বর্ধমান, 18 মার্চ: রেলের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi) ও সাংসদের নামে স্লোগান দেওয়া হল । যা নিয়ে তৈরি হল বিতর্ক ৷ প্রশ্ন উঠল, রেলের অনুষ্ঠানে কেন এই ধরনের স্লোগান দেওয়া হবে ৷ শনিবার বর্ধমান স্টেশনে বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি (BJP) সাংসদ এস এস আলুওলিয়া 8 নম্বর প্ল্যাটফর্মের চলমান সিঁড়ি ও ছ’টি ভিডিয়ো ওয়ালের সূচনা করেন । সেই অনুষ্ঠানে বিজেপির কর্মী সমর্থকেরা প্রধানমন্ত্রী ও সাংসদের নামে জয়ধ্বনি দিয়ে স্লোগান দেন ।
অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে যাত্রী সুবিধার জন্য চলন্ত সিঁড়ির উদ্বোধন করে সাংসদ বলেন, ‘‘আমি আমার 33 বছরের সাংসদ জীবনে এই ভুল করিনি যে আমি সাংসদ আর সেই এলাকার যিনি বিধায়ক আছেন, তাঁদের আমন্ত্রণ জানাতে ভুলি না । তবুও দেখলাম বিধায়কেরা এলেন না । থাকলে আমরা একসঙ্গেই ফিতে কাটতাম ।’’ এরপরেই সেই অনুষ্ঠানে নরেন্দ্র মোদি ও আলুওলিয়ার নামে স্লোগান দেওয়া হয় ।
পরে সাংবাদিকদের সামনে বিজেপি সাংসদ এস এস আলুওলিয়া বলেন, ‘‘আমি সকলকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই । অনুষ্ঠানে দু’জন তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) বিধায়ককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল । তাঁরা কেউ আসেননি । আমি ব্যক্তিগতভাবে দুই বিধায়কের সঙ্গে কথা বলব ।’’
সরকারি অনুষ্ঠানে কীভাবে বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা রাজনৈতিক স্লোগান দিলেন প্রশ্নে আলুওলিয়া বলেন, ‘‘এখানে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের মধ্যে কেউ তো আমাকে কালো পতাকাও দেখাতে পারতেন । তবে আমরা কোনও অনুষ্ঠানে গেলে যেকোনও ঘটনার জন্য প্রস্তুত থাকি । কারণ, আমরা জানি কোনও কাজ করলে কেউ হয়তো ভালো বলবে, আবার কেউ কেউ তা নিয়ে সমালোচনা করবে ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘কারও স্বার্থে ঘা লাগলে তারা এইসব করে থাকে । তবে আমি মনে করি এটা যেহেতু সরকারি অনুষ্ঠান তাই এখানে রাজনৈতিক স্লোগান দেওয়া উচিত নয় । তবে কেউ যদি প্রধানমন্ত্রীর নামে স্লোগান দেন, তাতে বিতর্ক হওয়ার কি আছে ? কারণ, রেলমন্ত্রক তো প্রধানমন্ত্রীর অধীনেই আছে । কারণ, সমস্ত সরকারি দফতরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি থাকে ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘একটা সরকারি প্রটোকল আছে যে সরকারি কোনও অনুষ্ঠান তা কেন্দ্র কিংবা রাজ্য সরকারের হোক না কেন সেখানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে যথাযোগ্য সম্মান দিতে হবে । এমনকি যে ফলক থাকবে সেখানেও প্রত্যেকের নাম থাকবে । অথচ সেই নিয়ম অনেকেই পালন করে না । শিলিগুড়ি গেলে দেখা যাবে ওখানে পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র আছে । সেখানে যে সাতজন বিধায়ক ছিলেন, তাঁদের নাম লেখা আছে । সেই তালিকায় আছেন তৎকালীন সিপিএমের বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্যের নামও । আছে কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়কের নামও ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকলেও সকলেরই ঘর সংসার আছে । তাই সামাজিক ভাবে কাউকে বয়কট করে বিরোধিতা করা উচিত নয় । তাই আমি তৃণমূল কংগ্রেসের দুই বিধায়কের সঙ্গে কথা বলব ।’’
আরও পড়ুন: সাঁইবাড়ি হত্যাকাণ্ডের কথা কি শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্বার্থেই, উঠছে প্রশ্ন