ঝাড়গ্রাম, 20 জানুয়ারি: তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কনভয়ে হামলার অভিযোগে যিনি অভিযুক্ত, সেই রাকেশ মাহাতোই এবার যোগ দিলেন ঘাসফুল শিবিরে ৷ সোমবার দুপুরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন ৷ শিবাজী মাহাতোর সামাজিক সংগঠন আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি রাকেশ মাহাতো । আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন । তার আগে জঙ্গলমহলে এই যোগদান যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ ৷
উল্লেখ্য, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ার কর্মসূচি চলাকালীন গড় শালবনিতে তাঁর কনভায়ে হামলার ঘটনার অভিযোগ ওঠে ৷ সেই ঘটনার অভিযুক্ত রাকেশ মাহাতো জেল পর্যন্ত খেটেছেন । বর্তমানে মামলাটি ঝাড়গ্রাম আদালতে বিচারাধীন রয়েছে । তার মাঝেই সোমবার দুপুরে তৃণমূলে যোগ দিলেন ৷
রাকেশের হাত ধরে সাপধরা গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্দল দুই পঞ্চায়েত সদস্য টেঙিয়া সংসদের আশারানি মাহাতো, পাঁচামি সংসদের দীপা পাত্রও সোমবার যোগদান করেন তৃণমূলে । পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় রাকেশ মাহাতোকে বিশেষ ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল । রাকেশের হাত ধরেই সাপধরা গ্রাম পঞ্চায়েত জয়লাভ করেছিল কুড়মিরা ।
এদিন ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয়ে এই যোগদান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা । ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অজিত মাহাতো, জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি দুর্গেশ মল্লদেব ও প্রসূন সড়ঙ্গী, ঝাড়গ্রাম ব্লকের ব্লক সভাপতি নরেন মাহাতো, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দেবব্রত সাহা, শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি নবু গোয়ালা, সাপধরা অঞ্চল তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি দীনুনাথ সিং, খেলা হবে টিমের রাজ্য সহ-সভাপতি বিভাস মাহাতো-সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা ।
তৃণমূলের যোগদানের পর রাকেশ মাহাতো বলেন, "আমি আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের জেলা সভাপতি ছিলাম । মন প্রাণ দিয়ে কুড়মি সমাজকে ভালোবাসতাম, সমাজকে নিয়ে থাকতাম । কিন্তু বর্তমান সময়ে সমাজের সংগঠনে যেভাবে চাওয়া পাওয়া শুরু হয়েছে, সেই চাওয়া-পাওয়াকে উপেক্ষা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে ভালোবেসে তৃণমূল কংগ্রেসের যোগদান করলাম ৷"
তিনি কুড়মি সমাজের নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন, "শিবাজী মাহাতোর নেতৃত্বে আমরা ঠিকভাবে সংগঠন চালাচ্ছিলাম । কিন্তু রাজেশ মাহাতোর সংগঠনে এসে তার দলবলকে দিয়ে পেপার মিলের সংগঠন দখল নিয়ে নেয় । সেই থেকে আমরা বুঝতে পারি সমাজকে একটা চাওয়া-পাওয়ার জায়গা নিয়ে এসেছে । তাই আমি তৃণমূলে যোগদান করলাম এবং আমি আরও দু'জন নির্দল পঞ্চায়েত সদস্যকে যোগদান করালাম তৃণমূলে ৷"
তৃণমূলের তরফে জানা গিয়েছে, সাপধরা গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন সংখ্যা 10টি । 2023 সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল পেয়েছিল 5টি ও নির্দলরা পেয়েছিল 5টি আসন । টাই হয়ে যাওয়ার টসে জিতে বোর্ড গঠন করে কুড়মি সমর্থিত নির্দলরা । নির্দল 2 পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে যোগদান করায় সাপধরা গ্রাম পঞ্চায়েতের পাল্লা ভারী হল তৃণমূলের । এবার বোর্ড গঠনের পথে তৃণমূল ।
যোগদান প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি প্রসূন সড়ঙ্গী বলেন, "যারা একসময় ভুল বুঝে তৃণমূল থেকে দূরে সরে গিয়েছিল তারা আজকে তাঁদের ভুল বুঝতে পারছে এবং পুনরায় তাঁরা সকলেই তৃণমূল কংগ্রেসের যোগদান করছে । মানুষের আস্থা ভরসা আমাদের জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি রয়েছে আগামিদিনেও থাকবে ৷"