল । কিন্তু তার কাছ থেকেও সদর্থক কোনও উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি ৷"

এদিকে অসহযোগিতার অভিযোগ উড়িয়ে পাল্টা মৃত মহিলার স্বামীর দায়িত্ববোধ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন ওই ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলরের স্বামী ও তৃণমূল নেতা জয়ন্ত ঘোষ । তিনি বলেন, "5 মে যে চিকিৎসকের কাছে মহিলাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তিনি পরিষ্কার কোভিড টেস্টের কথা বলেছিলেন তাঁর স্বামীকে । তা সত্ত্বেও মহিলার কোভিড টেস্ট হয়নি । মুখ্যমন্ত্রী বারবার পরামর্শ দিচ্ছেন, কারোর কোনও উপসর্গ থাকলে সঙ্গে সঙ্গে কোভিড টেস্ট করাতে । আর এখন সরকারি হাসপাতালেও বিনামূল্যে কোভিড টেস্ট হয় । তা সত্ত্বেও কেন উনি কাউকে কিছু না জানিয়ে মহিলাকে বাড়িতে ফেলে রাখলেন সেটাই বোধগম্য হচ্ছে না । যেহেতু মহিলার কোনও কোভিড টেস্ট হয়নি সেই কারণে কোনও চিকিৎসকও ডেথ সার্টিফিকেট দিতে রাজি হচ্ছেন না । আমরা চেষ্টা করছি সমস্যার সমাধান করতে । আশা করছি নিশ্চয় কোনও না কোনও সমাধান হবে ৷"

এদিকে, বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পৌঁছন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা । তাঁদের হস্তক্ষেপে শেষে 16 ঘণ্টা পর ওই মহিলার দেহ উদ্ধার করেন পৌরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা ৷ অন্যদিকে, পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে মৃত মহিলার দেহ কোভিড টেস্টের পরই সরকারি নিয়ম মেনে সৎকারের ব্যবস্থা করা হবে ।

আরও পড়ুন: করোনাবিধি শিকেয় তুলে চলছে রবিবাসরীয় বাজার

বারাসত, 9 মে : করোনা সন্দেহে মৃত মহিলার দেহ 16 ঘণ্টারও বেশি সময় পড়ে রইল ভাড়াবাড়িতে । দেহ উদ্ধার কিংবা সৎকারে এগিয়ে এলেন না প্রতিবেশীরা ৷ এমনই অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল উত্তর 24 পরগনার জেলাসদর বারাসত । এক্ষেত্রে স্থানীয় পৌরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে উঠেছে অসহযোগিতার অভিযোগ । বারবার সহযোগিতা চেয়েও তা মেলেনি বলে অভিযোগ পরিবারের । শেষে সংবাদমাধ্যমের হস্তক্ষেপে 16 ঘণ্টা পর মহিলার দেহ উদ্ধারে উদ্যোগী হন পৌরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা । তবে অসহযোগিতার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ ।

জানা গেছে, বারাসত পৌরসভার 15 নম্বর ওয়ার্ডের বাণীকণ্ঠ নগরে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন বছর পঁয়তাল্লিশের আভা সাহা । স্বামী নারায়ণ সাহা বইয়ের দোকানের কর্মচারী । তাঁর সামান্য রোজগারে সংসার চলে দম্পতির । পরিবারে আর কেউ নেই । কয়েকদিন ধরে জ্বর ও কাশিতে ভুগছিলেন আভা । বুধবার এলাকারই এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় মহিলাকে । সেই চিকিৎসক তাঁকে কোভিড টেস্টের পরামর্শ দেন । প্রেসক্রিপশনে সেকথা লিখেও দেওয়া হয় । কিন্তু আর্থিক সামর্থ্য ও লোকবল না থাকায় মহিলার কোভিড টেস্ট করাতে পারেননি তাঁর স্বামী ৷ এরপর বিনা চিকিৎসায় শনিবার রাত দশটা নাগাদ মৃত্যু হয় ওই মহিলার । রবিবার সকালে সেকথা জানাজানি হতেই আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায় । করোনা সন্দেহে মহিলার বাড়ির দিকে ঘেষতে ভয় পান প্রতিবেশীদের অনেকেই । স্ত্রীর দেহ আগলে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকেন একাকী স্বামী । এই সময়ের মধ্যে বিষয়টি স্থানীয় তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলরকে জানানো হলেও তিনি কোনও কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ উঠেছে । ফলে 16 ঘণ্টারও বেশি সময় মহিলার দেহ পড়ে থাকে ভাড়া বাড়িতেই ।

বারাসতের বাণীকণ্ঠ নগরে করোনা সন্দেহে মৃত মহিলার দেহ পড়ে থাকল 16 ঘণ্টা ৷

মৃতের স্বামী নারায়ণ সাহা বলেন, "পরিবারে স্ত্রী ছাড়া আমার আর কেউ নেই । ফলে আমার পক্ষে স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি কিংবা কোভিড টেস্ট করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি । রাত থেকে দেহ বাড়িতে পড়ে থাকলেও করোনার আতঙ্কে কেউ আসেনি ৷ কাউন্সিলরকেও বিষয়টি জানানো হয়েছিল । কিন্তু তার কাছ থেকেও সদর্থক কোনও উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি ৷"

এদিকে অসহযোগিতার অভিযোগ উড়িয়ে পাল্টা মৃত মহিলার স্বামীর দায়িত্ববোধ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন ওই ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলরের স্বামী ও তৃণমূল নেতা জয়ন্ত ঘোষ । তিনি বলেন, "5 মে যে চিকিৎসকের কাছে মহিলাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তিনি পরিষ্কার কোভিড টেস্টের কথা বলেছিলেন তাঁর স্বামীকে । তা সত্ত্বেও মহিলার কোভিড টেস্ট হয়নি । মুখ্যমন্ত্রী বারবার পরামর্শ দিচ্ছেন, কারোর কোনও উপসর্গ থাকলে সঙ্গে সঙ্গে কোভিড টেস্ট করাতে । আর এখন সরকারি হাসপাতালেও বিনামূল্যে কোভিড টেস্ট হয় । তা সত্ত্বেও কেন উনি কাউকে কিছু না জানিয়ে মহিলাকে বাড়িতে ফেলে রাখলেন সেটাই বোধগম্য হচ্ছে না । যেহেতু মহিলার কোনও কোভিড টেস্ট হয়নি সেই কারণে কোনও চিকিৎসকও ডেথ সার্টিফিকেট দিতে রাজি হচ্ছেন না । আমরা চেষ্টা করছি সমস্যার সমাধান করতে । আশা করছি নিশ্চয় কোনও না কোনও সমাধান হবে ৷"

এদিকে, বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পৌঁছন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা । তাঁদের হস্তক্ষেপে শেষে 16 ঘণ্টা পর ওই মহিলার দেহ উদ্ধার করেন পৌরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা ৷ অন্যদিকে, পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে মৃত মহিলার দেহ কোভিড টেস্টের পরই সরকারি নিয়ম মেনে সৎকারের ব্যবস্থা করা হবে ।

আরও পড়ুন: করোনাবিধি শিকেয় তুলে চলছে রবিবাসরীয় বাজার

Last Updated : May 9, 2021, 8:52 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.