কাঁথি, 31 ডিসেম্বর : এতদিন লড়াই ছিল শুভেন্দু অধিকারী ও তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে। এবার সেই লড়াইয়ে নতুন মাত্রা যোগ করলেন সৌমেন্দু অধিকারী। তিনি সরাসরি নেমে পড়লেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। মামলা করলেন কলকাতা হাইকোর্টে । তাঁকে কাঁথি পৌরসভার প্রশাসক পদ থেকে সরানো নিয়েই এই মামলা করা হয়েছে। আগামী সোমবার মামলার শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের লড়াই চলছিল গত জুলাই মাস থেকে। দলে থেকেও কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে চলছিলেন শুভেন্দু। শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিত্ব, অন্যান্য সরকারি পদ, বিধায়ক পদ এবং দলের সদস্যপদ ছেড়ে তিনি বিজেপিতে যোগদান করেন। আর তার পর থেকে প্রায় প্রতিদিন নানাভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের সমালোচনা করছেন তিনি। তবে তিনি দল ছাড়লেও তাঁর বাবা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী এখনও তৃণমূল কংগ্রেসের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সভাপতি। শুভেন্দুর আরেক ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী তমলুকের তৃণমূল সাংসদ। আর সৌমেন্দু কাঁথি পৌরসভায় তৃণমূল পরিচালিত বোর্ডের প্রধান ছিলেন। তার পরে তাঁকে পৌর প্রশাসক করা হয়।
কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর আচমকাই 29 ডিসেম্বর সৌমেন্দুকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। শুভেন্দুর বিজেপিতে যোগদানের সঙ্গে এই ঘটনার যোগসূত্র খুঁজে বের করা হচ্ছিল বিভিন্ন মহল থেকে। শুভেন্দু যদিও কোনও মন্তব্য এখনও করেননি। তবে দিব্যেন্দু অধিকারী এই নিয়ে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন। তার মধ্যেই সৌমেন্দুর তরফে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করা হল। আর সেখানে মূল বিষয় হিসেবে রাখা হয়েছে, কেন তাঁকে অপসারণ করা হল ? তাঁর অপসারণ কি আইন সঙ্গত ?
আরও পড়ুন: কালই কি বিজেপিতে সৌমেন্দু ?
মেয়াদ উত্তীর্ণ পৌরসভাগুলিতে রাজ্য সরকারই প্রশাসক নিয়োগ করেছে। মূলত বিদায়ী পৌরপ্রধানদেরই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেইমতো সৌমেন্দুই দায়িত্ব পেয়েছিলেন। প্রশাসনের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার চাইলে প্রশাসকমণ্ডলীতে বদল ঘটাতে পারেন। আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "কোনও পৌর প্রশাসককে তাঁর পদ থেকে সরকারি নির্দেশে সরানো যেতেই পারে। কিন্তু সেই পদ্ধতি আইন সঙ্গত কি না সেটা দেখা দরকার। এটাই আদালতের সামনে তুলে ধরা হবে। এই অপসারণ কি সত্যিই আইনসঙ্গত নাকি এটা রাজনৈতিক কারণে করা হল মূলত এই প্রশ্ন তুলে মামলা দায়ের করা হয়েছে।"