অশোকনগর, 6 জুন : মাদক পাচারকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বাইক চুরি চক্রের হদিশ পেল পুলিশ । তরল মাদক-সহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছিল অশোকনগর থানার পুলিশ । ধৃতদের জেরা করে আর একটি তথ্য উঠে আসে পুলিশের কাছে । তদন্তে নেমে পুলিশ 10টি মোটরবাইক উদ্ধার করে ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু দিন ধরে অশোকনগর থানা এলাকায় পরপর বাইক চুরির ঘটনা ঘটছিল । থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল । পরপর মোটর বাইক চুরির ঘটনায় সাধারণ মানুষ পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন । গত 1 মে অশোকনগর থানার গুমা চৌমাথা থেকে তরল মাদক কোডেইন-সহ সন্দেহভাজন তিনজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে । ধৃতদের নাম রাজু ঘোষ, কৃষ্ণ পাল ও হেমন্ত বিশ্বাস।
রাজু হাবড়ার অরবিন্দ রোড এলাকায় ভাড়া থাকে । বাকি দু'জনের বাড়ি গুমা নেতাজিনগরে । ধৃতদের হেপাজতে নিয়ে জেরা করে পুলিশ বাইকচোর চক্রের সন্ধান পায় । পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা বাইক চুরির কথা কবুল করেছে । তাদের জেরা করে চুরি যাওয়া 10টি বাইক উদ্ধার করেছে। ওই চক্রের অন্যদের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে ।
এই বিষয়ে রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করেন বারাসত পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "এই চক্রের পান্ডা ধৃত রাজু ঘোষ ওরফে রাজ। সেই মূলত বিভিন্ন জায়গা থেকে বাইক চুরি করত। সেই বাইক পাচারের ক্ষেত্রে রাজুকে সহযোগিতা করত ধৃত তার দুই সহযোগী হেমন্ত বিশ্বাস এবং কৃষ্ণ পাল ।" ধৃত তিন পাচারকারীকে জেরা করে এমনই তথ্য হাতে এসেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
তিনি আরও বলেন,"ধৃত ওই তিনজনের কাছ থেকে ইতিমধ্যে ১২টি চোরাই বাইক উদ্ধার করা হয়েছে। যার মধ্যে অশোকনগর থানা এলাকার 5টি ও হাবরা থানা এলাকার 4 টি বাইক রয়েছে। বাকি ৩টি বাইক কোথা থেকে চুরি করা হয়েছিল, তা ধৃতদের জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে।"
পুলিশ সুপারের কথায়, "শুধু 12 টি বাইক নয়,আরও বাইক চুরির সঙ্গে জড়িত ধৃতরা।এদের জেরা করলে সেই সমস্ত বাইকেরও সন্ধান মিলতে পারে। তাই,আমরা ফের পুলিশি হেপাজতের আবেদন জানাব আদালতের কাছে। যাতে তদন্ত প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় ।"
আন্তঃরাজ্য বাইক চুরি চক্রের যে একেবারে গোড়ায় যেতে চায় জেলা পুলিশ, তা পুলিশ সুপারের কথাতেই স্পষ্ট হয়েছে। এই বিষয়ে তিনি বলেন,"এই চক্রের বাকিদেরও খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা চলছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, এর পিছনে আর কাদের হাত রয়েছে। শিগগিরি তাদেরও আমরা গ্রেপ্তার করতে পারব বলে আশা করছি ।"
অন্যদিকে, পুলিশ সূত্রে জানা গেছে সম্প্রতি অশোকনগরের গুমার চৌমাথায় ওই তিন জনকে 5 লিটার নিষিদ্ধ তরল মাদক সহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তখনও পুলিশ জানত না রাজু ঘোষ ও তার দুই সহযোগী হেমন্ত বিশ্বাস ও কৃষ্ণ পাল আন্তঃরাজ্য বাইক পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত। পরে, ধৃতদের পুলিশ হেপাজতে নিয়ে জেরা করতেই উঠে আসে একের পর এক তথ্য। যার মধ্যে শুধু উত্তর 24 পরগনাই নয়,অন্যান্য জেলা থেকেও বাইক চুরি করে ধৃতরা পাচার করেছে বলে তদন্তে জানা গেছে।