ETV Bharat / state

ইদে BJP-র দেওয়া ত্রাণ নেওয়ার অপরাধে নন্দীগ্রামে এলাকাবাসীদের মারধরের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে

গতকাল ইদ উপলক্ষ্যে নন্দীগ্রাম দুই নম্বর ব্লকের আমদাবাদ এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব পল্লিতে কয়েকজন সংখ্যালঘু মানুষের হাতে ত্রাণ সামগ্রী তুলে দিয়েছিল BJP ৷ অভিযোগ , আজ সকাল হতেই BJP-র কাছ থেকে ত্রাণ নেওয়ার অপরাধে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা তাণ্ডব চালায় এলাকায় । লাঠি , রড ও বাঁশের আঘাতে ইতিমধ্যেই 11 জন এলাকাবাসী জখম হয়েছেন ৷

Trinamool accused of beating locals in Nandigram for taking relief from BJP
author img

By

Published : May 26, 2020, 4:52 PM IST

নন্দীগ্রাম , 26 মে : একদিকে কোরোনার জেরে লকডাউন , অন্যদিকে আমফান ৷ খাদ্য সংকটের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন নন্দীগ্রাম দুই নম্বর ব্লকের আমদাবাদ এলাকার বাসিন্দারা । তাঁদের দুঃখ কিছুটা লাঘব করতে ইদ উপলক্ষে গতকাল এলাকার সংখ্যালঘু মানুষদের জন্য কিছু খাদ্য সামগ্রী বিলি করা হয় BJP-র পক্ষ থেকে । খাদ্য সংকটে থাকা মানুষগুলি রাজনীতির কথা না ভেবেই পেটের ক্ষুধা নিবৃত্তির আশায় সেই ত্রাণ নিয়ে খুশি মনে বাড়ি ফিরেছিল । আর সেটাই তাঁদের কাছে কাল হয়ে দাঁড়াল ৷ অভিযোগ , ইদের পরের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার সকাল হতেই BJP-র কাছ থেকে ত্রাণ নেওয়ার অপরাধে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা তাণ্ডব চালালো এলাকায় । লাঠি , রড ও বাঁশের আঘাতে ইতিমধ্যেই জখম হয়ে এলাকার 11 জন বাসিন্দা নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়া গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে , নন্দীগ্রাম দুই নম্বর ব্লকের আমদাবাদ এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব পল্লিতে প্রায় দেড়শো সংখ্যালঘু পরিবারের বাস । এলাকার শ্রমজীবী মানুষগুলি লকডাউনের কারণে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে কাজ করতে পারেনি দীর্ঘদিন ধরে । তার উপর আমফান তছনছ করে দিয়ে গিয়েছে তাঁদের বাড়িঘর । ফলে বেঁচে থাকার লড়াইটা ধীরে ধীরে কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে । খুশির ইদে আনন্দ তো দূরের কথা ক্ষুধা নিবারণের জন্য বাড়িতে নেই সামান্য খাবারটুকুও । বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের তরফে ত্রাণ সামগ্রী বিলি করা হলেও ওই এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ তাঁরা কিছুই পায়নি । সেইকারণে গতকাল বিকেল নাগাদ BJP-র পক্ষ থেকে তাঁদের বাড়িতে চাল,ডাল-সহ বেশ কিছু সবজি পৌঁছে দেওয়া হয় । ক্ষুধার জ্বালায় একসময়ে ভূমি আন্দোলনে গর্জে ওঠা নন্দীগ্রামের বাসিন্দারা রাজনীতি ভুলে গিয়ে পেটের তাগিদে গ্রহণ করেছিল BJP-র দেওয়া সেই ত্রাণ । সেটাই যেন নন্দীগ্রামের বাসীদের অপরাধ ! অভিযোগ সকাল হতেই স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মীরা এলাকায় জড়ো হয়ে হুমকি দিতে শুরু করে । কিন্তু তৃণমূল কেন এলাকায় এখনও ত্রাণ পৌঁছে দিল না ? এই প্রশ্ন তুলে গ্রামবাসীরাও বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে নেতাকর্মীদের ঘিরে । অভিযোগ , তখনই উত্তেজিত হয়ে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা কর্মীরা গ্রামবাসীদের মারধর করে । রড ,লাঠি ও বাঁশের আঘাতে জখম হন 11 জন সংখ্যালঘু এলাকাবাসী । পরে ঘটনার খবর পেয়ে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা আহতদের উদ্ধার করে রেয়াপাড়া গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য ভরতি করেন । বর্তমানে তাঁরা সেখানেই চিকিৎসাধীন । যদিও তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।

ঘটনায় জখম স্থানীয় বাসিন্দা শেখ আজিজ অভিযোগ করে বলেন , “তৃণমূলের তরফে বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় চাল , ডাল , ছোলা ও চিনি বিতরণ করা হয়েছিল । কিন্তু আমাদের এলাকার বাসিন্দারা তার ছিটেফোঁটাও পায়নি । যে কারণে গতকাল BJP-র দেওয়া ত্রাণ খিদের জ্বালায় আমরা গ্রহণ করি । সেই অপরাধে সকালবেলা তৃণমূলের একদল নেতাকর্মী এসে আমাদের বাড়ি এসে মারধর করে যায় । আমার ছেলে ও নাতির মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে ৷ আমিও জখম হয়েছি । BJP-র কাছ থেকে ত্রাণ পেয়েছি ৷ তাই আমরা BJP হয়ে গেছি ৷ এই অভিযোগ তুলে আমাদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় । ওরা পিস্তল ও ছুরি বের করে আমাদের ভয় দেখানোয় আমরা পিছু হটতে বাধ্য হই ।”

এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি প্রলয় পাল অভিযোগ করে বলেন , “ইদের দিনে সংখ্যালঘু মানুষগুলি খুব কষ্টে রয়েছে । এটা ভেবেই গতকাল দলীয় ভাবে 50 জন সংখ্যালঘু ভাই-বোনদের হাতে আমরা কিছু চাল , ডাল ও সবজি তুলে দিয়েছিলাম । BJP-র পক্ষ থেকে দেওয়া ত্রাণ সামগ্রী গ্রহণ করার অপরাধে সকালবেলাই তাঁদের ব্যাপক মারধর করে তৃণমূলের গুণ্ডাবাহিনী । 11 জন জখম বাসিন্দাকে আমরা হাসপাতালে ভরতি করেছি । দুষ্কৃতীদের চরম শাস্তি ও গ্রেপ্তারেের দাবিতে আমরা নন্দীগ্রাম থানায় অভিযোগ জানাব ।”

যদিও তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নন্দীগ্রাম বিধানসভা কমিটির চেয়ারম্যান মেঘনাথ পাল ৷ তিনি বলেন , “নন্দীগ্রামে BJP বলে কোনও বস্তু নেই । তৃণমূলের তরফ থেকেই এলাকার সমস্ত বাসিন্দাদের ত্রাণ সামগ্রী তুলে দিচ্ছেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী । সে সময় কোনও দলীয় ব্যানার ব্যবহার করা হচ্ছে না ৷ মানবিকতার খাতিরে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ত্রাণ সামগ্রী বণ্টন করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত । BJP-ও যদি ব্যানার ছাড়া সাধারণ মানুষের সাহায্যে দাঁড়ায় তাতে আমাদের কোনও অসুবিধা নেই । BJP-র কাছ থেকে ত্রাণ নেওয়ার কারণে এলাকাবাসীকে মারধর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ । কেবলমাত্র রাজনীতি করার জন্যই এই অভিযোগ করা হচ্ছে ।"

নন্দীগ্রাম , 26 মে : একদিকে কোরোনার জেরে লকডাউন , অন্যদিকে আমফান ৷ খাদ্য সংকটের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন নন্দীগ্রাম দুই নম্বর ব্লকের আমদাবাদ এলাকার বাসিন্দারা । তাঁদের দুঃখ কিছুটা লাঘব করতে ইদ উপলক্ষে গতকাল এলাকার সংখ্যালঘু মানুষদের জন্য কিছু খাদ্য সামগ্রী বিলি করা হয় BJP-র পক্ষ থেকে । খাদ্য সংকটে থাকা মানুষগুলি রাজনীতির কথা না ভেবেই পেটের ক্ষুধা নিবৃত্তির আশায় সেই ত্রাণ নিয়ে খুশি মনে বাড়ি ফিরেছিল । আর সেটাই তাঁদের কাছে কাল হয়ে দাঁড়াল ৷ অভিযোগ , ইদের পরের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার সকাল হতেই BJP-র কাছ থেকে ত্রাণ নেওয়ার অপরাধে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা তাণ্ডব চালালো এলাকায় । লাঠি , রড ও বাঁশের আঘাতে ইতিমধ্যেই জখম হয়ে এলাকার 11 জন বাসিন্দা নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়া গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে , নন্দীগ্রাম দুই নম্বর ব্লকের আমদাবাদ এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব পল্লিতে প্রায় দেড়শো সংখ্যালঘু পরিবারের বাস । এলাকার শ্রমজীবী মানুষগুলি লকডাউনের কারণে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে কাজ করতে পারেনি দীর্ঘদিন ধরে । তার উপর আমফান তছনছ করে দিয়ে গিয়েছে তাঁদের বাড়িঘর । ফলে বেঁচে থাকার লড়াইটা ধীরে ধীরে কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে । খুশির ইদে আনন্দ তো দূরের কথা ক্ষুধা নিবারণের জন্য বাড়িতে নেই সামান্য খাবারটুকুও । বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের তরফে ত্রাণ সামগ্রী বিলি করা হলেও ওই এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ তাঁরা কিছুই পায়নি । সেইকারণে গতকাল বিকেল নাগাদ BJP-র পক্ষ থেকে তাঁদের বাড়িতে চাল,ডাল-সহ বেশ কিছু সবজি পৌঁছে দেওয়া হয় । ক্ষুধার জ্বালায় একসময়ে ভূমি আন্দোলনে গর্জে ওঠা নন্দীগ্রামের বাসিন্দারা রাজনীতি ভুলে গিয়ে পেটের তাগিদে গ্রহণ করেছিল BJP-র দেওয়া সেই ত্রাণ । সেটাই যেন নন্দীগ্রামের বাসীদের অপরাধ ! অভিযোগ সকাল হতেই স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মীরা এলাকায় জড়ো হয়ে হুমকি দিতে শুরু করে । কিন্তু তৃণমূল কেন এলাকায় এখনও ত্রাণ পৌঁছে দিল না ? এই প্রশ্ন তুলে গ্রামবাসীরাও বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে নেতাকর্মীদের ঘিরে । অভিযোগ , তখনই উত্তেজিত হয়ে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা কর্মীরা গ্রামবাসীদের মারধর করে । রড ,লাঠি ও বাঁশের আঘাতে জখম হন 11 জন সংখ্যালঘু এলাকাবাসী । পরে ঘটনার খবর পেয়ে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা আহতদের উদ্ধার করে রেয়াপাড়া গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য ভরতি করেন । বর্তমানে তাঁরা সেখানেই চিকিৎসাধীন । যদিও তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।

ঘটনায় জখম স্থানীয় বাসিন্দা শেখ আজিজ অভিযোগ করে বলেন , “তৃণমূলের তরফে বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় চাল , ডাল , ছোলা ও চিনি বিতরণ করা হয়েছিল । কিন্তু আমাদের এলাকার বাসিন্দারা তার ছিটেফোঁটাও পায়নি । যে কারণে গতকাল BJP-র দেওয়া ত্রাণ খিদের জ্বালায় আমরা গ্রহণ করি । সেই অপরাধে সকালবেলা তৃণমূলের একদল নেতাকর্মী এসে আমাদের বাড়ি এসে মারধর করে যায় । আমার ছেলে ও নাতির মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে ৷ আমিও জখম হয়েছি । BJP-র কাছ থেকে ত্রাণ পেয়েছি ৷ তাই আমরা BJP হয়ে গেছি ৷ এই অভিযোগ তুলে আমাদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় । ওরা পিস্তল ও ছুরি বের করে আমাদের ভয় দেখানোয় আমরা পিছু হটতে বাধ্য হই ।”

এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি প্রলয় পাল অভিযোগ করে বলেন , “ইদের দিনে সংখ্যালঘু মানুষগুলি খুব কষ্টে রয়েছে । এটা ভেবেই গতকাল দলীয় ভাবে 50 জন সংখ্যালঘু ভাই-বোনদের হাতে আমরা কিছু চাল , ডাল ও সবজি তুলে দিয়েছিলাম । BJP-র পক্ষ থেকে দেওয়া ত্রাণ সামগ্রী গ্রহণ করার অপরাধে সকালবেলাই তাঁদের ব্যাপক মারধর করে তৃণমূলের গুণ্ডাবাহিনী । 11 জন জখম বাসিন্দাকে আমরা হাসপাতালে ভরতি করেছি । দুষ্কৃতীদের চরম শাস্তি ও গ্রেপ্তারেের দাবিতে আমরা নন্দীগ্রাম থানায় অভিযোগ জানাব ।”

যদিও তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নন্দীগ্রাম বিধানসভা কমিটির চেয়ারম্যান মেঘনাথ পাল ৷ তিনি বলেন , “নন্দীগ্রামে BJP বলে কোনও বস্তু নেই । তৃণমূলের তরফ থেকেই এলাকার সমস্ত বাসিন্দাদের ত্রাণ সামগ্রী তুলে দিচ্ছেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী । সে সময় কোনও দলীয় ব্যানার ব্যবহার করা হচ্ছে না ৷ মানবিকতার খাতিরে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ত্রাণ সামগ্রী বণ্টন করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত । BJP-ও যদি ব্যানার ছাড়া সাধারণ মানুষের সাহায্যে দাঁড়ায় তাতে আমাদের কোনও অসুবিধা নেই । BJP-র কাছ থেকে ত্রাণ নেওয়ার কারণে এলাকাবাসীকে মারধর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ । কেবলমাত্র রাজনীতি করার জন্যই এই অভিযোগ করা হচ্ছে ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.