ETV Bharat / state

ফাঁসির সাজা কেন হল না! প্রশ্ন ফিরহাদ হাকিম থেকে শঙ্কর ঘোষের - POLITICAL LEADERS ON RG KAR VERDICT

আরজি কর ধর্ষণ-খুন কাণ্ডে আমৃত্যু কারাদণ্ড সঞ্জয় রায়ের ৷ রায় অসম্পূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল ৷

Political Leaders on RG Kar Verdict
ফাঁসির সাজা কেন হল না! প্রশ্ন ফিরহাদ হাকিম থেকে শঙ্কর ঘোষের (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 20, 2025, 8:49 PM IST

কলকাতা, 20 জানুয়ারি: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ-খুনের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ড হয়েছে সঞ্জয় রায়ের ৷ অনেকেই মনে করেছিলেন সঞ্জয়কে হয়তো ফাঁসির সাজা শোনাবে আদালত ৷ কিন্তু শিয়ালদা আদালতের বিচারক অবশ্য এই অপরাধের দায়ে কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন সিভিক ভলান্টিয়ারকে সর্বোচ্চ সাজা দেননি ৷

শনিবার রায় ঘোষণা হয় এই মামলার ৷ তখনই আদালত সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করেছিল ৷ তার পরই বিজেপি-সিপিএমের নেতারা প্রশ্ন করেছিলেন, নেপথ্যে যারা ছিল, তাদের শাস্তি কি হবে না ? তৃণমূল অবশ্য মনে করেছিল যে কলকাতা পুলিশের তদন্তই যে সঠিক পথে এগিয়েছিল, তা আদালতের রায়ে স্পষ্ট হয়েছে ৷

কিন্তু সোমবার সঞ্জয়ের সাজা ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেল ৷ কেউ বললেন ফাঁসি হলে ভালো হতো ৷ কেউ কেউ আদালতের রায় নিয়ে মন্তব্য করতে চাইলেন না ৷ অনেকে আবার সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন ৷

একনজরে দেখে নেওয়া যাক, কে কী মন্তব্য করেছেন-

ফিরহাদ হাকিম: কলকাতার মেয়র এই নিয়ে বলেন, ‘‘অভয়া তার বিচার পায়নি । তার বাবা-মাকে ভুল বোঝানো হয়েছে । রাজ্য সরকারের হাতে তদন্তভার থাকলে ফাঁসি হতো হতো হতো ।’’ এই রায় প্রসঙ্গে নাম না করেই কাঠগড়ায় তোলেন আইনজীবী ও সিপিএম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে । পাশাপশি বিরোধীরা রাজনীতি করতেই হাইকোর্টে সিবিআই তদন্তের আবেদন করেছে বলে এদিন দাবি করেন তিনি ।

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা ফাঁসির দাবি আজও করছি । এটা বিরল থেকে বিরলতম অন্যায় । আমাদের নেত্রী, মুখ্যমন্ত্রী প্রথম দিনেই বলেছেন আমরা ফাঁসি চাই । আজ দোষী তারা, যারা মামলা গুলিয়ে দেওয়ার জন্য হাইকোর্টে গিয়ে সিবিআই করেছিল । তারা হল মূল অপরাধী ।’’

রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজ্যের তদন্তে তিনটি পকসো কেস ফাঁসির অর্ডার হল । অপদার্থ সিবিআই কীভাবে মামলা করল যে ফাঁসির অর্ডার হল না ? কেন রাজ্যের উপর ভরসা করা হল না ? কেন রাজনীতি করতে সিবিআই চাওয়া হল ? রাজ্যকে সুযোগ দিল না, যেখানে তদন্তে সফল হওয়ার নজির আছে । এই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে সেদিন যারা হাইকোর্টে গিয়েছিল ।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি তিন মেয়ের বাবা৷ আমার কষ্ট লাগবে না ?’’ এই রায়ের পর নির্যাতিতার বাবা-মায়ের হতাশা প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, ‘‘কেন গেল ? কার কথায় হাইকোর্টে গেল ? পুলিশকে তদন্তের সুযোগ দিল না । বিরোধীরা বলছিল বৃহত্তর ষড়যন্ত্র । কিসের ষড়যন্ত্র ? একটা অপরাধী ধর্ষণ-খুন করেছে । ফাঁসির সাজা হবে না ! এটা বিরলতম নয় ?’’

অমিত মালব্য: এই নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য ৷ তিনি লেখেন, "আরজি কর ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও 50 হাজার টাকা জরিমানা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী । এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা প্রয়োজন । পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অপরাধীকে আড়াল করা বন্ধ করতে হবে । সেই সঙ্গে প্রমাণ নষ্ট করার অভিযোগ এনে তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে তৎকালীন কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত করতে হবে । শুধুমাত্র ন্যায়বিচার নয়, সেই ন্যায়বিচার দৃষ্টান্তমূলকও হওয়া প্রয়োজন ।"

মহম্মদ সেলিম: সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক এই নিয়ে বলেন, ‘‘সবাই যে বিচার চাইছিল সেটা সম্পূর্ণ হল না । এই ধরনের ঘটনায় এফআইআর থেকে তদন্ত এবং কলকাতা পুলিশ থেকে সিবিআই যে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা উচিত ছিল, তা হয়নি । কলকাতা পুলিশ তো সঞ্জয় রায়কে কিছুই বলতে দিল না । তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন রয়েছে ।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘এটা সবে শুরু । অনেকে এই মামলা শেষ করে দিতে চাইছিল ৷ কিন্তু এর মধ্যে সঞ্জয় রায়কে এনকাউন্টারে না মেরে দেয় ? 14 তারিখের রাতে যে ভাঙচুর চালানো হল, তাহলে উদ্দেশ্য স্পষ্ট । তাহলে এর সঙ্গে যারা যুক্ত বা যারা এখনও মুক্ত রয়েছে, তাদের কেন তদন্তের আওতায় আনা হল না ? তাই এই তদন্ত অসম্পূর্ণ ৷ এটা নির্যাতিতার মা-বাবাও বলেছেন । তাই সিপিএমের দাবি যে একেবারে নিচ পর্যন্ত তদন্ত করে এই ঘটনার পুরো গোড়ায় যাওয়া হোক ।’’

কুণাল ঘোষ: তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র জানান যে ধর্ষণ এবং খুন একটা পৈচাশিক অপরাধ । এদের সুস্থ সমাজে বেঁচে থাকার কোনও অধিকার নেই । এই কারণেই ফাঁসি চাওয়া হয়েছে ।

তিনি বলেন, ‘‘কিছু মানুষ কেন রহস্য তৈরি করছে ? এই মামলাটা এখনও চলছে । সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটের দরজা এখনও খোলা রয়েছে । সুতরাং এখনই এত রহস্য নিয়ে আলোচনা হবে কেন ? সঞ্জয় রায় দোষী প্রমাণিত হয়েছে, মানে এটা সাব্যস্ত হয়েছে যে কলকাতা পুলিশ সঠিক ব্যক্তিকে সঠিক কারণে সঠিকভাবে গ্রেফতার করেছে ।’’

শাসক দলের এই নেতা আরও বলেন, ‘‘যে তথ্য প্রমাণ কলকাতা পুলিশ সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছিল, তাতে কোনও গলদ বা ভুল-ভ্রান্তি ছিল না । পরবর্তীকালে সিবিআই এর তদন্তেও এই সঞ্জয় রায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে । আদালত যদি এই তথ্যপ্রমাণের সন্তুষ্ট না হতো, তাহলে তো তিনি সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করত না ।’’

অধীররঞ্জন চৌধুরী: কংগ্রেসের এই নেতা জানিয়েছেন যে একজন বিচারক ঠিক করেন কোনও মামলা বিরলতম কি না এবং তার উপরেই নির্ভর করে বিচারক তাঁর রায় দেন । বিচারকের মনে হয়েছে সঞ্জয় রায়কে যাবজ্জীবন দেওয়া উচিত, তাই দিয়েছেন । কলকাতায় হেতাল পারেখের মামলাতেও অভিযুক্ত ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন ।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘তবে আজকের এই রায়তে কোথাও যেন একটা অতৃপ্তি কাজ করছে । যেটা সবাই আশা করেছিল, সেটা হল না । তদন্তের গভীরতা নিয়ে কোথাও যেন একটা অপেশাদারিত্বের ছাপ এবং অদক্ষতা ছাপ । তবে একা সঞ্জয় রায় পুরো ঘটনাটা ঘটায়নি ৷ এর পেছনে আরও মানুষ জড়িত রয়েছে ।’’

শঙ্কর ঘোষ: শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক বলেন, ‘‘প্রাথমিকভাবে বলব অভয়ার পরিবারের মতামত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৷ যাঁরা বিচার চেয়েছেন, তাঁদের বেশিরভাগই মনে করেন ফাঁসির সাজা হওয়া উচিত ছিল ৷ প্রাক্তন সিবিআই অধিকর্তা বলেছিলেন যে পুলিশ এমনভাবে ক্রাইম সিন নষ্ট করেছে যে বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করাই চ্যালেঞ্জ ছিল ৷’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘সেই চ্যালেঞ্জের প্রথম ধাপ হিসেবে একজন অভিযুক্তের সাজা ঘোষণা হয়েছে ৷ শুধু সাজা ঘোষণার মধ্য দিয়ে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় না ৷ অনেক মানুষ মনে করেন সম্পূর্ণভাবে সাজা হয়নি ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন অন্য অভিযুক্তদের আড়াল করলেন, তা এখনও অজানা ৷ অপরাধী বা অপরাধীরা এবং তাদের আড়ালকারীদের যতক্ষণ না আইনের আওতায় আনা হবে, ততক্ষণ না সম্পূর্ণ বিচার হবে ৷’’

কলকাতা, 20 জানুয়ারি: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ-খুনের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ড হয়েছে সঞ্জয় রায়ের ৷ অনেকেই মনে করেছিলেন সঞ্জয়কে হয়তো ফাঁসির সাজা শোনাবে আদালত ৷ কিন্তু শিয়ালদা আদালতের বিচারক অবশ্য এই অপরাধের দায়ে কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন সিভিক ভলান্টিয়ারকে সর্বোচ্চ সাজা দেননি ৷

শনিবার রায় ঘোষণা হয় এই মামলার ৷ তখনই আদালত সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করেছিল ৷ তার পরই বিজেপি-সিপিএমের নেতারা প্রশ্ন করেছিলেন, নেপথ্যে যারা ছিল, তাদের শাস্তি কি হবে না ? তৃণমূল অবশ্য মনে করেছিল যে কলকাতা পুলিশের তদন্তই যে সঠিক পথে এগিয়েছিল, তা আদালতের রায়ে স্পষ্ট হয়েছে ৷

কিন্তু সোমবার সঞ্জয়ের সাজা ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেল ৷ কেউ বললেন ফাঁসি হলে ভালো হতো ৷ কেউ কেউ আদালতের রায় নিয়ে মন্তব্য করতে চাইলেন না ৷ অনেকে আবার সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন ৷

একনজরে দেখে নেওয়া যাক, কে কী মন্তব্য করেছেন-

ফিরহাদ হাকিম: কলকাতার মেয়র এই নিয়ে বলেন, ‘‘অভয়া তার বিচার পায়নি । তার বাবা-মাকে ভুল বোঝানো হয়েছে । রাজ্য সরকারের হাতে তদন্তভার থাকলে ফাঁসি হতো হতো হতো ।’’ এই রায় প্রসঙ্গে নাম না করেই কাঠগড়ায় তোলেন আইনজীবী ও সিপিএম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে । পাশাপশি বিরোধীরা রাজনীতি করতেই হাইকোর্টে সিবিআই তদন্তের আবেদন করেছে বলে এদিন দাবি করেন তিনি ।

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা ফাঁসির দাবি আজও করছি । এটা বিরল থেকে বিরলতম অন্যায় । আমাদের নেত্রী, মুখ্যমন্ত্রী প্রথম দিনেই বলেছেন আমরা ফাঁসি চাই । আজ দোষী তারা, যারা মামলা গুলিয়ে দেওয়ার জন্য হাইকোর্টে গিয়ে সিবিআই করেছিল । তারা হল মূল অপরাধী ।’’

রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজ্যের তদন্তে তিনটি পকসো কেস ফাঁসির অর্ডার হল । অপদার্থ সিবিআই কীভাবে মামলা করল যে ফাঁসির অর্ডার হল না ? কেন রাজ্যের উপর ভরসা করা হল না ? কেন রাজনীতি করতে সিবিআই চাওয়া হল ? রাজ্যকে সুযোগ দিল না, যেখানে তদন্তে সফল হওয়ার নজির আছে । এই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে সেদিন যারা হাইকোর্টে গিয়েছিল ।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি তিন মেয়ের বাবা৷ আমার কষ্ট লাগবে না ?’’ এই রায়ের পর নির্যাতিতার বাবা-মায়ের হতাশা প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, ‘‘কেন গেল ? কার কথায় হাইকোর্টে গেল ? পুলিশকে তদন্তের সুযোগ দিল না । বিরোধীরা বলছিল বৃহত্তর ষড়যন্ত্র । কিসের ষড়যন্ত্র ? একটা অপরাধী ধর্ষণ-খুন করেছে । ফাঁসির সাজা হবে না ! এটা বিরলতম নয় ?’’

অমিত মালব্য: এই নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য ৷ তিনি লেখেন, "আরজি কর ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও 50 হাজার টাকা জরিমানা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী । এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা প্রয়োজন । পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অপরাধীকে আড়াল করা বন্ধ করতে হবে । সেই সঙ্গে প্রমাণ নষ্ট করার অভিযোগ এনে তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে তৎকালীন কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত করতে হবে । শুধুমাত্র ন্যায়বিচার নয়, সেই ন্যায়বিচার দৃষ্টান্তমূলকও হওয়া প্রয়োজন ।"

মহম্মদ সেলিম: সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক এই নিয়ে বলেন, ‘‘সবাই যে বিচার চাইছিল সেটা সম্পূর্ণ হল না । এই ধরনের ঘটনায় এফআইআর থেকে তদন্ত এবং কলকাতা পুলিশ থেকে সিবিআই যে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা উচিত ছিল, তা হয়নি । কলকাতা পুলিশ তো সঞ্জয় রায়কে কিছুই বলতে দিল না । তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন রয়েছে ।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘এটা সবে শুরু । অনেকে এই মামলা শেষ করে দিতে চাইছিল ৷ কিন্তু এর মধ্যে সঞ্জয় রায়কে এনকাউন্টারে না মেরে দেয় ? 14 তারিখের রাতে যে ভাঙচুর চালানো হল, তাহলে উদ্দেশ্য স্পষ্ট । তাহলে এর সঙ্গে যারা যুক্ত বা যারা এখনও মুক্ত রয়েছে, তাদের কেন তদন্তের আওতায় আনা হল না ? তাই এই তদন্ত অসম্পূর্ণ ৷ এটা নির্যাতিতার মা-বাবাও বলেছেন । তাই সিপিএমের দাবি যে একেবারে নিচ পর্যন্ত তদন্ত করে এই ঘটনার পুরো গোড়ায় যাওয়া হোক ।’’

কুণাল ঘোষ: তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র জানান যে ধর্ষণ এবং খুন একটা পৈচাশিক অপরাধ । এদের সুস্থ সমাজে বেঁচে থাকার কোনও অধিকার নেই । এই কারণেই ফাঁসি চাওয়া হয়েছে ।

তিনি বলেন, ‘‘কিছু মানুষ কেন রহস্য তৈরি করছে ? এই মামলাটা এখনও চলছে । সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটের দরজা এখনও খোলা রয়েছে । সুতরাং এখনই এত রহস্য নিয়ে আলোচনা হবে কেন ? সঞ্জয় রায় দোষী প্রমাণিত হয়েছে, মানে এটা সাব্যস্ত হয়েছে যে কলকাতা পুলিশ সঠিক ব্যক্তিকে সঠিক কারণে সঠিকভাবে গ্রেফতার করেছে ।’’

শাসক দলের এই নেতা আরও বলেন, ‘‘যে তথ্য প্রমাণ কলকাতা পুলিশ সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছিল, তাতে কোনও গলদ বা ভুল-ভ্রান্তি ছিল না । পরবর্তীকালে সিবিআই এর তদন্তেও এই সঞ্জয় রায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে । আদালত যদি এই তথ্যপ্রমাণের সন্তুষ্ট না হতো, তাহলে তো তিনি সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করত না ।’’

অধীররঞ্জন চৌধুরী: কংগ্রেসের এই নেতা জানিয়েছেন যে একজন বিচারক ঠিক করেন কোনও মামলা বিরলতম কি না এবং তার উপরেই নির্ভর করে বিচারক তাঁর রায় দেন । বিচারকের মনে হয়েছে সঞ্জয় রায়কে যাবজ্জীবন দেওয়া উচিত, তাই দিয়েছেন । কলকাতায় হেতাল পারেখের মামলাতেও অভিযুক্ত ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন ।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘তবে আজকের এই রায়তে কোথাও যেন একটা অতৃপ্তি কাজ করছে । যেটা সবাই আশা করেছিল, সেটা হল না । তদন্তের গভীরতা নিয়ে কোথাও যেন একটা অপেশাদারিত্বের ছাপ এবং অদক্ষতা ছাপ । তবে একা সঞ্জয় রায় পুরো ঘটনাটা ঘটায়নি ৷ এর পেছনে আরও মানুষ জড়িত রয়েছে ।’’

শঙ্কর ঘোষ: শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক বলেন, ‘‘প্রাথমিকভাবে বলব অভয়ার পরিবারের মতামত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৷ যাঁরা বিচার চেয়েছেন, তাঁদের বেশিরভাগই মনে করেন ফাঁসির সাজা হওয়া উচিত ছিল ৷ প্রাক্তন সিবিআই অধিকর্তা বলেছিলেন যে পুলিশ এমনভাবে ক্রাইম সিন নষ্ট করেছে যে বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করাই চ্যালেঞ্জ ছিল ৷’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘সেই চ্যালেঞ্জের প্রথম ধাপ হিসেবে একজন অভিযুক্তের সাজা ঘোষণা হয়েছে ৷ শুধু সাজা ঘোষণার মধ্য দিয়ে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় না ৷ অনেক মানুষ মনে করেন সম্পূর্ণভাবে সাজা হয়নি ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন অন্য অভিযুক্তদের আড়াল করলেন, তা এখনও অজানা ৷ অপরাধী বা অপরাধীরা এবং তাদের আড়ালকারীদের যতক্ষণ না আইনের আওতায় আনা হবে, ততক্ষণ না সম্পূর্ণ বিচার হবে ৷’’

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.