মন্তেশ্বর (পূর্ব বর্ধমান), 30 সেপ্টেম্বর: মন্তেশ্বরের তৃণমূল ব্লক সভাপতি পদে আজিজুল রহমানকে বসানো নিয়ে এ বার দলের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী (Siddiqullah Chowdhury) ৷ অভিযোগ করলেন, তাঁর মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে, ইচ্ছে মতো অন্য একজনকে ব্লক সভাপতি পদে বসানো হয়েছে (Manteswar Block President Selection) ৷ যা নিয়ে সিদ্দিকুল্লার অভিযোগ, তৃণমূল তাঁর মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে, তাঁকে অপমান করছে (Siddiqullah on TMC) ৷ মক্কা থেকে এক ভিডিয়ো বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, ব্লক সভাপতি হিসাবে যাঁর নাম দিয়েছিলেন, সেই আহমেদ হোসেন শেখকে মন্তেশ্বরের ব্লক সভাপতি করা হয়নি ৷ আর এর ফলে পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি ও সিপিএম এর অনেক সুবিধা হয়ে যাবে বলেও দাবি করেছেন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী ৷
মক্কা থেকে ওই ভিডিয়ো বার্তায় সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, ‘‘মন্তেশ্বর ব্লকের যুব তৃণমূলের নেতা আহমেদ হোসেন শেখের নাম দিয়েছিলাম ৷ প্রতিটি গ্রামের বুথ লেভেলে তাঁর কর্মী আছে ৷ গ্রামে যাতে মারামারি না হয় তাই গত 15-16 মাস ধরে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন ৷ কিন্তু, আহমেদ হোসেনকে বাদ দিয়ে আজিজুল রহমানকে মন্তেশ্বর ব্লকের সভাপতি করা হয়েছে ৷ আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, আমার ইলেকশনে যে সমস্ত বিজেপি এবং সিপিএম নেতারা ঝামেলা করেছিল তাঁরাই কায়দা করে আজিজুলের পাশে দাঁড়িয়েছে ৷ পঞ্চায়েত ভোটে জিততে হলে আহমেদ হোসেন ছাড়া ভালো ফল করা যাবে না ৷’’
সিদ্দিকুল্লা দাবি করেছেন, মন্তেশ্বর ব্লকে আজিজুল রহমানের কোনও সংগঠন নেই ৷ তবে, তাঁর সঙ্গে কোনও বিরোধও নেই বলে দাবি করেছেন সিদ্দিকুল্লাহ ৷ ওই ভিডিয়ো বার্তায় একটি গুরুতর অভিযোগ করেছেন রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী ৷ তিনি বলেন, ‘‘ আমার কাছে খবর আসছে আহমেদ হোসেনকে খুন করার পরিকল্পনা করেছে বিজেপি ও সিপিএম ৷ তারা তৃণমূল কংগ্রেসের জার্সি পরে এই ছক কষছে ৷ আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছি ৷ মুখ্যমন্ত্রীকেও জানাব বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার জন্য ৷ এখানে পুলিশকে বলব নিরপেক্ষ থাকার জন্য ৷’’
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীদের বুথে ঢুকতে দেওয়া হবে না, বিতর্কিত মন্তব্য মালদা তৃণমূলের সভাপতির
তবে, এর পরেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজের প্রশংসার মধ্যেই তিনি বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন, পূর্ব বর্ধমানের রাজনৈতিক পরিংসখ্যান তিনি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের থেকে ভালো জানেন ৷ সিদ্দিকুল্লা বলেন ৷ ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গে নতুন উঠতি যুবক ৷ তিনি ভালো কাজ করছেন ৷ কিন্তু, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর জনপ্রিয়তা সারা পশ্চিমবাংলায় ৷ 294 টি বিধানসভার মধ্যে মন্তেশ্বর বিধানসভায় কী হবে, সেই খবর কি সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী রাখে না ? দল কি আমাকে এইভাবে অপমান করতে পারে ৷’’
সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, ‘‘আমার অনুপস্থিতিতে এই ঘোষণা আমাকে আঘাত করেছে।আমার বিধানসভায় কোনও হেভিওয়েট কেউ আসেনি ৷ তবুও, সবথেকে বেশি ভোটে আমি জিতেছি ৷ বর্ধমান জেলার মাথার উপরে কয়েকজন হেভিওয়েট মন্ত্রী ও রাঘব বোয়াল আছেন ৷ যাঁরা দিদির কান ভারী করছেন ৷ দয়া করে বর্ধমানের সংহতিকে নষ্ট করবেন না ৷ আমি জানি কার পায়ের তলার মাটি কতটা শক্ত ৷ আমরা যেভাবে দলের জন্য পরিশ্রম করে থাকি ৷ আমার কাজ খুব পরিষ্কার ৷ আমাদের ফুটবলের মতো ব্যবহার করা হচ্ছে ৷’’ সবশেষে তিনি, ভোটগুরু প্রশান্ত কিশোরের আই প্যাককে নিশানা করেন ৷ তাঁর দাবি, পূর্ব বর্ধমানে আই প্যাকের লোকজন ইচ্ছামতো কাজ করছে ৷ আর রাজনীতিতে সংগঠন তৈরি করার কাজ তিনি আই প্যাকের থেকে শিখবেন না বলেও জানিয়েছেন ৷