রায়না, 3 জুলাই: দিকে দিকে যখন বিরোধীদের প্রার্থী যাতে কেউ হতে না পারে সেই জন্য দুই দলের মারামারি কিংবা নিজেদের দলের মধ্যেই প্রার্থী হওয়া নিয়ে যখন বিভিন্ন জায়গা উত্তপ্ত হওয়ার মতো ঘটনা ঘটে চলেছে, সেখানে এই রাজ্যেরই পূর্ব বর্ধমানের রায়নার একটা বুথে পঞ্চায়েতের সিটে নির্বাচনই হচ্ছে না । ভাবতে অবাক লাগলেও এটা সত্যি ৷ কারণ সেখানে যে কোনও কারণেই হোক কোনও রাজনৈতিক দলেরই প্রার্থী নেই ।
কিন্তু কী এমন ঘটনা ঘটল যে কোনও দল প্রার্থী দিতে পারেনি ?
জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলার রায়না 2 ব্লকের গোতান গ্রাম পঞ্চায়েতে আসন সংখ্যা 23 । বিরোধীদের মধ্যে বামেরা সাতটি আসনে প্রার্থী দেয় । তবে গোতানের 6 নং সংসদের 7 নং সিটে কোনও রাজনৈতিক দলেরই প্রার্থী নেই । ওই সিট ছিল ওবিসি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত । ওই সিটে বিরোধীরা কেউ মনোনয়ন পত্র জমা দিতে পারেনি । তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সালমা খাতুন জমা দিলেও তিনি ওবিসি সার্টিফিকেট জমা দিতে না পারার কারণে তার মনোনয়ন পত্র বাতিল হয়ে যায় । ফলে ওই আসনে শুধুমাত্র পঞ্চায়েতের নির্বাচন হবে না । তবে বাকি পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের আসনে নির্বাচন হবে ।
তবে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় সূত্রে খবর, দলের পক্ষ থেকে আরও একজন মনোনয়ন জমা দিয়েছিল । কিন্তু ব্যক্তিগত কারণে তিনিও মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন । যদিও প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে, ওই আসনে কোনও দলের প্রার্থী না থাকায় আপাতত একটা বুথে পঞ্চায়েত ভোট হচ্ছে না । পরে নির্বাচন কমিশন জানালে সেই মতো ওই বুথে নির্বাচন হবে ।
স্থানীয় বাসিন্দা শেখ দিলখুসের কথায়, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া হয়েছিল । পারিবারিক কারণে সেটা তুলে নিয়েছে । এটা লজ্জাজনক ব্যাপার । পাঁচ বছরে একবার মাত্র ভোট হয় । সেই ভোটও দিতে পারছি না ।এখানে কোনও ঝামেলা হয় না । তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শেখ জিয়াউর রহমান বলেন, "270 নং বুথে গ্রাম পঞ্চায়েতে কোনও প্রার্থী নেই । যিনি মনোনয়ন দিয়েছিলেন তিনি তা প্রত্যাহার করে নেন । সেখানে দু'জনকে প্রথমে ঠিক করা হয়েছিল । প্রথম জন ওবিসি সার্টিফিকেট জমা দিতে না পারার কারণে মনোনয়ন জমা দিলেও তা বাতিল হয়ে যায় । আর একজন প্রার্থী দেওয়া হয় । তিনি পারিবারিক কারণে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন । তবে ওই বুথে পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদে নির্বাচন হবে ।"
আরও পড়ুন : টিকিট দেয়নি তৃণমূল, সিপিএমে নাম লিখিয়ে প্রার্থী জামালপুরের টুম্পা
গোতান অঞ্চলের প্রাক্তন প্রধান তথা তৃণমূল নেতা সাহেব আলি খানের বক্তব্য, গোতান অঞ্চলের একটা বুথে ভোট হবে না । সেখানে কোনও দলেরই কোনও প্রার্থী নেই । ওই সিট ছিল ওবিসি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত । তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল । কিন্তু সময়মতো ওবিসি সার্টিফিকেট জমা না দেওয়ার ফলে স্ক্রুটিনিতে সেই প্রার্থী পদ বাতিল হয়ে যায় । পরে যিনি মনোনয়ন জমা দেন তিনি আবার তা প্রত্যাহার করে নেন । আর বিরোধীরা সেখানে কোনও প্রার্থী দেয়নি । ফলে ওই সিটে শুধুমাত্র পঞ্চায়েতের ভোট হবে না ।
রায়না 2 ব্লকের বিডিও অনিশা যশ জানান, গোতানের 6 নং সংসদের 7 নং সিটে আপাতত নির্বাচন হবে না । পরবর্তীকালে নির্বাচন কমিশন যখন বলবে তখন ভোট হবে । বাকি পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদে ভোট যেমন হওয়ার তেমনি হবে । বাকি পঞ্চায়েতের সমস্ত সিটেই নির্বাচন হবে । কেবলমাত্র ওই একটা সিটেই আপাতত কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না ।