আসানসোল, 24 ফেব্রুয়ারি: পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান থেকে 9 পর্যটক গুজরাতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন। ঘটনায় 5 জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা প্রত্যেকেই নিকট আত্মীয়। তাঁদের মধ্যে আসানসোলের এক মহিলা রয়েছেন। তাঁর নাম শুক্লা চট্টোপাধ্যায় (56)। স্বামী মানবেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় গুজরাতের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি।
অন্যদিকে, অভিযোগ মা-সহ অন্য আত্মীয়দের দেহ আনতে গিয়ে অথৈ জলে পড়েছেন শুক্লার ছেলে আবির্ভাব চট্টোপাধ্যায়। দেহগুলির জন্য সামান্য বরফটুকু পাননি তিনি। এমনকী নানাভাবে তাঁকে পর্যুদস্ত করা হচ্ছে । ফোন করে তাঁর কাছে অহেতুক টাকা চাওয়া হচ্ছে ৷
উল্লেখ্য, 9 জনের একটি পর্যটক দল গুজরাতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। এঁরা সকলেই পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের বাসিন্দা। গত 16 ফেব্রুয়ারি আসানসোল থেকে ট্রেন ধরে তাঁরা রওনা দেন। আগামী বুধবার তাঁদের ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু, রবিবার গুজরাতের গির জঙ্গল থেকে ফেরার সময় আমেদাবাদ-গুজরাত জাতীয় সড়কে সুরেন্দ্রনগর থানা এলাকায় একটি ডাম্পারের পিছনে ধাক্কা মারে পর্যটকদের গাড়ি।

এই ঘটনায় চালক-সহ 6 জনের মৃত্যু হয়। বাকি 5 জনই বাঙালি পর্যটক। তাঁর মধ্যে রয়েছেন আসানসোলের গৃহবধূ শুক্লা চট্টোপাধ্যায় (56)। তাঁর স্বামী অবসরপ্রাপ্ত ইসিএল আধিকারিক মানবেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় গুজরাতের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। জানা গিয়েছে, মানবেন্দ্র ও শুক্লার দুই ছেলে। এক ছেলে অভিষেক চট্টোপাধ্যায় আমেরিকায় কর্মরত। আরেক ছেলে আবির্ভাব চট্টোপাধ্যায় কলকাতায় থাকেন। দুর্ঘটনার খবর শুনেই তড়িঘড়ি পৌঁছেছেন গুজরাতের সুরেন্দ্রনগরে। কিন্তু, সেখানে গিয়ে 5টি মৃতদেহ নিয়ে অথৈ জলে পড়েছেন মৃতার ছেলে আবির্ভাব।

এক আত্মীয়ের ফোন থেকে আবির্ভাব চট্টোপাধ্যায় ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে বলেন, "কোনও সহায়তা পাচ্ছি না। এমনকী দেহগুলি রাখার জন্য বরফও পাচ্ছি না। কী করব কিছুই মাথায় আসছে না। অন্যদিকে, থানার নাম করে আমার কাছে থ্রেট কল আসছে ও 40 লক্ষ টাকা চাওয়া হচ্ছে।"
পরিবারের লোকজনের আশঙ্কা ডিজিটাল অ্যারেস্টের মতো বিষয়কে সামনে রেখে এই খারাপ সময়ে প্রতারণা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে আসানসোলে পুলিশকে পুরো বিষয়টি জানিয়েছেন পরিবার। মানবেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ভাই মলয় চট্টোপাধ্যায় জানান, আমার ভাইপো ওখানে একা অথৈ জলে পড়েছে। পাঁচটি মৃতদেহ কীভাবে সে নিয়ে আসবে তা বুঝতে পারছি না। এমনকী সামান্য বরফটুকুও তাকে দেওয়া হয়নি। শুধু তাই নয়, তার কাছে হুমকি দেওয়া ফোন যাচ্ছে। টাকা চাওয়া হচ্ছে।