কলকাতা, 27 সেপ্টেম্বর: চলতি আইএসএলে ইস্টবেঙ্গলের হারের হ্যাটট্রিক সম্পূর্ণ। ঘরের মাঠে আইএসএলের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে সবচেয়ে দৃষ্টিকটু ইস্টবেঙ্গলের অসহায় আত্মসমর্পণ। সেই কাজে নেতৃত্ব দিলেন হিজাজি মাহের। জর্ডন জাতীয় দলের ডিফেন্ডার আইএসএলে প্রথম ম্যাচ থেকেই ছন্দহীন। শুক্রবার দলের তিনটি গোল হজমের একমাত্র কারণ হিজাজি মাহের। প্রতিপক্ষের গোলের সময় বাধা দেওয়ার বদলে বোরহার পিছনে হাঁটলেন। দর্শকের ভূমিকা পালন করলেন। 2-3 গোলে পরাজয় এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে।
তিনটি গোল গোয়ার জার্সিতে করলেন বোরহা হেরেরা। লাল-হলুদের প্রাক্তনী চলতি আইএসএলে প্রথম হ্যাটট্রিক করে ফেললেন। ইস্টবেঙ্গলের গোল পেনাল্টি থেকে মাহিদা তালাল এবং পরিবর্ত হিসেবে নামা ডেভিডের। এবার নিয়ে পঞ্চম বারের জন্য আইএসএল খেলছে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। বিগত চার বছরের প্রথম 4 ম্যাচের পরিসংখ্যান নিলে দেখা যাচ্ছে এক অদ্ভুত ব্যাপার ! 2020-21 থেকে 2023-2024 পর্যন্ত প্রতিবছর তারা প্রথম 4 ম্যাচের পর 1 পয়েন্ট করে এগিয়েছে। 2020-21, ইস্টবেঙ্গল 4 ম্যাচের পর পেয়েছিল 1 পয়েন্ট, 21-22-এ 2 পয়েন্ট, 22-23-এ 3 পয়েন্ট আর 23-24 এ 4 পয়েন্ট।
খেলার শেষে স্টেডিয়াম জুড়ে ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতকে গো-ব্যাক ধ্বনিতে বিদ্রুপ করলেন। দলের পরাজয়ে কোচের চাকরি যাওয়া বিশ্বজুড়ে নিয়ম। কিন্তু, ফুটবলারদের অসহায় আত্মসমর্পণে কোচের দর্শক হওয়া ছাড়া কিছু করার থাকে না। অথচ সমস্যার চক্রব্যুহে থাকা দলকে টেনে বের করার জন্য তিনি চেষ্টার কসুর করেননি।
আনোয়ারের সঙ্গে জুড়ে দিলেন হিজাজি মাহেরকে। রাইটব্যাক খেলালেন সৌভিক চক্রবর্তীকে। কিন্তু তাতে সমস্যা মেটার বদলে বাড়ল। 13 মিনিটে প্রথম গোল হজম করে ইস্টবেঙ্গল। নন্দকুমারের পাস সৌভিক নিয়ন্ত্রণে না-নিতে পারায় বল চলে যায় ড্র্যাজিকের পায়ে। তিনি বল নিয়ে ব্যাকসেন্টার করলে তা থাবড়ে বিপদমুকক্ত করার চেষ্টা করেন দেবজিৎ মজুমদার। পিছন থেকে হেলায় গোল করে যান বোরহা হেরেরা। হিজাজি মাহের দর্শক। 20 মিনিটে হিজাজি মাহের পা-থেকে বল কেড়ে নিয়ে তা বরিস সিং বাড়িয়ে দেন বোরহাকে।
স্প্যানিশ মিডফিল্ডার দ্বিতীয় গোল করতে ভুল করেননি। দু'গোলে পিছিয়ে পড়ার পরে খেলায় ফেরার চেষ্টার করে। 28 মিনিটে মাহিদা তালালের গোল সেই চেষ্টার ফসল। এই সময় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ইস্টবেঙ্গলের। বিরতির পরে খেলা একইভাবে শুরু করে লাল-হলুদ। কিন্তু গোলমুখ খুলতে পারছিলেন না। মাঝমাঠে জিকসন, উইংয়ে নন্দকুমার খেলতেই পারলেন না। সওল ক্রেসপো না থাকায় প্রতিপক্ষ এফসি গোয়া যেকোনও আক্রমণ হেলায় লাল-হলুদ পেনাল্টি বক্সে নিয়ে আসছিলেন। সেখানে হিজাজি মাহেরের দর্শকের ভূমিকা ইস্টবেঙ্গলকে সমস্যায় ফেলে দেয়।
তৃতীয় গোল এবং হ্যাটট্রিক সম্পূর্ণ করার সময়ও বোরহাকে নূন্যতম বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেননি। 80 মিনিটে কার্ল ম্যাকহিউ লাল কার্ড দেখায় দশজনে হয়ে যায় গোয়া। দ্বিতীয়ার্ধে পিভি বিষ্ণু, সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় আমন সিকে ডেভিডদের নামিয়ে সমস্যার সমাধান হয়নি । শেষ বাঁশি বাজার পাঁচ মিনিট আগে ব্যবধান কমান ডেভিড। অথচ এফসি গোয়ার দলে শুক্রবার চোটের কারনে কোনও স্ট্রাইকার ছিল না। তাসত্ত্বেও তিন গোল হজম করে হারের হ্যাটট্রিক সম্পূর্ণ ইস্টবেঙ্গলে। কোচের প্রতি লাল-হলুদ সমর্থকরা ধিক্কার জানালেন। ক্লাব কর্তাদের একাংশ বিরক্ত । বিরাট আর্থিক ভার নিতে হবে বলে বিদায় হচ্ছে না কার্লেস কুয়াদ্রাতের। কিন্তু আর কবে প্রশ্ন জোরালো হচ্ছে ।