ETV Bharat / state

Panchayat Elections 2023: 22 বছর ধরে ঘরছাড়া ! বিজেপির হয়ে ময়দানে লড়াই দীপঙ্কর হালদারের

22 বছর রাজনৈতিক সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে ঘরছাড়া রয়েছেন বিজেপি প্রার্থী দীপঙ্কর হালদার ৷ এবার তিনি লড়াই করছেন বারাসত 2 নম্বর ব্লকের জেলাপরিষদের 38 নম্বর আসন থেকে ৷

Panchayat Elections 2023
বিজেপির হয়ে ময়দানে লড়াই ঘরছাড়া দীপঙ্করের
author img

By

Published : Jun 30, 2023, 4:35 PM IST

22 বছর ধরে ঘরছাড়া

বারাসত, 30 জুন: বাম আমলে মুচলেকা দিয়ে বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল তাঁকে। সেই যে ঘরছাড়া হয়েছিলেন, 22 বছর পরও ফিরতে পারেননি গ্রামের বাড়িতে। সন্ত্রাসের জেরে লাগাতার হুমকির মুখে পড়ে স্ত্রী, সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন ভাড়া বাড়িতে। ঘরছাড়া হয়েও তিনি এবারের পঞ্চায়েত ভোটে গেরুয়া শিবিরের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলাপরিষদ আসনে। ঘরছাড়া বিজেপি নেতা দীপঙ্কর হালদার জেলাপরিষদের 38 নম্বর আসন থেকে এবার লড়াই করছেন একদা শাসনের বেতাজ বাদশা মজিদ মাস্টারের বারাসত 2 নম্বর ব্লক থেকে। তবে, বহু বাঁধা, বিপত্তি পেরিয়ে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও সন্ত্রাসের জেরে এখনও এলাকায় ঢুকতেই পারেননি তিনি। প্রচার তো দুরঅস্ত! ফলে, এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরে সরগরম হয়ে উঠেছে শাসন অঞ্চল

দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপি দলের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত দীপঙ্কর। প্রথমে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএস-র সঙ্গে সে যুক্ত থাকলেও পরবর্তীকালে গেরুয়া শিবিরের একজন দক্ষ সংগঠক হয়ে ওঠেন। বর্তমানে তিনি বিজেপির হ‍্যান্ডলুম অ্যান্ড উইভার্স সেলের রাজ্যের এক্সিকিউটিভ মেম্বার। ফলে, সংগঠন করার সুবাদে বারবার দীপক ও তাঁর পরিবারকে হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে। সূত্রের খবর, 2009 সালে দক্ষিণ বহিরা গ্রামে বাড়ির কাছে গেরুয়া পতাকা লাগানোয় মজিদ মাস্টারের বাহিনীর চক্ষুশূল হয়ে ওঠেন বিজেপি নেতা দীপঙ্কর।

তাতেই তৈরি হয় সমস্যা ৷ গ্রামের বাড়িতে ঢুকে দীপঙ্করের বৃদ্ধ বাবা-মাকে হুমকি, পুলিশ দিয়ে ছোট ভাইকে থানায় নিয়ে যাওয়া। তাঁকে ছাড়াতে মুচলেকা দেওয়া। অভিযোগ কোনও জুলুমবাজিই বাদ যায়নি বিজেপি নেতার ওপর। শেষে, পরিবারকে বাঁচাতে গ্রাম ছেড়ে স্ত্রী, সন্তান নিয়ে দীপঙ্কর-কে আশ্রয় নিতে হয় বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে বারাসতে। আপাতত সেখানেই একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে দিন গুজরান করছেন ঘরছাড়া এই বিজেপি নেতা।

এবারের পঞ্চায়েত ভোটে জেলাপরিষদ আসনে দল টিকিট দিয়েছে ঘরছাড়া এই বিজেপি নেতাকে। বিপরীতে লড়াই করছেন তৃণমূলের ডাকাবুকো নেতা এবং বিগত জেলাপরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ একে এম ফারহাদ। সিপিএমের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শাহ আলম। ইতিমধ্যে তৃণমূল প্রার্থী জোরদার প্রচার শুরু করে দিলেও, অভিযোগ শাসকদলের সন্ত্রাস এবং হুমকির কারণে প্রচারে নামতে পারছেন না বিজেপি প্রার্থী দীপঙ্কর। ফলে সরব হয়েছেন গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী দীপঙ্কর হালদার। এলাকায় ঢুকতে না পেরে ডিজিটাল পদ্ধতিকে হাতিয়ার করে প্রচার সারছেন তিনি।

তিনি বলেন, "যে আসন থেকে জেলাপরিষদের বিজেপির প্রার্থী হয়েছি, সেই আসনটি দাদপুর, কীর্তিপুর 1 এবং 2 পঞ্চায়েত এলাকা নিয়ে গঠিত। দু-একবার এলাকায় যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু, হুমকির মুখে পড়ে ফিরে আসতে হয়েছে। সাধারণ মানুষও ভয়ে তটস্থ। কেউ ঠিকভাবে কথা বলতে চাইছে না আমার সঙ্গে। তাই, নিরুপায় হয়েই ভাড়া বাড়ি থেকে ফোন কলিং এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রচার করতে হচ্ছে। এছাড়া তো আর উপায় নেই। বাম আমলের থেকেও তৃণমূল আমলে বারাসত 2 নম্বর ব্লকের পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক। গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির বহু আসনে প্রার্থীই দিতে দেওয়া হয়নি আমাদের। আমাকেও চাপ দেওয়া হয়েছিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য। কিন্তু, সেই চাপের কাছে নতিস্বীকার করিনি। মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারলে তৃণমূল হারবে, একপ্রকার নিশ্চিত।"

একই সুর শোনা গিয়েছে বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস মিত্রের গলাতেও। তাঁর কথায়,"হুইপ জারি করে তৃণমূল বলেছে, ওখানে কোনও ধরনের প্রচার চলবে না বিজেপির। তাই, ইচ্ছে থাকলেও দলীয় প্রার্থী দীপঙ্কর প্রচার করতে পারছেন না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সকলেরই অধিকার রয়েছে ভোটে প্রচার করার। কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। একনায়কতন্ত্র কায়েম করা হয়েছে এখানে। আমরা চাইব, শুধু কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নয়, সুষ্ঠভাবে ভোট করাতে হলে 356 ধারাও জারি করা প্রয়োজন।"

আরও পড়ুন: তৃণমূল যদি ভাবে রক্তের হোলি খেলব, তাহলে বিজেপিকেও নামতে হবে: সুকান্ত

অন‍্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেন, "এরকমই কোনও ঘটনার কথা আমার জানা নেই। বিজেপির যদি সংগঠন থেকে থাকে তাহলে তো প্রচারে অসুবিধা হওয়ার কথা নই! কে আটকাচ্ছে ? নিদির্ষ্ট করে বলুক ওরা। এরকম যদি কিছু ঘটে থাকে তাহলে বিজেপি প্রার্থীর উচিত নির্বাচন কমিশন এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো।তারপরও যখন অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই কথা বলব দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে। এটুকু বলতে পারি।"

22 বছর ধরে ঘরছাড়া

বারাসত, 30 জুন: বাম আমলে মুচলেকা দিয়ে বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল তাঁকে। সেই যে ঘরছাড়া হয়েছিলেন, 22 বছর পরও ফিরতে পারেননি গ্রামের বাড়িতে। সন্ত্রাসের জেরে লাগাতার হুমকির মুখে পড়ে স্ত্রী, সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন ভাড়া বাড়িতে। ঘরছাড়া হয়েও তিনি এবারের পঞ্চায়েত ভোটে গেরুয়া শিবিরের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলাপরিষদ আসনে। ঘরছাড়া বিজেপি নেতা দীপঙ্কর হালদার জেলাপরিষদের 38 নম্বর আসন থেকে এবার লড়াই করছেন একদা শাসনের বেতাজ বাদশা মজিদ মাস্টারের বারাসত 2 নম্বর ব্লক থেকে। তবে, বহু বাঁধা, বিপত্তি পেরিয়ে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও সন্ত্রাসের জেরে এখনও এলাকায় ঢুকতেই পারেননি তিনি। প্রচার তো দুরঅস্ত! ফলে, এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরে সরগরম হয়ে উঠেছে শাসন অঞ্চল

দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপি দলের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত দীপঙ্কর। প্রথমে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএস-র সঙ্গে সে যুক্ত থাকলেও পরবর্তীকালে গেরুয়া শিবিরের একজন দক্ষ সংগঠক হয়ে ওঠেন। বর্তমানে তিনি বিজেপির হ‍্যান্ডলুম অ্যান্ড উইভার্স সেলের রাজ্যের এক্সিকিউটিভ মেম্বার। ফলে, সংগঠন করার সুবাদে বারবার দীপক ও তাঁর পরিবারকে হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে। সূত্রের খবর, 2009 সালে দক্ষিণ বহিরা গ্রামে বাড়ির কাছে গেরুয়া পতাকা লাগানোয় মজিদ মাস্টারের বাহিনীর চক্ষুশূল হয়ে ওঠেন বিজেপি নেতা দীপঙ্কর।

তাতেই তৈরি হয় সমস্যা ৷ গ্রামের বাড়িতে ঢুকে দীপঙ্করের বৃদ্ধ বাবা-মাকে হুমকি, পুলিশ দিয়ে ছোট ভাইকে থানায় নিয়ে যাওয়া। তাঁকে ছাড়াতে মুচলেকা দেওয়া। অভিযোগ কোনও জুলুমবাজিই বাদ যায়নি বিজেপি নেতার ওপর। শেষে, পরিবারকে বাঁচাতে গ্রাম ছেড়ে স্ত্রী, সন্তান নিয়ে দীপঙ্কর-কে আশ্রয় নিতে হয় বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে বারাসতে। আপাতত সেখানেই একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে দিন গুজরান করছেন ঘরছাড়া এই বিজেপি নেতা।

এবারের পঞ্চায়েত ভোটে জেলাপরিষদ আসনে দল টিকিট দিয়েছে ঘরছাড়া এই বিজেপি নেতাকে। বিপরীতে লড়াই করছেন তৃণমূলের ডাকাবুকো নেতা এবং বিগত জেলাপরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ একে এম ফারহাদ। সিপিএমের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শাহ আলম। ইতিমধ্যে তৃণমূল প্রার্থী জোরদার প্রচার শুরু করে দিলেও, অভিযোগ শাসকদলের সন্ত্রাস এবং হুমকির কারণে প্রচারে নামতে পারছেন না বিজেপি প্রার্থী দীপঙ্কর। ফলে সরব হয়েছেন গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী দীপঙ্কর হালদার। এলাকায় ঢুকতে না পেরে ডিজিটাল পদ্ধতিকে হাতিয়ার করে প্রচার সারছেন তিনি।

তিনি বলেন, "যে আসন থেকে জেলাপরিষদের বিজেপির প্রার্থী হয়েছি, সেই আসনটি দাদপুর, কীর্তিপুর 1 এবং 2 পঞ্চায়েত এলাকা নিয়ে গঠিত। দু-একবার এলাকায় যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু, হুমকির মুখে পড়ে ফিরে আসতে হয়েছে। সাধারণ মানুষও ভয়ে তটস্থ। কেউ ঠিকভাবে কথা বলতে চাইছে না আমার সঙ্গে। তাই, নিরুপায় হয়েই ভাড়া বাড়ি থেকে ফোন কলিং এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রচার করতে হচ্ছে। এছাড়া তো আর উপায় নেই। বাম আমলের থেকেও তৃণমূল আমলে বারাসত 2 নম্বর ব্লকের পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক। গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির বহু আসনে প্রার্থীই দিতে দেওয়া হয়নি আমাদের। আমাকেও চাপ দেওয়া হয়েছিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য। কিন্তু, সেই চাপের কাছে নতিস্বীকার করিনি। মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারলে তৃণমূল হারবে, একপ্রকার নিশ্চিত।"

একই সুর শোনা গিয়েছে বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস মিত্রের গলাতেও। তাঁর কথায়,"হুইপ জারি করে তৃণমূল বলেছে, ওখানে কোনও ধরনের প্রচার চলবে না বিজেপির। তাই, ইচ্ছে থাকলেও দলীয় প্রার্থী দীপঙ্কর প্রচার করতে পারছেন না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সকলেরই অধিকার রয়েছে ভোটে প্রচার করার। কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। একনায়কতন্ত্র কায়েম করা হয়েছে এখানে। আমরা চাইব, শুধু কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নয়, সুষ্ঠভাবে ভোট করাতে হলে 356 ধারাও জারি করা প্রয়োজন।"

আরও পড়ুন: তৃণমূল যদি ভাবে রক্তের হোলি খেলব, তাহলে বিজেপিকেও নামতে হবে: সুকান্ত

অন‍্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেন, "এরকমই কোনও ঘটনার কথা আমার জানা নেই। বিজেপির যদি সংগঠন থেকে থাকে তাহলে তো প্রচারে অসুবিধা হওয়ার কথা নই! কে আটকাচ্ছে ? নিদির্ষ্ট করে বলুক ওরা। এরকম যদি কিছু ঘটে থাকে তাহলে বিজেপি প্রার্থীর উচিত নির্বাচন কমিশন এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো।তারপরও যখন অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই কথা বলব দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে। এটুকু বলতে পারি।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.