বর্ধমান , 14 এপ্রিল : সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে কেউই তাঁদের হাতে PPE কিট তুলে দেননি । তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছে দিতে হচ্ছে । এমনই অভিযোগ তুললেন পূর্ব বর্ধমান জেলার অ্যাম্বুলেন্স চালকরা । তাঁদের একটাই অনুরোধ, সরকার যেন এই পরিস্থিতিতে তাঁদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় ।
পূর্ব বর্ধমান জেলার তিনটি মহকুমায় মোট সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা 55 টি । 10টি অ্যাম্বুলেন্সকে কোরোনা আক্রান্তদের নিয়ে যাওয়ার জন্য রাখা হয়েছে । জেলায় বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা 150 টি । চালক ও খালাসির সংখ্যা 150 । এর মধ্যে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মাতৃযান আছে 20 টি, 102 নম্বরের পরিষেবার আওতায় রয়েছে 11 টি অ্যাম্বুলেন্স । বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে জ্বর-সর্দির উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ চিকিৎসার জন্য আসেন । অন্যদিকে কোরোনারও অন্যতম উপসর্গ জ্বর ও সর্দি । আর তাতেই সমস্যায় পড়েছেন অ্যাম্বুলেন্স চালকরা । তাঁদের বক্তব্য, রোগীর পরিবার জ্বর-সর্দি উপসর্গের কথা জানালেও তাঁরা বুঝে উঠতে পারছেন না ওই রোগী সত্যিই কোরোনায় আক্রান্ত কি না । ফলে অনেক অ্যাম্বুলেন্স চালকই রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে অস্বীকার করছেন । কেউ কেউ অবশ্য পেটের দায়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সেই রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটছেন ।
বর্ধমানের অ্যাম্বুলেন্স মালিকদের মতে, তাঁরা কোরোনা আক্রান্তদের নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারের থেকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাননি ঠিকই । তবে, রোগীর কথা ভেবে তাঁরা সেই কাজ করতে রাজি আছেন । তাই সরকারের কাছে তাঁদের আবেদন, প্রশাসন যেন তাঁদের কাজের সুবিধা ও সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় কিটের ব্যবস্থা করে ।
অ্যাম্বুলেন্স মালিক সম্রাট ভট্টাচার্য বলেন, "এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের কথা ভেবে আমরা কোরোনা রোগীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি । তবুও সরকারের কাছে আবেদন, সরকার যদি আমাদের দিকে প্রয়োজনীয় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে আমাদের সুবিধা হয় ।"
অ্যাম্বুলেন্সের মালিক ফরিদুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, "সবথেকে বড় সমস্যা হচ্ছে, আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব হচ্ছে না যে রোগীকে নিয়ে যাচ্ছি তিনি কোরোনায় আক্রান্ত কি না । ফলে প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই রোগীকে নিয়ে যেতে হচ্ছে । তাই অনেকেই রোগী নিয়ে যেতে অস্বীকার করছেন ।"
যদিও রাজ্যের ক্ষুদ্র, কুটির শিল্প ও প্রাণীসম্পদ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানান, "জেলায় হাসপাতালগুলিতে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে যাতে সমস্যায় পড়তে না হয় সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে ।"