কালনা, 31 মার্চ : মেয়ে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত । দরকার 'O' নেগেটিভ রক্তের । প্রতি মাসে কালনা মহকুমা হাসপাতাল থেকে মেয়ের জন্য রক্ত পাওয়া গেলেও লকডাউন পর্ব শুরু হওয়ায় কালনা মহকুমা হাসপাতালে 'O' নেগেটিভ রক্তের যোগান নেই । শুধু কালনা হাসপাতালে নয় , আশেপাশের কিছু ব্লাড ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও 'O' নেগেটিভ রক্তের সন্ধান পাওয়া যায়নি । ফলে মেয়েকে নিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন কানন মিস্ত্রি । কোনও দিশা না পেয়ে একটা সোশাল মিডিয়া গ্রুপে বিষয়টি জানালে তারা নিজেরা রক্ত দিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর জীবন বাঁচায় ।
পূর্ব বর্ধমানের কালনার বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা মিস্ত্রি । এ বছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী তিনি । থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ছাত্রীকে প্রতিমাসে রক্ত দিতে হয় । কিন্তু লকডাউন পর্ব শুরু হওয়ায় কালনা মহকুমা হাসপাতালে 'O' নেগেটিভ রক্তের জোগান নেই । ফলে তাঁরা বাধ্য হয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নদিয়ার প্রতাপ নগর হাসপাতালে যোগাযোগ করেছিলেন রক্তের জন্য । কিন্তু রক্ত মেলেনি । রক্ত না মেলায় ওই মেয়েটির হাত-পা-মুখ ক্রমশ ফুলতে শুরু করেছিল । এদিকে রক্ত না পেয়ে ওই ছাত্রীর মা একটি সোশাল মিডিয়ার গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করেন । ওই গ্রুপের সদস্য শুভঙ্কর সাহা উদ্যোগ নিয়ে একজন ডোনার জোগাড় করেন । বিপুল বসাক নামে ওই দাতা রক্ত দিয়ে প্রাণ বাঁচান ।
প্রিয়াঙ্কার মা কানন মিস্ত্রি বলেন, "মেয়ে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত । রক্ত না পেয়ে হাত মুখ ফুলতে শুরু করেছে । মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছে ।ফলে মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে । পাঁচ-সাত দিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেও রক্ত না মেলায় সমস্যায় পড়েছি । লকডাউনের জন্য সমস্ত ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্প বাতিল করা হয়েছে । শুভঙ্কর সাহা নামে এক দাদার সঙ্গে যোগাযোগ হওয়ায় তিনি 'ও' নেগেটিভ রক্তের ব্যবস্থা করে দেয় ।"
প্রিয়াঙ্কা বলেন, "লকডাউনের কারণে রক্তদান শিবির না হওয়ায় রক্ত পাওয়া যাচ্ছে না । রক্ত না পেয়ে আমি খুব সমস্যায় পড়েছি । শরীর খুব অসুস্থ । আমি সারাক্ষণ শুয়ে থাকি । শরীর সমস্ত অংশে ফুলে উঠেছে । ফলে সব খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করতে হয়েছে । এক দাদা রক্তের ব্যবস্থা করে দেওয়ায় রক্ষা পেয়েছি ।"