কলকাতা, 27 সেপ্টেম্বর: দল থেকে সাসপেন্ড করা হল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেত্রী রাজন্যা হালদার এবং প্রান্তিক চক্রবর্তীকে । দল বিরোধী কাজের জন্য এদিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই দু'জনকে সাসপেন্ড করার কথা জানিয়ে দেন । কিন্তু কি এমন ঘটল যার জেরে এই সিদ্ধান্ত নিতে হল তৃণমূলকে ?
আরজি কর কাণ্ড নিয়ে এই মুহূর্তে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি । এর মধ্যেই একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি তৈরি করেছেন টিএমসিপি নেতা প্রান্তিক । আর তাঁর বান্ধবী রাজন্যা হালদার তাতে অভিনয় করেছেন । যেহেতু এই বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর সে কারণেই এই স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবিকে অনুমোদন দেয়নি তৃণমূল । এই বিষয়টি নজরে আসার পরেই দলের তরফ থেকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য নেতৃত্বকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে । সেই মতো তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফ থেকে এই বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অত্যন্ত জনপ্রিয় মুখ রাজন্যা হালদার এবং তার বন্ধু প্রান্তিক চক্রবর্তীকে এই স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি তৈরির জন্যই সাসপেন্ড করা হল বলে খবর । প্রান্তিক চক্রবর্তী ছিলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি ৷ রাজন্যা হালদার, তিনি যাদবপুর ডায়মন্ড হারবার সাংগঠনিক জেলার সহ-সভানেত্রী ।
এই শর্ট ফিল্মে দলের অনুমোদন নেই। pic.twitter.com/sog7Het9YE
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) September 27, 2024
আরজি কর নিয়ে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি তৈরির খবর চাউর হতেই তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা কুণাল ঘোষ । টুইট করে জানিয়ে দেন, আরজি কর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে একটি শর্টফিল্মের খবর এসেছে । এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই । আমরা তিলোত্তমার ঘটনার ন্যায়বিচার চাই । এই স্পর্শকাতর বিষয়কে প্রচারে ব্যবহার করার চেষ্টার বিরোধী আমরা । যে কোনও ব্যক্তির স্বাধীনতা আছে সৃষ্টিতে । কিন্তু তদন্তাধীন এই মর্মান্তিক ঘটনাকে দলের সঙ্গে জড়িত কেউ যদি প্রচারে ব্যবহার করে, দল তার দায়িত্ব নেবে না । দল এই বিষয়ে কোনও অনুমতি দেয়নি ৷ দল জানতও না । যে বা যারা এর সঙ্গে জড়িত তা খতিয়ে দেখে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতৃত্বকে বলা হয়েছে ।
কুণাল ঘোষের এই টুইট সামনে আসতেই বোঝা গিয়েছিল, তিলোত্তমাকে নিয়ে তৈরি হওয়া স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবিতে যাই থাকুক না কেন দল এতে অনুমোদন দিচ্ছে না । যেহেতু এদের সঙ্গে দলের নাম জড়িয়ে রয়েছে দলীয় নেতা-নেত্রী হিসেবে তাদের এই ধরনের আচরণকে দল সমর্থন করে না এই বার্তা দিতেই তড়িঘড়ি এদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেওয়া হল । সবচেয়ে বড় কথা এই বিষয়টি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কানে পৌঁছানো অত্যন্ত ক্ষুব্ধ স্বয়ং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । আর সেই জায়গা থেকে পদক্ষেপ গ্রহণের বার্তা আসার পরই তড়িঘড়ি এই দুই নেতা-নেত্রীকে সাসপেন্ড করা হল । মনে করা হচ্ছে দল স্পষ্ট বার্তা দিল এই ঘটনার পিছনে দলের কোনও অনুমোদন নেই । এই বক্তব্য সরাসরি যারা এই স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি তৈরি করেছেন তাদের একান্ত নিজস্ব ।
এদিকে এই পদক্ষেপ গ্রহণের পর এই দুই ছাত্রনেতারই প্রতিক্রিয়া জানার চেষ্টা হয়েছিল । কিন্তু ইটিভি ভারতে তরফ থেকে তাদের কোন প্রতিক্রিয়া প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পাওয়া যায়নি ।