মকরামপুর (পশ্চিম মেদিনীপুর), 25 ফেব্রুয়ারি: মদের আসরে তৃণমূল যুবকর্মীকে গুলি করে খুনের অভিযোগ ৷ মঙ্গলবার রাতের ঘটনায় চাঞ্চল্য পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ের মকরামপুর থানা এলাকায় ৷ নিহত ওই যুবকের নাম সৌভিক দলুই। পরিবারের দাবি, দলীয় মিটিংয়ের নাম করে তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ তারপর মদ্য়পান করিয়ে গুলি করে খুন করা হয় ৷ ঘটনার জন্য দলের এক নেতাকেই দায়ী করেছেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা ৷
গত মঙ্গলবার রাত দশটা নাগাদ নারায়ণগড় থানার মকরামপুর এলাকায় বাড়ি থেকে প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে একটি মাঠের মধ্যে মদের আসরে গুলিবিদ্ধ হন সৌভিক ৷ ঘটনাস্থলে বোমাবাজিও হয় বলে দাবি এলাকাবাসীর ৷ তাতে জখম হন আরও তিনজন ৷ স্থানীয় বাসিন্দারাই সকলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান ৷ সেখানে চিকিৎসকরা সৌভিককে মৃত ঘোষণা করেন ৷ বাকি আহতদের চিকিৎসা শুরু হয় ৷
পরিবারের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে তাঁদের বাড়ির দূরত্ব মাত্র দু’কিলোমিটার হলেও ঘটনার সময় কিছুই জানতে পারেননি তাঁরা ৷ প্রায় দেড় ঘণ্টা পর টিভিতে খবর দেখে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, তাঁদের ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন ৷
তৃণমূলের পক্ষ থেকে জেলা সভাপতি অজিত মাইতি ওই রাতেই দাবি করেন, তাঁদের দলের কর্মী সৌভিককে পরিকল্পিতভাবে গুলি করে খুন করেছে বিজেপি ৷ যদিও বিজেপি জেলা সভাপতি সমিত দাসের পাল্টা দাবি, এই খুন তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল ৷
আরও পড়ুন: তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে মৃত্যুর ঘটনায় ধৃতের বাড়ি থেকে উদ্ধার অস্ত্র
তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তত্ত্ব শোনা গিয়েছে সৌভিকের পরিবারের সদস্যদেরও গলাতেও ৷ ঘটনার জন্য তৃণমূল নেতা লক্ষ্মী সিটকে দায়ী করেছেন তাঁরা ৷ সৌভিকের দিদি আল্পনা দলুই বলেন, ‘‘আমার ভাইকে খুন করা হবে বলে আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিল তৃণমূল নেতা লক্ষ্মী সিট। আমার ভাইয়ের কারণে সরকারি প্রকল্পের টাকা ওরা আত্মসাৎ করতে পারছিল না। ওকে দল থেকে সরে যেতে বলেছিল। না হলে খুন করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। তাই মিটিংয়ের নাম করে ডেকে নিয়ে গিয়ে গুলি করে খুন করা হল। আমরা দোষীদের শাস্তি চাই। এত বড় ঘটনার পরও আমাদের পরিবারের কাউকে সেকথা জানানো হয়নি। টিভিতে খবর দেখে জানতে পেরেছি ভাইকে গুলি করে মারা হয়েছে।’’
এদিকে, এই ঘটনার পর থেকেই থমথমে গোটা এলাকা। নতুন করে যাতে কোনও অশান্তি না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতে বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট ৷ তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি ৷ তদন্ত চলছে ৷