বারাসত , 4 এপ্রিল : কোরোনা মোকাবিলায় দেশজুড়ে চলছে লকডাউন । এর জেরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে জমায়েতের ওপর । সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে ৷ ফলে বন্ধ রয়েছে রক্তদান শিবির । এই পরিস্থিতিতে রক্তের সংকট তৈরি হয়েছে বিভিন্ন ব্লাড ব্যাঙ্ক ও হাসপাতালগুলিতে । তাই রক্তের আকাল মেটাতে এবার এগিয়ে এল বারাসত GRP । রক্তদান শিবির করে রক্ত দিলেন 30 জন রেলপুলিশ কর্মী । শনিবার , দুপুরে বারাসত স্টেশন সংলগ্ন পাইওনিয়ার ক্লাবের মাঠে আয়োজন করা হয় এই রক্তদান শিবিরের । রেলপুলিশ কর্মীদের মনোবল বাড়াতে এই শিবিরে হাজির ছিলেন শিয়ালদা ডিভিশনের GRP-র DSP নরেন্দ্র নাথ দত্ত , বারাসত GRP-র OC বিদ্যুৎ সাঁপুই সহ রেল পুলিশের পদস্থ কর্তারা ।
সাধারণত , গ্রীষ্মকালে রক্তের সংকট হয় জেলার বিভিন্ন প্রান্তে । তার উপর লকডাউনের কারণে রক্তদান শিবির বন্ধ থাকায় রক্তের আকাল দেখা দিতে শুরু করেছে । এই অবস্থায় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন রক্তাল্পতা , থ্যালাসেমিয়া ও মারণ রোগে আক্রান্ত রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা । তবে , রক্ত দেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই । কেননা , কোরোনা সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে জারি হয়েছে লকডাউন । আর এই লকডাউনের জেরে রক্তের সংকট তৈরি হয়েছে জেলার বিভিন্ন ব্লাড ব্যাঙ্ক ও হাসপাতালগুলিতে । ফলে চাহিদা থাকলেও জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না । এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসল বারাসত রেলপুলিশ ।
রাজ্যের বিভিন্ন ব্লাড ব্যাঙ্ক ও হাসপাতালগুলিতে যে রক্তের আকাল দেখা দিয়েছে , তা নজর এড়ায়নি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের । পরিস্থিতির সামাল দিতে আসরে নামেন তিনি । কলকাতা ও জেলা পুলিশকে নির্দেশ দেন , সমস্ত থানা এলাকাতে রক্তদান শিবির করার । সেই নির্দেশ মতো প্রায় প্রতিদিনই রক্তদান শিবির আয়োজিত হচ্ছে পুলিশের তরফে । আজ, রক্তদান শিবিরও তার ব্যতিক্রম নয় । সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার সঙ্গে রক্ত দিতে আসা প্রত্যেক রেলপুলিশ কর্মীর হাত আগে স্যানিটাইজ়ার দিয়ে পরিষ্কারও করা হয়েছে বলে GRP সূত্রে খবর ।
এবিষয়ে শিয়ালদা ডিভিশনের GRP-র DSP নরেন্দ্র নাথ দত্ত বলেন ,"লকডাউনের জেরে বিভিন্ন জায়গায় রক্তদান শিবির বন্ধ রয়েছে । তার ফলে গ্রীষ্মকালীন রক্ত সংকট তৈরি হয়েছে । তাই , মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বারাসত GRP-র তরফে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয় । রেল পুলিশ কর্মীরা কাজের দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সঙ্গে শিবিরে গিয়ে রক্তদানও করেছেন । মানুষের যে কোনও প্রয়োজনে আমরা পাশে আছি ।"
প্রসঙ্গত , গ্রীষ্মকালীন রক্ত সংকট মেটাতে কিছুদিন আগেই মধ্যমগ্রাম দোলতলা পুলিশ লাইনে জেলা পুলিশের তরফে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল । সেই শিবিরে প্রায় 50 জন কর্মী রক্তদান করেন । এবার রক্তদান করলেন 30 জন রেলপুলিশ কর্মী । রক্তের আকাল মেটাতে আগামীদিনেও আরও রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ।