এগরা, 16 মার্চ: একই সঙ্গে সম্পর্ক ছিল দু'জনের সঙ্গে ৷ কিন্তু জীবনসঙ্গিনী হিসেবে বেছে নিতে চেয়েছিল দ্বিতীয়জনকে৷ কিন্তু বাধ সাধে তার পরিবার ৷ শর্ত দেয়, মেয়েকে বিয়ে করতে গেলে অপর প্রেমিকাকে মেরে ফেলতে হবে ৷ শুধু মেরে ফেললেই হবে না, মৃতদেহ দেখিয়ে দিতে হবে প্রমাণও ৷ প্রস্তাব মেনেও নেয় প্রেমিক সৌরভ দে (28)৷ প্রথমে প্রেমিকা অনিতা দাসকে খুন করে ৷ এরপর সেই মৃতদেহ দেখানোর জন্য অপর প্রেমিকা মৌমিতা সির বাড়িও নিয়ে আসে ৷ তারপর দেহ এলাকার একটি পরিত্যক্ত জমিতে ফেলে দেয় ৷ এগরায় ট্রলি ব্যাগ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় মহিলার মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তদন্তে নেমে এই তথ্যই জানতে পেরেছে পুলিশ । এই ঘটনায় সৌরভসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৷
এগরার ছত্রি এলাকার বাসিন্দা মৌমিতাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল সৌরভ ৷ কিন্তু মৌমিতা ও তার পরিবারের দাবি ছিল, অপর প্রেমিকা অনিতাকে মেরে ফেলতে হবে ৷ সেই মতো 8 মার্চ দমদমের বেদিয়াপাড়া নতুন বাজারে সৌরভ নিজের ভাড়াবাড়িতে প্রথমে অনিতাকে ডাকে । অনিতা এলেই সঙ্গীদের নিয়ে নৃশংসভাবে তাকে খুন করে সৌরভ ৷ এরপর মৃতদেহ ট্রলি ব্যাগে ভরে গাড়ি ভাড়া করে এগরায় মৌমিতাদের বাড়ি নিয়ে যায় ৷ মৌমিতার বাবাকে মৃতদেহটি দেখানো হয়ে গেলে রিকশা করে এলাকারই একটি শিবমন্দিরের পাশের পরিত্যক্ত জমিতে ফেলে দিয়ে আসে ৷ পর দিন ওই ট্রলি ব্যাগ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ৷ তদন্তে নেমে পুলিশ পুরো ঘটনার কথা জানতে পারে ৷ ঘটনায় সৌরভ, মৌমিতা, মৌমিতার বাবা নারায়ণ সি ও রিকশাচালক রমাকান্ত দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৷
পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, "এগরার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । এই ঘটনার সঙ্গে আর কারা জড়িত তা জানতে অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ৷" অপরদিকে অনিতার স্বামী সোমনাথ দাস বলেন, "আমার স্ত্রী অনিতাকে সৌরভ বারবার বিরক্ত করত ৷ এই মর্মে আমি থানায় অভিযোগও জানিয়েছি । পরিবারে অশান্তির কারণে প্রায় আড়াই বছর ধরে অনিতা ওর বাপের বাড়ি বামনগাছিতেই ছিল ৷ কিন্তু আমার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল । এগরা পুলিশের থেকে জানতে পারি যে অনিতার মৃতদেহ পাওয়া গেছে । আমি তড়িঘড়ি থানায় যোগাযোগ করি । আমি চাই অনিতাকে যারা খুন করেছে তাদের অবিলম্বে শাস্তি হোক ।"