ETV Bharat / state

Holi Celebration 2023: দোল পূর্ণিমায় রং খেলা নয় বর্ধমান শহরে ! উৎসব হবে পরদিন

দোল পূর্ণিমায় বঙ্গে আজ রঙের উৎসব ৷ কিন্তু এদিন দোল খেলে না বর্ধমান শহর ৷ পূর্ণিমার পরদিন দোল খেলা হয় এখানে ৷ এর নেপথ্যে রয়েছে রাজা মহতাবচাঁদের একটু অন্যরকম এক ভাবনা ৷ তাঁর বিশ্বাস ছিল, দেবতা আর মানুষ একই দিনে দোল খেলতে পারে না (Dol Utsav in Bardhaman) ৷

Holi in Bardhaman
বর্ধমানে দোল
author img

By

Published : Mar 7, 2023, 12:16 PM IST

Updated : Mar 7, 2023, 5:07 PM IST

দোল পূর্ণিমায় রং খেলা নয় বর্ধমান শহরে

বর্ধমান, 7 মার্চ: বাংলার সর্বত্র পূর্ণিমার দিন দোল রেখা রীতি ৷ এই রীতির ব্যতিক্রম শহর বর্ধমান ৷ এখানে দোল খেলা হয় পূর্ণিমার একদিন পরে ৷ প্রায় তিনশো বছর ধরে এই প্রথা চলে আসছে ৷ এর পিছনে আছে রাজার আধ্যাত্মকি ভাবনা ৷ বর্ধমানের মহারাজা তখন মহতাবচাঁদ ৷ বর্ধমান রাজবাড়ির কুলদেবতা লক্ষ্মীনারায়ণ জিউ ৷ রাজার ব্যক্তিগত মতামত, এই পূর্ণিমায় দেবতারা দোল খেলেন ৷ তাই এদিনটি মানুষের দোল খেলার জন্য নয় ৷ তারা পরের দিন দোল খেলবে ৷ এদিন মহতাবচাঁদ দেবতার উদ্দেশ্যে আবির নিবেদন করতেন ৷ ফলে ওই দিন রাজবাড়িতে কেউ আবির খেলতেন না ৷ তার পরেরদিন আবির খেলায় মেতে উঠত রাজপরিবার । পরবর্তীকালে রাজবাড়ির ঐতিহ্য মেনে বর্ধমানবাসীও দোলের পরদিন রঙ খেলা শুরু করে (Holi Celebration in Bardhaman) ৷

এখন একবিংশ শতক ৷ 2023 সালে রাজা নেই । নেই রাজবাড়ির জাঁকজমক ৷ এখনও রাজার প্রচলিত রীতি মেনে লক্ষ্মী নারায়ণ জিউ মন্দিরে দেবতার উদ্দেশ্যে আবির নিবেদন করা হয় ৷ রাজাকে সম্মান জানিয়ে বর্ধমান শহরবাসীও এদিন রং না খেলে পরদিন উৎসব পালন করে ৷ রাজবাড়ির প্রধান পুরোহিত উত্তম মিশ্র বলেন, "রাজা মহতাব চাঁদ দোল উৎসবের দিনে কুলদেবতা লক্ষ্মীনারায়ণ জিউকে উৎসর্গ করে আবির দিতেন ৷ যেহেতু ওই দিন দেবতাকে আবির দিয়ে সম্মান জানানো হয়েছে, তাই তিনি ওই দিন আবির খেলতেন না ৷ আবির খেলা হত পূর্ণিমার পরের দিন ৷ রাজবাড়ির প্রতি সম্মান জানিয়ে বর্ধমানবাসীও একদিন পরে দোল উৎসব করে ৷" এমনিতে সারাবছর লক্ষ্মী নারায়ণ জিউ এবং দেবী মা চণ্ডিকার মন্দিরে নিত্যসেবা হয় ৷ প্রতিদিন দেবতাকে ভোগ নিবেদন করা হয় ৷

আরও পড়ুন: বসন্ত উৎসবে রঙিন মালদা, আনন্দে মাতোয়ারা সাত থেকে সত্তর

ইতিহাসবিদ ডঃ সর্বজিৎ যশ বলেন, "আঠেরোশো শতকের তিরিশ-চল্লিশ দশকে বর্ধমান রাজবাড়িতে রাজা ছিলেন মহতাবচাঁদ ৷ রাজপরিবারের মন্দিরে রাধাকৃষ্ণ রয়ছেন ৷ এছাড়া বেশ কয়েকটি বৈষ্ণব মন্দির বর্ধমান রাজবংশ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিতি ৷ ফাল্গুন মাসে পূর্ণিমায় রাজপরিবারের মন্দির এবং বৈষ্ণব মন্দিরগুলিতে দোল উৎসব পালিত হয় ৷ তখনও হত এবং এখনও হয় ৷ এদিন দেবতাদের দোল হয় ৷ রাজা মহতাবচাঁদ মনে করতেন, দেবতাদের দোলের দিনে মানুষের দোল খেলা ঠিক নয় ৷ তিনি ঠিক করেন পরদিন দোল খেলবেন ৷ তাঁর ব্যক্তিগত চিন্তা এটা ৷ রাজবাড়িতে পূর্ণিমার পরদিন থেকে দোলখেলা শুরু হয় ৷ রাজাকে দেখে রাজকর্মীরাও পরদিন দোল খেলা শুরু করেন ৷ এরপর বর্ধমান শহরবাসী এই প্রথা মানতে অরম্ভ করে ৷" আগে এটা শুধুমাত্র বর্ধমান শহরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল ৷ কিন্তু এখন শহরের বাইরে অনেক জায়গায় তা ছড়িয়ে পড়েছে ৷

দোল পূর্ণিমায় রং খেলা নয় বর্ধমান শহরে

বর্ধমান, 7 মার্চ: বাংলার সর্বত্র পূর্ণিমার দিন দোল রেখা রীতি ৷ এই রীতির ব্যতিক্রম শহর বর্ধমান ৷ এখানে দোল খেলা হয় পূর্ণিমার একদিন পরে ৷ প্রায় তিনশো বছর ধরে এই প্রথা চলে আসছে ৷ এর পিছনে আছে রাজার আধ্যাত্মকি ভাবনা ৷ বর্ধমানের মহারাজা তখন মহতাবচাঁদ ৷ বর্ধমান রাজবাড়ির কুলদেবতা লক্ষ্মীনারায়ণ জিউ ৷ রাজার ব্যক্তিগত মতামত, এই পূর্ণিমায় দেবতারা দোল খেলেন ৷ তাই এদিনটি মানুষের দোল খেলার জন্য নয় ৷ তারা পরের দিন দোল খেলবে ৷ এদিন মহতাবচাঁদ দেবতার উদ্দেশ্যে আবির নিবেদন করতেন ৷ ফলে ওই দিন রাজবাড়িতে কেউ আবির খেলতেন না ৷ তার পরেরদিন আবির খেলায় মেতে উঠত রাজপরিবার । পরবর্তীকালে রাজবাড়ির ঐতিহ্য মেনে বর্ধমানবাসীও দোলের পরদিন রঙ খেলা শুরু করে (Holi Celebration in Bardhaman) ৷

এখন একবিংশ শতক ৷ 2023 সালে রাজা নেই । নেই রাজবাড়ির জাঁকজমক ৷ এখনও রাজার প্রচলিত রীতি মেনে লক্ষ্মী নারায়ণ জিউ মন্দিরে দেবতার উদ্দেশ্যে আবির নিবেদন করা হয় ৷ রাজাকে সম্মান জানিয়ে বর্ধমান শহরবাসীও এদিন রং না খেলে পরদিন উৎসব পালন করে ৷ রাজবাড়ির প্রধান পুরোহিত উত্তম মিশ্র বলেন, "রাজা মহতাব চাঁদ দোল উৎসবের দিনে কুলদেবতা লক্ষ্মীনারায়ণ জিউকে উৎসর্গ করে আবির দিতেন ৷ যেহেতু ওই দিন দেবতাকে আবির দিয়ে সম্মান জানানো হয়েছে, তাই তিনি ওই দিন আবির খেলতেন না ৷ আবির খেলা হত পূর্ণিমার পরের দিন ৷ রাজবাড়ির প্রতি সম্মান জানিয়ে বর্ধমানবাসীও একদিন পরে দোল উৎসব করে ৷" এমনিতে সারাবছর লক্ষ্মী নারায়ণ জিউ এবং দেবী মা চণ্ডিকার মন্দিরে নিত্যসেবা হয় ৷ প্রতিদিন দেবতাকে ভোগ নিবেদন করা হয় ৷

আরও পড়ুন: বসন্ত উৎসবে রঙিন মালদা, আনন্দে মাতোয়ারা সাত থেকে সত্তর

ইতিহাসবিদ ডঃ সর্বজিৎ যশ বলেন, "আঠেরোশো শতকের তিরিশ-চল্লিশ দশকে বর্ধমান রাজবাড়িতে রাজা ছিলেন মহতাবচাঁদ ৷ রাজপরিবারের মন্দিরে রাধাকৃষ্ণ রয়ছেন ৷ এছাড়া বেশ কয়েকটি বৈষ্ণব মন্দির বর্ধমান রাজবংশ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিতি ৷ ফাল্গুন মাসে পূর্ণিমায় রাজপরিবারের মন্দির এবং বৈষ্ণব মন্দিরগুলিতে দোল উৎসব পালিত হয় ৷ তখনও হত এবং এখনও হয় ৷ এদিন দেবতাদের দোল হয় ৷ রাজা মহতাবচাঁদ মনে করতেন, দেবতাদের দোলের দিনে মানুষের দোল খেলা ঠিক নয় ৷ তিনি ঠিক করেন পরদিন দোল খেলবেন ৷ তাঁর ব্যক্তিগত চিন্তা এটা ৷ রাজবাড়িতে পূর্ণিমার পরদিন থেকে দোলখেলা শুরু হয় ৷ রাজাকে দেখে রাজকর্মীরাও পরদিন দোল খেলা শুরু করেন ৷ এরপর বর্ধমান শহরবাসী এই প্রথা মানতে অরম্ভ করে ৷" আগে এটা শুধুমাত্র বর্ধমান শহরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল ৷ কিন্তু এখন শহরের বাইরে অনেক জায়গায় তা ছড়িয়ে পড়েছে ৷

Last Updated : Mar 7, 2023, 5:07 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.