বারাসত, 9 সেপ্টেম্বর: বাগুইআটির জোড়া খুনকাণ্ড নিয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিতর্কের মাঝেই ফের কাঠগড়ায় পুলিশ ৷ এবার অভিযোগ বারাসত মহিলা থানার পুলিশের বিরুদ্ধে ৷ অভিযোগ, ধর্ষণের মামলা রুজু করতে গিয়ে এক নির্যাতিতা তরুণীকে তাঁর চরিত্র নিয়ে নানা প্রশ্ন শুনতে হয় বারাসত মহিলা থানার ভিতরেই । এমনকি,ধর্ষণের মামলা রুজু করতেও গড়িমসি করার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট থানার এক মহিলা পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে । শেষে, নির্যাতিতা ওই তরুণী পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই নড়েচড়ে বসেন জেলা পুলিশ কর্তারা। তড়িঘড়ি ধর্ষণের মামলা রুজু করে গ্রেফতার করা হয় মূল অভিযুক্ত-সহ মোট সাতজনকে (Barasat Rape Case) ।
পুলিশ সূত্রে খবর, এর পাশাপাশি কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে বারাসত মহিলা থানার ওই পুলিশ আধিকারিককে তাঁর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে । তাঁকে ক্লোজ করা হয়েছে জেলা পুলিশ লাইনে । অভিযুক্ত ওই মহিলা পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে (allegation against Barasat Women Police Station) ।
আরও পড়ুন: মালদায় বাড়িতে ঢুকে সত্তরোর্ধ বৃদ্ধকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন
বারাসত ন'পাড়ার বাসিন্দা বান্টি বিশ্বাস নামে এক যুবকের সঙ্গে বছর দেড়েক আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয় হয় 25 বছর বয়সি ওই তরুণীর । ক্রমে তাঁদের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে ৷ সেই ঘনিষ্ঠতার সূত্রে বান্টির বারাসতের বাড়িতে যাতায়াতও শুরু করেন তরুণী । অভিযোগ, এরপরই তাঁর অজান্তে অশ্লীল ভিডিয়ো তুলে করে তা দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করেন ওই অভিযুক্ত ও তাঁর স্ত্রী ৷ এভাবে ব্ল্যাকমেল করে ওই তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ ৷
এই তরুণীর আরও অভিযোগ, ওই ভিডিয়ো দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে দফায় দফায় লক্ষাধিক টাকা দাবি করেন ওই অভিযুক্ত যুবক ৷ এমনকি তাঁর স্ত্রীও তাতে মদত দেন ৷ এরপরই তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন ৷ গত 12 অগস্ট নির্যাতিতা ওই তরুণী বারাসত মহিলা থানায় যান অভিযোগ দায়ের করতে । তরুণী জানিয়েছেন, সেই সময় এক মহিলা পুলিশ আধিকারিক তাঁর অভিযোগ নিতে চাননি বলে অভিযোগ । শেষে,অভিযোগ দায়ের হলেও ধর্ষণের মামলা রুজু করতে গড়িমসি করে বারাসত মহিলা থানার পুলিশ (allegation against Barasat Women Police Station of not taking rape complain)।
আরও পড়ুন: সত্যেন্দ্রকে আদালতে পেশ, হেফাজতে নিয়ে বাগুইআটি জোড়া খুনের কিনারা করতে চায় পুলিশ
মহিলা থানা থেকে কোনও সাহায্য না পেয়ে একপ্রকার নিরুপায় হয়ে বারাসত জেলার পুলিশ সুপারের কাছে বিষয়টি লিখিত আকারে জানান নির্যাতিতা ওই তরুণী । এরপরই পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে বৃহস্পতিবার ধর্ষণের মামলা রুজু হয় বারাসত মহিলা থানায় । ধর্ষণের মামলা রুজু হওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে বারাসত ও তার আশপাশের বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ মূল অভিযুক্ত বান্টি ও তাঁর স্ত্রী-সহ মোট সাতজনকে গ্রেফতার করে ৷ ধৃতদের মধ্যে দু'জন মহিলা এবং পাঁচজন পুরুষ রয়েছে ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, হুমকি, ব্ল্যাকমেল-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে । নির্যাতিতা তরুণীর মেডিক্যাল টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে । যদিও,শুক্রবার আদালতে পেশ করার আগে ধৃতদের অনেকেই বারাসত থানায় দাঁড়িয়ে গোটা ঘটনা অস্বীকার করে ফাঁসানোর অভিযোগ করেছে ওই তরুণীর বিরুদ্ধে ।